আমিনুল ইসলাম, ফুলবাড়ি প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে দৃষ্টিনন্দন ফয়নুর গ্ৰীণ পল্লী বিনোদন প্রেমিদের কাছে টানছে ।
গ্ৰামীণ পরিবেশে পাখ পাখালির কলতানে মুখরিত দৃষ্টিনন্দন এ রিসোর্টি ভ্রমণ পিপাসু বিনোদন প্রেমিদের মনের খোরাক জুগিয়ে চলছে। বিনোদন প্রেমিকদের পদচারনা, আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে মূখরিত হয়ে উঠছে পুরো প্রাঙ্গন।
রিসোর্ট নির্মাণের সাথে জড়িত স্থানীয় সৈকত রহমান জানান, এখানকার , প্রাকৃতিক দৃশ্যপট ও নান্দনিক পরিবেশ সবার মনে দাগ কাটে। এখানে রয়েছে নানান প্রজাতির নান্দনিক ফুলও ফলের বাগান, সুইমিংপুল, মৎস্য,কবুতর ও হাঁসের খামার, রেস্ট হাউজ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনে স্টেজ, সাউন্ডসিস্টেম, তিন শতাধিক মানুষের জন্য এক সঙ্গে বসে খাবার ব্যবস্থা। এছাড়াও বিনোদনের জন্য ভিতরে রয়েছে বাচ্চাদের খেলার ব্যবস্থা খেলার মাঠ এবং কুকুর কুকুরে ভেসে বেড়াচ্ছে হাঁস । রিসোর্টের অন্য পাশে দেশি-বিদেশি কবুতরের সমাহার।এছাড়াও বিনোদনের জন্যে ভিতরে রয়েছে বাচ্চাদের খেলার ব্যাবস্থা। চাইলে সারদিন কাটিয়ে দিতে পারেন মাছ ধরাতেও।
পরিবার-পরিজন কিম্বা গ্রুপ পিকনিকের জন্য এটি একটি আদর্শ পর্যটন স্পট । উপজেলার সীমান্তঘেষা শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের মিঞাপাড়া গ্রামের নিভৃত পল্লীতে দেড় একর জমির ওপর এ রিসোর্ট নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয় ফরিদ হোসেন নামের এক উদ্যোক্তা এটি গড়ে তোলেন। তিনিই পরিচালক। উদ্ধোধনের পর থেকে ছ রিসোর্টে দুর-দুরান্তরের দর্শনার্থীর ঢল নামে। প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে সন্ধা পর্যন্ত রিসোর্টটি উম্মুক্ত থাকে। জানপতি ৫০ টাকা ফি দিয়ে প্রবেশ করা যায়।ভ্রমণ পিপাসুরা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখানে আনন্দঘন সময় কাটিয়ে আসতে পারেন যে কোনো দিন। যেতে পারেন বন্ধুবান্ধবকে সঙ্গে নিয়ে পিকনিকে। বিয়ের পর হানিমুনে দূরে কোথাও না গিয়ে সময় কাটাতে পারেন এখানেও। নিজে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না এটা একটা রিসোর্ট। রংপুর থেকে আসা দর্শনার্থী সঞ্চয়িতা রায় মেঘলা ও সঙ্গীতা আক্তার হ্যাপী বলেন,শহর থেকে এখানে এসে দৃষ্টিনন্দন রিসোর্টটি দেখে সত্যি আমরা মুগ্ধ হয়েছি।
ফয়নুর গ্রীন পল্লীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদ হোসেন জানান, অনেকদিনের স্বপ্ন ছিল। গ্রামে বাড়ির পাশেই একটা দৃষ্টিনদন বিনোদন গড়ে তুলবো। সেই স্বপ্ন থেকে “আমার পুরো চাকুরি জীবনের উপার্জন, সঞ্চয় ও ব্যাংক ঋণ দিয়ে আস্তে আস্তে এই রিসোর্টটি গড়ে তুলেছি। বিনোদনের পাশাপাশি এখানে বেশ কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
রিসোর্টের উপদেষ্টা শিমুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শরিফুল আলম মিয়া সোহেল জানান, “প্রকৃতি প্রেমী ও ভ্রমণ পিপাসু মানুষের জন্য এটি আকর্ষণের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দুর-দুরান্তরের মানুষ আসছেন। এটা খুবই আনন্দের বিষয়।
গ্রীন পল্লী দেখতে আসা রংপুর বেগম রোকেয়া কলেজের শিক্ষক আজহাজুল ইসলাম জানান, গ্রামের ভিতরে এক মনোমুগ্ধকর রিসোর্ট দেখে মনে হচ্ছে আমরা বড় কোন শহরে এসেছি। অপরুপ সৌন্দর্যের এ রিসোর্টটি দেখে অভিভূত হয়েছি।
ফুলবাড়ী সদরের নিউ শুভেচ্ছা কিন্ডারগার্ডেনদের প্রধান শিক্ষিকা তহমিনা বেগম বলেন, ফুলবাড়ীতে বিনোদনের কোন স্পট নেই। একমাত্র এই নান্দনিক ও দৃষ্টিনন্দন রিসোর্ট সেন্টারে এসে খুবই ভাল লাগছে। প্রতিটি মানুষ জীবন-জীবিকার পাশাপাশি একটু শ্রান্তি বিনোদন চায়। বিনোদন মানুষের মনকে চাঙ্গা করে। কাজে মন ফেরাতে সহায়তা করে। এতদিন উপজলার মানুষ দুই ঈদ, নববর্ষসহ বিভিন্ন উৎসবের অবসরে নির্মল ভাই সেবন ও অবসর সময় কাটাতে দ্বিতীয় ধরলা সেতুকে বেছে নিয়েছিল। এসব দিনে বিনোদন প্রেমীরা ভিড় জমাতো ঢোলা সেতুর দুই প্রান্তের নদীর তীরে।এখন ফুলবাড়ী উপজেলাসহ উত্তরধরলার বিনোদন প্রেমিরা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন ফয়নুর গ্রীন পল্লীতে। পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধবসহ আনন্দঘন মুহুর্তগুলো এ রিসোর্টের নির্মল পরিবেশে উপভোগ করতে পারবেন।
মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. হামিদুল হক খন্দকার জানান, ফু্লবাড়ীতে দৃষ্টিনন্দন ফয়নুর গ্রীন পল্লী রিসোর্টি একটি মাইল ফলক । ফরিদ হোসেন পল্লী গ্রামে এই রিসোর্ট গড়ে তোলায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে তার সাফল্য কামনা করছি। ফুলবাড়ী,কুড়িগ্রামসহ আশ পাশের জেলার লোকজনের জন্য রিসোর্টটি একটি আদর্শ পর্যটন স্পটে পরিণত হবে বলে তার বিশ্বাস।
এবছরের ৩মে শুক্রবার দুপুর ১২ টায় এ রিসোর্টের আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন করেন ২৬-কুড়িগ্রাম-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. মোঃ হামিদুল হক খন্দকার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তাঁর সহধর্মিণী প্রফেসর ডা. মকসুদা খাতুন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুমসহ স্থানীয় সুধী বৃন্দ।
Leave a Reply