স্বাস্থ্য ডেস্ক: আজকাল অনেকেই তাদের স্বাস্থ্য নিয়ে বেশ সচেতন। নিয়মিত শরীরচর্চা করেন। মেনে চলেন ডায়েটও। এমনকি, স্বাস্থ্যের হাল ফেরাতে নিয়মিত ব্ল্যাক কফি এবং গ্রিন টি-ও পান করেন। তবে এহেন স্বাস্থ্য সচেতন মানুষগুলোই সামাজিক মাধ্যমে নানা পোস্ট দেখে পড়েন মহা ফাঁপড়ে।
যেমন ধরুন, আজকাল ফেসবুক-ইউটিউবসহ নানা মাধ্যমে কফি ও ব্ল্যাক কফি নিয়ে বিতর্কিত সব ভিডিও এবং মন্তব্য পোস্ট করা হচ্ছে। ভার্চুয়াল দুনিয়ার তথাকথিত কিছু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা গ্রিন টি-কে অমৃত পানীয় বানিয়ে ফেলছেন। অনেকে আবার ব্ল্যাক কফির গুণ কীর্তনে ব্যস্ত।
এই দুই ধরনের মতের বৈপরিত্যের মাঝে পড়ে অনেক বুদ্ধিমান মানুষই সমস্যায় পড়ে যাচ্ছেন। তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না যে, তাদের হেলদি ডায়েট প্ল্যানে ব্ল্যাক কফি না কি গ্রিন টি-কে জায়গা করে দেবেন।
তাই এখন স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে যে, ব্ল্যাক কফি না কি গ্রিন টি, কোনটা স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী? এ বিষয়ে কথা বলেছেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ ঈশানী গঙ্গোপাধ্যায়। চলুন জেনে আসি তিনি কী বলছেন।
গ্রিন টি-এর গুণের সীমা-পরিসীমা নেই!
আমাদের হাতের কাছে থাকা অন্যতম সেরা পানীয় হলো গ্রিন টি। কারণ এতে রয়েছে ক্যাটেচিনস নামক অত্যন্ত উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা কিনা দেহের একাধিক সমস্যা সমাধানের কাজে সিদ্ধহস্ত।
তাই নিয়মিত গ্রিন টি-এর কাপে চুমুক দিলে বিপাকের হার বাড়ে। যার ফলে খুব সহজেই ওজনকে নিম্মমুখী করা সম্ভব হয়। ব্লাড প্রেশার এবং কোলেস্টেরলকেও বশে রাখে এই পানীয়। হার্টও থাকে সুস্থ-সবল। তাই শরীরের হাল ফেরাতে গ্রিন টি খেতে ভুলবেন না যেন!
কফিরও জুড়ি মেলা ভার
পুষ্টিবিদ ঈশানী জানান, কফির মূল উপাদান হলো ক্যাফিন। এই উপাদান এনার্জি বুস্ট করার কাজে সিদ্ধহস্ত। তাই প্রি ওয়ার্ক আউট ড্রিংকস হিসাবে কফিকে ডায়েটে জায়গা করে দিতেই পারেন।
শুধু তাই নয়, কফি ব্রেনের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর কাজেও দারুণ কার্যকরী। তাই এই পানীয়ের কাপে চুমুক দেওয়ার পর ল্যাথার্জি কাটিয়ে দ্রুত কাজে মন বসানো যায়। এমনকি ডিমেনশিয়ার মতো ডিজেনারেটিভ ডিজিজের ফাঁদ এড়াতেও অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে কফি। তাই যত দ্রুত সম্ভব এই পানীয়ের সঙ্গে সখ্যতা তৈরি করে নিন।
কফি না গ্রিন টি, কোনটা খেলে ফিরবে স্বাস্থ্যর হাল?
পুষ্টিবিদ ঈশানীর উত্তর, কফি ও গ্রিন টি দুইয়েরই নিজস্ব কিছু অনন্য গুণ রয়েছে। তাই এই দুইয়ের মধ্যে কোনো একটিকে আলাদা করে বেছে নেওয়া সম্ভব নয়। বরং যে যেই পানীয়তে অভ্যস্ত, তিনি তাই পান করতে পারেন। এতেই তিনি সুস্থ থাকতে পারবেন।
তবে এ প্রসঙ্গে পরামর্শ হলো, গরমকালে কফির তুলনায় গ্রিন টি খাওয়া শরীরের জন্য একটু বেশি উপকারী। কারণ এতে শরীর ঠান্ডা থাকে। অপরদিকে শীতের দিনে কফি খেলে চাঙ্গা থাকে শরীর। তাই সময় বিশেষে কফি ও গ্রিন টি বদলে বদলে খেতেই পারেন।
দুধ মেশাবেন না
কফি বা গ্রিন টি-তে দুধ মেশাবেন না। এই কাজটা করলে এই দুই পানীয়ের কোনো গুণই মিলবে না। এমনকি চিনিও না। এতে কফি বা চায়ের গুণ তো কমবেই, পাশাপাশি বাড়বে ওজন। তাই সুস্থ থাকার ইচ্ছা থাকলে এসব নিয়ম মেনে কফি পান করার চেষ্টা করুন।
দিনে কত কাপ চলতে পারে?
দিনে ২ থেকে ৩ কাপের বেশি চা বা কফি খাওয়া উচিত না। এতে শরীরে ক্যাফিন ওভারডোজ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এর ফলে অনিদ্রা, গ্যাস, অ্যাসিডিটিসহ একাধিক রোগের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা বাড়বে। তাই চা বা কফি পান করার সময় এই হিসেবটা মাথায় রাখতেই হবে।
Leave a Reply