ফরিদুল ইসলাম,নিজস্ব প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামে চলমান তীব্র গরম এবং বিদ্যুতের অনিয়মিত লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন ৩৬-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকায় সাধারণ মানুষ প্রচণ্ড কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষ এবং খেটে খাওয়া জনগোষ্ঠী ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
জেলার বিভিন্ন স্থানে দিনে ৮-১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এতে করে গরমের পাশাপাশি বিদ্যুৎ না থাকায় কাজের গতি কমে গেছে। মানুষজন ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি পাচ্ছেন না।
রিকশাচালক বেলাল হোসেন বলেন, “এত গরমে রিকশা চালানো যায় না। তবুও উপার্জনের জন্য নামতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় রাতে বাড়িতে ঘুমাতে পারি না।”
শ্রমজীবী মানুষেরা বলছেন, তীব্র গরমের কারণে কাজের সময় শারীরিক দুর্বলতা অনুভব হচ্ছে। কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকিও বাড়ছে। কৃষি শ্রমিক মজিবর রহমান বলেন, “মাঠে কাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। গরমের মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকায় বিশ্রাম নেওয়ারও সুযোগ পাচ্ছি না।”
এদিকে, জেলার বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে তাপমাত্রাজনিত অসুস্থতায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তাপমাত্রার কারণে ডায়রিয়া, ডিহাইড্রেশন ও হিটস্ট্রোকের রোগী বাড়ছে। সবাইকে পর্যাপ্ত পানি পান ও রোদে কম বের হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসকগণ।
ব্যবসায়ীরাও লোডশেডিংয়ের কারণে সমস্যায় পড়েছেন। শহরের ইলেকট্রনিক পণ্যের দোকানের মালিক হাসান আলী বলেন, “বিদ্যুৎ না থাকলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কাস্টমারও আসে না। এতে আমাদের ব্যবসায় মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।”
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কুড়িগ্রাম কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, “বিদ্যুতের চাহিদা বেশি থাকায় লোডশেডিং হচ্ছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে।”
জনসাধারণ দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষ এবং গরমে অসুস্থ হওয়া মানুষের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
কুড়িগ্রামে চলমান তীব্র গরম ও বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে সাধারণ মানুষ অসহনীয় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
Leave a Reply