এনামুল হক,রাজারহাট প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামে সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গা উৎসবের আরতি দেখতে বেড়িয়ে নিজেদের অজান্তেই ঘটে যাওয়া অজানা একটি লঘু পাপে আটক ১জন। গুরু দন্ডের সম্মুখে পড়ছে আরও ৫ কিশোর। তাদের মধ্যে জন স্কুল ও একজন মাদ্রাসার ছাত্র।
গত ৯ অক্টোবর রাতেই ঘটনাস্থলেই আটক নুর জামাল ওরফে ফুয়াদুল মন্দিরে হামলা ও ভাংচুর করায় মন্দির কমিটির লিখিত অভিযোগে জেলহাজতে এখন। সৌহার্দ্যপুর্ণ আচরণের অভাবেই এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং পাশাপাশি বিষয়টি সমাধান না হলে দুই ধর্মের মানুষের মাঝে থাকা সম্প্রতির মেলবন্ধন নষ্ট হবে আশংকা করছেন প্রবীণ ও গুনীজন। এমন একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে গেছে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিম দেবোত্তর সার্বজনীন দুর্গাপূজা মন্দির প্রাঙ্গণে। আটক নুর জামাল পাশ্ববর্তী চেতনা গ্রামের বাসিন্দা শারীরিক প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক অকিয়ত আলীর পুত্র।অনুসন্ধানে জানাগেছে, সেইদিন ওরা ৬ জন একসঙ্গে দুর্গা পুজা মন্দিরে আরতি দেখতে বেড়িয়ে যায়। রাত সাড়ে দশ ঘটিকার পরে সবাই বাড়ী ফেরার পথে হাতে থাকা পেঁপের ছালের ঢিল একে অপরকে ছুড়ে। একজন বসে গেলে একটি পেঁপের ছালের ছোড়া ঢিল রাস্তা সংলগ্ন মন্দিরের টিনের বেড়ায় লাগার শব্দই কাল হয়েছে এই কিশোরদের। টিনের বেড়ার শব্দ শুনেই মন্দিরে উপস্থিত আনসার ও কমিটির লোকজন পিছনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা নুর জামাল ওরফে ফুয়াদুল কে(১৭)আটক করলে পালিয়ে যায় অন্যরা। হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগে মামলা রুজু হলেও মন্দির ও প্রতিমাসহ অন্যান্য সবকিছু ছিলো অক্ষত।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, নির্বাহী দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটি নেতৃত্ব, উপজেলা জামায়াত নেতাসহ গণ্যমাণ্য স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ মন্দির পরিদর্শন করেন।ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক প্রশাসন পক্ষ থেকে কোনরকম নির্বাহী আদেশ ঘোষণা না হওয়ায় পরবর্তীতে মন্দির কমিটি রাজারহাট থানায় মন্দিরে হামলা ও ভাংচু্র করার একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন কমিটির সাধারণ সম্পাদক তপন চন্দ্র রায়।মামলার বাদী ও মন্দির কমিটির সভাপতি তপন চন্দ্র রায় বলেন, সেদিন রাত সোয়া ১১টার দিকে আমি বাড়ি থেকে মন্দিরে যাচ্ছিলাম। এ সময় হঠাৎ মন্দিরের পেছনে রাস্তার ধারের টিনের বেড়ায় জোরে শব্দ শুনে দৌড়ে যাই।আমাকে দেখে পাঁচটি ছেলে পালিয়ে যায়। তবে একজনকে দেখতে পেয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা আটক করেন। ওই কিশোরের হাতে কিংবা তার আশপাশে কোনো অস্ত্র বা লাঠিসোটা ছিল না। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, তার কোনো দোষ নেই; কিছু করেনি।পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এর পর পুলিশ এজাহারে স্বাক্ষর চাইলে আমি তা করে দিই। কিন্তু এজাহারে কী লেখা হয়েছে, আমি তা জানি না।
সিঙ্গারডাবরীহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আরিফুল ইসলাম বলেন, যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের চারজনই আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থী। আগামী নভেম্বরে তাদের বার্ষিক পরীক্ষা। তুচ্ছ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়া দুঃখজনক।
কুড়িগ্রাম জজকোর্টের আইনজীবী সফিকুল ইসলাম বলেন, মামলায় অজামিনযোগ্য ধারা থাকায় ১ নম্বর আসামি এখনও জেল হাজতে রয়েছে বলে শুনেছি। রাজারহাট থানার ওসি রেজাউল করিম রেজা বলেন, বাদী নিজে থানায় উপস্থিত হয়ে মামলাটি করেছেন।
Leave a Reply