স্পোর্টস ডেস্ক:
সাকিব আল হাসানের অবস্থান এই মুহূর্তে অজ্ঞাত। বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়লেও দুবাই থেকে বিমানে চড়ার সবুজ সংকেত পাননি সাকিব। তাই খেলা হচ্ছে না মিরপুর টেস্টে, যে ম্যাচটা খেলে সাদা পোশাকের ক্রিকেটকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানাতে চেয়েছিলেন এই অলরাউন্ডার। সাকিব না থাকলেও সাকিবকে দেশে এনে বিদায় নেওয়ার সুযোগ দেয়ার দাবিতে শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ১ ও ২ নম্বর গেটের সামনে হয়েছে বিক্ষোভ। সেই বিক্ষোভে লাঠিসোঁটা নিয়ে আক্রমণও করেছে একদল দুষ্কৃতিকারী।
আওয়ামী লিগের সাবেক সাংসদ ও ফ্যাসিবাদের দোসর সাকিবকে খেলতে না দেয়ার দাবিতেও বিক্ষোভ,মিছিল,জনসমাবেশ হয়েছে স্টেডিয়ামের ৩ ও ৪ নম্বর গেটের সামনে। সাকিব না থাকলেও তাকে কেন্দ্র করে দুপুর থেকেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে মিরপুর, হয়েছে ধাওয়া পালটা ধাওয়া ও দফায় দফায় সংঘর্ষ।
সকাল থেকেই সতর্ক অবস্থানে ছিল আইনশৃংখলা বাহিনী। মিরপুর-২ নম্বর পূর্ণিমা রেস্টুরেন্ট থেকে ৬ নম্বরের প্রশিকা মোড় পর্যন্ত মিল্কভিটা রোডে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুই পাশা বসানো হয় ব্যারিকেড। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকেও স্টেডিয়ামে প্রবেশে ছিল কড়া নিরাপত্তা তল্লাশি। বৈধ অ্যাক্রিডেটেশন কার্ড ছাড়া কাউকে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে দেওয়া হইনি। দুপুর ৩টার দিকে, দক্ষিণ আফ্রিকা দল যখন অনুশীলন করছে বিসিবি’র একাডেমি মাঠে তখন সাকিবের পক্ষে স্লোগান দিয়ে একদল মানুষ জড়ো হন শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের ২ নম্বর ফটকের সামনে।
তাদের প্ল্যাকার্ডে লেখা ‘আমার রক্তের গ্রুপ সাকিব পজেটিভ’, ‘কানপুর না মিরপুর, মিরপুর মিরপুর’, এমন অনেক কিছু। সাকিবের পক্ষে স্লোগান দিয়ে তারা বিসিবি প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদ এবং ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার পদত্যাগ দাবি করেন। মিছিলের পক্ষ থেকে বিসিবি প্রেসিডেন্ট বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য আন্দোলনকারীরা বিসিবি কার্যালয়ের ফটকের দিকে যেতে চাইলে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধার মুখে পড়ে। এমন সময় পাশের গলি থেকে অতর্কিতে কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী লাঠি, বাঁশ, ধাতব পাইপ জাতীয় দেশি অস্ত্র নিয়ে এসে আন্দোলনকারীদের উপর হামলা করে। এসময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ছিল নীরব দর্শকের ভূমিকায়।
সাকিব-বিরোধী পক্ষের তৎপরতাও ছিল মিরপুরে। তারা সাকিব ভুয়া, ফ্যাসিবাদের দোসর, খুনী হাসিনার সমর্থক, জুয়াড়ি সাকিব এরকম নানান স্লোগান দেন এবং সাকিবকে মিরপুরে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন। দুই পক্ষের মিছিল স্লোগান, ধাওয়া-পালটা ধাওয়ায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় মিরপুর। অনুশীলন শেষে হোটেলে ফেরার পথে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সদস্যরা দেখেছেন এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি, অনেককেই গাড়ির জানালা থেকে এসব দৃশ্য ভিডিও করতে দেখা যায়। সন্ধ্যার পর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।
খেলোয়াড়ি জীবনে অনেক সময়ই নানান অজুহাতে সাকিব খেলতে চাননি দেশের হয়ে, বিশেষ করে টেস্ট ম্যাচে। জীবনের শেষ টেস্ট খেলা নিয়ে সাকিবকে কেন্দ্র করে যা যা হয়ে গেল, সেসবই হয়তো তার কর্মফল। যার পেছনে ইন্ধন জুগিয়েছে সাকিবের রাজনৈতিক পরিচয়।
Leave a Reply