রিপন বারী, জাবি প্রতিনিধি:
ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব বায়োটেকনোলজিতে (এনআইবি) মহাপরিচালক নিয়োগে জটিলতা ও বাংলাদেশে জীবপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বৈষম্য নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
‘বায়োটেক মুভমেন্ট ২০২৪’ শীর্ষক দেশব্যাপী বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ মানববন্ধনে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিমের নেতৃত্বে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী মির্জা সাকি বলেন, ১৯৯৫ সালে বায়োটেকনোলজি সেক্টরটি বাংলাদেশের শুরু হলেও এখনো পর্যন্ত যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হয়নি। ১৯৯৯ সালে উচ্চতর গবেষণার জন্য ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব বায়োটেকনোলজি প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু দীর্ঘ ২৫ বছরেও বায়োটেকনোলজির কোন শিক্ষক ঊর্ধ্বতন পদে সেখানে নিয়োগ পাননি। ৬০ শতাংশের বেশি নন বায়োটেক গ্রাজুয়েট সেখানে কর্মরত আছে। এ বৈষম্যটি একেবারেই স্পষ্ট। সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাহেদুর রহমান মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। এখানে একটি মহল প্রভাব খাটিয়ে নিয়োগের জটিলতার সৃষ্টি করেছে। আমরা এই জটিলতার নিরসন চাই।
বিভাগের শিক্ষক সিয়াম আহমেদ বলেন, গত ১৫ তারিখ এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অধ্যাপক শাহিদুর রহমানকে এনআইবি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু দুঃখজনক তিনি ভাবে তিনি সেখানে যোগদান করতে পারছেন না। গত ত্রিশ বছরে জীবপ্রযুক্তিবিদদের প্রতি এ বৈষম্যমূলক আচরণের নিরসন চাই। এ বিষয়ে দেশের কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থায় একজন জীপ্রযুক্তিবিদ নিয়োগ পাবেন না- এটা হতে পারে না৷ দেশে বর্তমানে ২৯ টি বিশ্ববিদ্যালয় যে প্রযুক্তি বিষয়টি পড়ানো হয়, কিন্তু চাকরি ক্ষেত্রে অনেক জায়গায় তারা আবেদন করার সুযোগ পান না। নীতিনির্ধারণী পর্যায়েও জীবপ্রযুক্তিবিদদের রাখা হয় না। আমরা এ ফিল্ডের প্রতি বৈষম্যমূলক এবং পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের নিরসন চাই৷
অধ্যাপক উম্মে সালমা যোহরা বলেন, বাংলাদেশে ১৯৯৫ সালে প্রথম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিভাগটি খুলেছিল। সেখানে প্রথম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন অধ্যাপক শাহেদুর রহমান। দীর্ঘ ১০ বছর জাপানে উচ্চশিক্ষা, পিএইচডি, পোস্টডক শেষে তিনি দেশে ফিরে এসেছেন। বাংলাদেশ বায়োটেকনোলজি শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তার হাত ধরেই বিএবিটি সংগঠিত হয়েছে। এমন সাংগঠনিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন মানুষকে অচিরে এনআইবির ডিজি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
উল্লেখ্য, গত ১৫ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখার এক প্রজ্ঞাপনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাহেদুর রহমানকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির (এনআইবি) মহাপরিচালক (ডিজি) পদে নিয়োগ দেয়া হলেও তাকে যোগদান করতে দেয়া হয়নি। তিনি ২০১১ সালে জাবির বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি বায়ো-রিসোর্সেস টেকনোলজি অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল বায়োটেকনোলজি ল্যাবের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের উপ-পরিচালক হিসেবেও নিয়োজিত আছেন।
Leave a Reply