রিপন বারী,জাবি প্রতিনিধি:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লার হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সকলের সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে ও অপরাধ অনুযায়ী শাস্তির ৬ দফা দাবীতে মানববন্ধন করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারের পাদদেশে এ মানববন্ধন করে তারা। মানববন্ধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর ৬ দফা দাবির লিখিত স্মারক দেয় শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহ হলো – ১. নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে উক্ত ঘটনায় সরাসরি জড়িতদের মাত্রা-অনুযায়ী নিরপেক্ষভাবে শান্তি নিশ্চিত করতে হবে। লঘু পাপে কাউকে শুরু দন্ড প্রদান হতে বিরত থাকতে হবে।
২. শামীম মোল্লাকে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর পরবর্তী নিরাপত্তা অফিসের গাফিলতির ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩. মারধর এবং পুলিশের কাছে হস্তান্তরের পর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া ঘটনার গভীর তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে।
৪. প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীনের বিতর্কিত কর্মকান্ড বিশ্লেষণপূর্বক ঘটনাস্থলে উপস্থিত নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৫. জুলাইয়ের গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত আসামী সুদীপ্ত শাহীন কর্তৃক এই মামলা রুজু করা সম্পূর্ণ অযাচিত এবং ভিত্তিহীন। বিতর্কিত ব্যক্তি কর্তৃক দায়ের করা এই বিতর্কিত মামলা অতিদ্রুত প্রত্যাহার করে তদন্ত সাপেক্ষে নতুন। মামলা দায়ের করতে হবে।
৬. সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর জুলাই এবং আগস্ট মাসে ঘটে যাওয়া নির্মম নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত সকল শিক্ষক, কর্মচারী, এবং শিক্ষার্থীদের আজীবন বহিষ্কারসহ দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী বাপ্পীর সঞ্চালনায় শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৫০ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী সিয়াম বলেন, আমরা জানি কোন অপরাধ সংগঠিত হলে তদন্তের মাধ্যমে বিচার হয়। কিন্তু প্রশাসন সুষ্ঠু তদন্ত সারা যেভাবে মামলা দায়ের করলো তা কাম্য নয়। তার চেয়ে বড় কথা যিনি মামলা করেছেন তিনি হত্যা মামলার আসামি। আমরা এই মামলা প্রত্যাহার চাই। এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি প্রদান করতে হবে। রায়হানকে সামনে রেখে বাকি প্রধান আসামিরা যেন পার পেয়ে না যায়।
ইংরেজি বিভাগের ৫০ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী তৃষা বলেন, “আমাদের প্রধান দাবি হলো শামীম মোল্লা হত্যা মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে, সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে তাদের প্রাপ্য শাস্তিটুকু যেন নিশ্চিত করা হয়। নিরাপত্তা অফিসে যদি কেউ মারা যায় তাহলে আমাদের সাথে এরকম কিছু ঘটলে আমাদের নিরাপত্তা কে দিবে?
এখানে লঘুদণ্ডে গুরু শাস্তি কেউ পাক সেটা আমরা চাই না। শামীম মোল্লাকে প্রক্টর অফিসে যখন মারা হয় তখন প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তার নিরাপত্তা কেন নিশ্চিত করতে পারেনি সেই প্রশ্ন আমাদের প্রশাসনের কাছে থেকে যায়। সুদীপ্ত শাহীন নিজে একজন হত্যা মামলার আসামি হয়ে কিভাবে হত্যা মামলা করে এবং স্ব-পদে বহাল থাকে এটিও প্রশাসনের কাছে আমাদের প্রশ্ন।”
এ সময় রায়হানের মা বলেন, আমার রায়হান যতটুকু অপরাধ করেছে ততটুকু শাস্তি যেন সে পায়। রায়হান সামনে রেখে কেউ যেন রাজনীতি না করে। আমার রায়হানের জীবনটা যেন নষ্ট করে না দেয়।
এ সময় উপাচার্য তাদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেন এবং সুষ্ঠু তদন্তের নিশ্চিতের ব্যাপারে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন।
Leave a Reply