অনলাইন ডেস্ক:
কক্সবাজারের উখিয়ায় ইনানী সমুদ্র সৈকতে নৌবাহিনীর জেটিটি ভেঙে গেছে। ঘূর্ণিঝড় ‘দানার’ প্রভাবে উত্তাল সাগরের ঢেউয়ের চাপে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র তাণ্ডবে কক্সবাজার উপকূল প্রচণ্ড উত্তাল হয়ে পড়েছে। ঢেউয়ের উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে সাত থেকে আট ফুট বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলে আছড়ে পড়ছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকালে ঢেউয়ের আঘাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের ইনানী সৈকতে বাংলাদেশ নৌবাহিনী নির্মিত কয়েক শ’ ফুট লম্বা জেটির মধ্যভাগের একটি অংশ ভেঙে পড়েছে। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে জেটির অবশিষ্ট অংশেরও ক্ষতি হতে পারে। জেটিটি ভেঙে পড়ায় পর্যটকের সেন্টমার্টিন ভ্রমণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আগামী ১ নভেম্বর থেকে জেটিঘাট থেকে পর্যটক তুলে একাধিক জাহাজ সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যাতায়াতের কথা ছিল।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তানভীর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কী কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তা খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। গতকাল মধ্যরাতের পর পূর্ণ জোয়ার শুরু হয়। এতে সাগরে ঢেউয়ের প্রচণ্ড চাপে জেটিঘাটে বাঁধ সংস্কার কাজে ব্যবহৃত একটি ছোট বার্জের ধাক্কায় জেটিটি ভেঙে যায়। এতে জেটিটির একটি অংশ ভেঙে দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়।
জেটি সংলগ্ন হোটেল রয়েল টিউলিপের একজন কর্মী জানিয়েছেন, কয়েক দিন ধরে ছোট আকারের তিনটি নৌযান জেটিতে কাজ করছিল। এসব নৌযানগুলো সরিয়ে না রাখার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০২০ সালে আন্তর্জাতিক নৌ-মহড়া অনুষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনী জেটিটি নির্মাণ করেছিল। দীর্ঘ সমুদ্রসৈকত দ্বিখণ্ডিত করে জেটি নির্মাণের বিরুদ্ধে তখন থেকে স্থানীয় পরিবেশবাদীরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল। ২০২২ সালে পরিবেশবাদী সংগঠন কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের সভাপতি আ ন ম হেলাল উদ্দিনের দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জেটি অপসারণের জন্য উচ্চ আদালত রুল জারি করেছিলেন। আ ন ম হেলাল উদ্দিন জানান, আদালতের রুল জারির পরেও জেটি অপসারণ করা হয়নি।
এদিকে গত বছর থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ বন্ধ রয়েছে। এ রুটের বিকল্প হিসেবে ইনানীর এই জেটি দিয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটকবাহী জাহাজ আসা যাওয়া করছিল। আগামী ১ নভেম্বর এই জেটি দিয়ে দ্বীপে জাহাজ যাতায়াতের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল।
Leave a Reply