ইকোনমিক ডেস্ক:
বিশ্বব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছে যে, ২০২৪–২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে ৪ শতাংশে নামবে।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) প্রকাশিত ‘সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট’-এ এই তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ২ শতাংশের মধ্যে শ্লথ হতে পারে, যেখানে মধ্যবর্তী হিসাব হিসেবে ৪ শতাংশ ধরা হয়েছে।
‘সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ প্রকাশ উপলক্ষে বুধবার (৯ অক্টোবর) পাকিস্তানের ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রধান অর্থনীতিবিদ ফ্র্যানজিসকা ওহসর্জ বলেন, মূলত নীতি অনিশ্চয়তা এবং সাম্প্রতিক বন্যার কারণে তারা বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসে নিম্নমুখী সংশোধন এনেছেন।
এর আগে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এপ্রিলে দেওয়া পূর্বাভাসে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৭ শতাংশ হওয়ার কথা ছিল। সরকারের ঘোষিত বাজেটে চলতি অর্থবছরে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোয় নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যানের অভাব এবং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা তাদের পূর্বাভাসকে প্রভাবিত করেছে। স্বল্পমেয়াদে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগ ও শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে না, আর বন্যার কারণে কৃষি উৎপাদন কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তবে, দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে বলে বিশ্বব্যাংক মনে করছে। চলতি বছরে এই অঞ্চলের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৪ শতাংশ হতে পারে, যা পূর্বাভাসের চেয়েও বেশি। ফলে, এই অঞ্চলটি বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিণত হওয়ার ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে।
বিশ্বব্যাংকের মতে, নারীদের কর্মক্ষেত্রে আরও বেশি যুক্ত করলে এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উদারীকরণ করলে দক্ষিণ এশিয়ায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরও জোরদার হবে। এভাবে দেশগুলো তাদের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যদি বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী কমে যায়, তবে তা কোভিড মহামারির পর সবচেয়ে কম হবে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে ৩.৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।
তবে, বিশ্বব্যাংক দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী। তারা মনে করছে, আর্থিক খাতের সংস্কার, উন্নত ব্যবসায়িক পরিবেশ, দেশীয় সম্পদের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি ধীরগতির পুনরুদ্ধার সম্ভব।
Leave a Reply