1. editor1@kurigramsongbad.com : editor1 :
  2. sifat@kurigramsongbad.com : sifat :
  3. siteaccess@pixelsuggest.com : siteaccess :
সাম্প্রতিক :
মাদকদ্রব্য সেবন ও ব্যবসা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচারণা: রৌমারীতে মাদক বিরোধী উদ্যোগ স্কুল শিক্ষক থেকে হেজবুল্লাহর প্রধান কে এই নাইম কাসেম বাংলাদেশের হিন্দুদের নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের টুইট কী বার্তা দিচ্ছে? বিশ্বজয়ী হাফেজ মুয়াজ মাহমুদকে ছাদখোলা বাসে সংবর্ধনা সৌদি আরবে ৪ হাজার বছরের পুরোনো শহরের সন্ধান সাকিবকে ছাড়াই দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ সমাবেশ স্থগিত করেছে জাতীয় পার্টি প্রেসক্লাব চিলমারী‘র কমিটি গঠন পূণরায় সভাপতি লিটু, সাধারন সম্পাদক ছাবেদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মিজান কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি অজ্ঞাত পরিচয় গর্ভবর্তী মানসিক ভারসাম্যহীন নারী ভুরুঙ্গামারিতে জাতীয় যুব দিবস পালিত

স্বপ্নের পথে বাধা নয় প্রতিবন্ধকতা: বেরোবিতে সুযোগ পেলেন মিনারা খাতুন

  • আপডেটের সময় : বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪

কামরুল হাসান কাব্য, বিশেষ প্রতিনিধি: 

মানব জীবনে কঠিনতাই সাফল্যের প্রকৃত মাপকাঠি, আর সেই সাফল্যই হাজারগুণ মহৎ হয়ে ওঠে যখন তার পেছনে থাকে অসীম অধ্যবসায়, অব্যাহত সংগ্রাম, এবং অদম্য মনোবল। এমনই এক সংগ্রামী নারী মিনারা খাতুন। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তার পথ রুদ্ধ করতে পারেনি, বরং তাকে পরিণত করেছে এক অবিচল যোদ্ধায়। তার জীবন এক প্রেরণার গল্প, যে গল্পে উঠে আসে অগণিত প্রতিকূলতা পারি দিয়ে অর্জনের অসামান্য কাহিনী।

মিনারা খাতুন, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম কাঁচকোল দক্ষিণ বাঁধের বাসিন্দা, এক দরিদ্র দিনমজুরের মেয়ে। শিশুকালে জন্ম নেওয়া হাতের আঙুলহীন এই মেয়েটি যখন নিজের অস্তিত্বের সঙ্গে সংগ্রাম করছে, তখনই মায়ের স্নেহবঞ্চিত হয় মাত্র ছয় মাস বয়সে। সেই শূন্যতার গভীরে দাদি হয়ে উঠলেন তার পথপ্রদর্শক, যিনি মায়া-মমতার মোড়কে মুড়িয়ে গড়ে তুললেন এই অদম্য নারীকে। মায়ের অনুপস্থিতি যেমন তার জীবনের প্রথম শোক, তেমনি ছিল তার প্রথম চ্যালেঞ্জ। কিন্তু এই শোক তাকে থামাতে পারেনি, বরং শক্তি হয়ে প্রবাহিত করেছে তার সমগ্র অস্তিত্বে।

হাতের আঙুল না থাকলেও কবজি দিয়ে লেখার অভ্যাস গড়ে তোলেন মিনারা। কাঁচকোল দক্ষিণ খামার বাঁধ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের আন্তরিক সহায়তায় শিক্ষাজীবনের প্রথম ধাপ পেরিয়ে আসেন তিনি। প্রাথমিক স্তরের পর কাঁচকোল খামার সখিনা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে এসএসসিতে কৃতিত্বের সাথে ৪.৬৯ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এসএসসির সফলতা তাকে নতুন উদ্দীপনায় ভরিয়ে দেয়।

তবে বাস্তবতা ছিল কঠিন। উচ্চমাধ্যমিকে নিজের স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার পর কিছুদিন সুখের দেখা পেলেও, চ্যালেঞ্জ তার পিছু ছাড়েনি। ২০২২ সালে এইচএসসিতে বাণিজ্য বিভাগে ৪.৩৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হন মিনারা। তবে প্রথমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়ে ভেঙে পড়েন। এই ব্যর্থতা তার জীবনের আরেকটি কঠিন অধ্যায়। তবুও, ফুফি ও বড় বোনের অনুপ্রেরণায় নতুন উদ্যমে প্রস্তুতি নিয়ে আবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছভুক্ত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। তার অক্লান্ত পরিশ্রম তাকে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে জায়গা করে দেয়।

এখানেই শেষ নয়, তার ভর্তি হওয়া যখন প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দৃষ্টিগোচর হয় তার সংগ্রাম। উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আন্তরিক সহযোগিতায় মিনারার ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। আজ তিনি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন, বরং একজন জীবন্ত প্রমাণ যে ইচ্ছাশক্তি ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞা সবকিছুকেই অতিক্রম করতে পারে।

মিনারার জীবন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে শারীরিক সীমাবদ্ধতা কোনো বাধা নয়, বরং ইচ্ছাশক্তি এবং কঠোর পরিশ্রমের কাছে সব প্রতিকূলতাই ক্ষুদ্র। তার এই সংগ্রামী যাত্রা দেশের প্রতিটি মানুষের জন্য এক উদাহরণ এবং প্রেরণার উৎস।

এভাবেই এগিয়ে যাক আমাদের অদম্য মেধাবীরা। দেশের প্রতিটি ‘মিনারা খাতুন’ হোক দেশের গর্ব, হোক ভবিষ্যৎ নির্মাতা।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো খবর
Kurigram Songbad © 2024. All Rights Reserved.
Built with care by Pixel Suggest
error: Content is protected !!