বখতিয়ার আহমেদ নাসিফ, বেরোবি প্রতিনিধি:
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) আবাসিক শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত সীট ভাড়া ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের কারণে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি হলের একটিতেও সরকারি ভর্তুকি নেই, ফলে খাবারের মান খারাপ ও দাম অত্যাধিক হয়ে উঠেছে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন, উন্নয়নমূলক কাজের নামে প্রতি সেমিস্টারে ৫০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে, যা বছরে প্রায় চার হাজার টাকা হয়। উপরন্তু, বিলম্বিত সিট ভাড়া দিতে হচ্ছে শতাধিক শিক্ষার্থীকে। যদিও নতুন ভিসি জুলাই ও আগস্টের আন্দোলনের পর জরিমানা এবং দুই মাসের আবাসিক ভাড়া মওকুফ করেছেন, তবুও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।
হলে যে খাবার দেওয়া হয় তার খরচ পড়ে ৫৩ টাকা। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এ জন্য ৪০ টাকা করে নেওয়ার কথা। কিন্তু খাবারের মান বাড়ানোর কথা বলে নেওয়া হচ্ছে ৫০ টাকা, যা শিক্ষার্থীদের জন্য বাড়তি বোঝা। পাশাপাশি, হিটারের ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের রান্নার সুযোগও সীমিত।
তুলনামূলকভাবে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের সীট ভাড়া বেরোবির তুলনায় অনেক কম। উদাহরণস্বরূপ, রাবি, যবিপ্রবি, খুবি ও কুবিতে সীট ভাড়া ১০০-১৫০ টাকার মধ্যে, যেখানে বেরোবিতে তা ২৫০ টাকা। শিক্ষার্থীরা হলে থাকার উদ্দেশ্যে আর্থিক সাশ্রয় করতে এসেছিলেন, কিন্তু বেরোবির হলগুলোতে উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, হলে খাবারের ভর্তুকি নেই, স্বাস্থ্যকর পরিবেশের অভাব এবং সুষম খাবারের ব্যবস্থা প্রয়োজন। তাদের দাবি, মাসিক ভাড়া ৫০ টাকায় কমানো, সেমিস্টার এটাচমেন্ট ফি বাতিল, জরিমানা মওকুফ এবং খাবারের মান উন্নত করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শয়ন শাহা বলেন, ‘হলে থাকা যেন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা বহুবার অভিযোগ জানিয়েও কোনো পরিবর্তন দেখছি না।’ অপর আবাসিক শিক্ষার্থী গোলাম জাকারিয়া খাবারের মান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, অথচ দাম অত্যন্ত চড়া। আমাদের মাসে প্রায় ৩ হাজার ৩০০ টাকা খরচ হয়, যা অনেকের জন্য অসহনীয়।’
হলের প্রভোস্ট মো. আমীর শরীফ জানিয়েছেন, ডাইনিংয়ের সমস্যার সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তবে সীট ভাড়া কমানোর ক্ষমতা নেই। তিনি প্রশাসনের কাছে ভর্তুকি দেওয়ার বিষয়ে চিঠি জমা দিয়েছেন এবং জরিমানা বিষয়টি সিন্ডিকেট সভায় আলোচনা করবেন।
শিক্ষার্থীরা আশা করেন, দ্রুত তাদের সমস্যার সমাধান হবে; নতুবা তারা আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হবেন
Leave a Reply