1. editor1@kurigramsongbad.com : কুড়িগ্রাম সংবাদ :
  2. sifat@kurigramsongbad.com : sifat :
  3. siteaccess@pixelsuggest.com : কুড়িগ্রাম সংবাদ :
সাম্প্রতিক :
সাংবাদিকদের জন্য ঝুঁকি ভাতা, বিমা ও পেনশনের সুপারিশ শ্রম সংস্কার কমিশনের আওরঙ্গজেব: ৩০০ বছর পরেও ভারতীয় রাজনীতিতে বিতর্কের কেন্দ্রে এক মোগল সম্রাট ছাত্রজনতার মিছিলে হামলার ঘটনায় ফুলবাড়ীতে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দুই সভাপতি গ্রেফতার কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলা: নিহত অন্তত ২৬, আরও বাড়তে পারে প্রাণহানি রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা প্রতিটি ঘরে পৌঁছাতে হবে: তারেক রহমান আমরাও চাই যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার করে নির্বাচন দেয়া হোক কুড়িগ্রামে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সামছুজ্জমান দুদু ইনসাফ যদি তোমার নিজের বিরুদ্ধেও যায় তবুও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করো: ব্যারিস্টার ফুয়াদ ভূরুঙ্গামারীতে জমি বিরোধের জেরে ৪ বিঘা ধানখেতে বিষ প্রয়োগ, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের অভিযোগ গ্রীন ভয়েস নাগেশ্বরী শাখার প্রাণবন্ত আয়োজনে উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও টি-শার্ট বিতরণ রৌমারীতে রাস্তার উন্নয়নকাজ এক বছর ধরে বন্ধ, চরম দুর্ভোগে ৫০ হাজার মানুষ

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য: গ্রামীণ অঞ্চলের অগ্রগতির অন্তরায়

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৭৬ বার পড়া হয়েছে

ফরিদুল ইসলাম,নিজস্ব প্রতিনিধি:

বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলিত ও সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে। যেখানে শহরাঞ্চলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে কিছুটা উন্নতি পরিলক্ষিত হয়েছে, সেখানে গ্রামীণ অঞ্চলের জনগণ এখনো মৌলিক সেবা থেকে বঞ্চিত। অথচ, বাংলাদেশের প্রায় ৬৫% জনগণ গ্রামে বাস করে, যা জাতির সার্বিক উন্নয়নের পথে বড় বাধা তৈরি করছে।

শিক্ষার সংকট: অবকাঠামোর ঘাটতি ও মানহীন শিক্ষা;

গ্রামাঞ্চলে শিক্ষার সবচেয়ে বড় সমস্যা হল মানসম্পন্ন শিক্ষার অভাব। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও এখানে অবকাঠামোগত ঘাটতি প্রকট। অনেক স্কুলে পর্যাপ্ত ক্লাসরুম নেই, নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক, এবং প্রায়ই পাঠ্যবই ও শিক্ষাসামগ্রীর সংকট থাকে। একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, গ্রামীণ অঞ্চলের অনেক শিক্ষার্থী পঞ্চম শ্রেণি পাস করলেও তারা মৌলিক সাক্ষরতার দক্ষতা অর্জন করতে পারছে না। ইউনিসেফের মতে, বাংলাদেশের গ্রামীণ বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত অত্যন্ত নিম্নমানের, যার ফলে শিক্ষার গুণগত মান দিন দিন কমছে।

শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য শুধুমাত্র অবকাঠামো উন্নয়নই যথেষ্ট নয়;

দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শিক্ষকের অভাবও সমান গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। শহরাঞ্চলের মতো আধুনিক ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার সুযোগের অভাব গ্রামীণ শিক্ষার্থীদের পিছিয়ে রাখছে। বিশেষ করে, ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল শিক্ষার সুযোগ গ্রামে প্রায় অনুপস্থিত। গ্রামীণ এলাকার অধিকাংশ পরিবারও অর্থনৈতিকভাবে শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত শিক্ষার সুযোগ দিতে সক্ষম নয়, যার ফলে তারা শহরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারে না।

স্বাস্থ্যসেবার সংকট: অব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোর অভাব। স্বাস্থ্যসেবার দিক থেকেও গ্রামীণ বাংলাদেশ অত্যন্ত পিছিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গ্রামীণ এলাকার প্রায় ৩০% মানুষ মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা পেতে সক্ষম নয়। সরকারি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো বেশিরভাগ সময়ে দুর্বল অবকাঠামো, আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব, এবং দক্ষ চিকিৎসকের সংকটে ভুগছে। যেসব গ্রামীণ ক্লিনিকগুলোতে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার ব্যবস্থা আছে, সেখানেও প্রায়ই ওষুধের সংকট এবং যথাযথ চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ শোনা যায়।

এছাড়া মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার শহরের তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় বেশি। বিশেষ করে, প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা এবং প্রসূতি সেবা নিয়ে বড় ধরনের সংকট বিদ্যমান। গ্রামীণ মহিলাদের প্রসবকালীন স্বাস্থ্যসেবার জন্য এখনও অনেককে বহু দূরের শহরে যেতে হয়, যা সময়, অর্থ এবং জীবনের জন্য বিপজ্জনক। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, গ্রামীণ এলাকায় প্রায় ৪০% গর্ভবতী মহিলা দক্ষ প্রসব সেবা থেকে বঞ্চিত। এর ফলে মাতৃমৃত্যু এবং নবজাতকের মৃত্যু হার অনেক বেশি।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব: স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উপর সরাসরি প্রভাব; জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবও গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে, বন্যা, খরা এবং নদীভাঙনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অনেক স্কুল ডুবে যায় বা ধ্বংস হয়ে যায়। এছাড়া, এই দুর্যোগের সময়ে পানীয় জলের সংকট, স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়া এবং পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়, যা স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষির ওপর নির্ভরশীল গ্রামীণ অর্থনীতির অবনতি হলে পরিবারের আয় কমে যায়, যার ফলে শিক্ষার খরচ বহন করা অনেকের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হারও দিন দিন বাড়ছে, যা গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষার স্থায়িত্বে বাধা সৃষ্টি করছে।

সমাধানের পথ: সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন;

গ্রামীণ অঞ্চলের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন ছাড়া সার্বিকভাবে জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রথমত, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় প্রযুক্তির ব্যবহার আরও প্রসারিত করতে হবে, যাতে গ্রামের জনগণও আধুনিক সেবা নিতে পারে। সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত ওষুধ ও আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম নিশ্চিত করা প্রয়োজন, সেই সাথে দক্ষ চিকিৎসক নিয়োগ এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ বাড়ানো জরুরি।

শিক্ষা ক্ষেত্রে, ডিজিটাল শিক্ষার প্রসার ঘটানো এবং গ্রামীণ শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে হবে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং উন্নত মানের পাঠ্যবই সরবরাহ করতে হবে যাতে গ্রামীণ শিক্ষার্থীরাও প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে তাদের জায়গা করে নিতে পারে।

সার্বিকভাবে, সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশে গ্রামীণ জনগণের অগ্রগতি ছাড়া সত্যিকারের উন্নয়ন সম্ভব নয়।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো খবর


Kurigram Songbad © 2025. All Rights Reserved.
Built with care by Pixel Suggest
error: Content is protected !!