আমিনুল ইসলাম,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে অসুস্থ ও বয়োবৃদ্ধ খালুকে ‘হত্যা করে’ সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময় এক যুবককে আটক করে বিজিবি’র কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।
আজ মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে আটক যুবককে পুলিশে হস্তান্তর করে বিজিবি। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৩ টার দিকে উপজেলার দাঁতভাঙা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের উত্তর কাউনিয়ার চর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
রৌমারী থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) গোলাম মর্তুজা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।নিহত বৃদ্ধের নাম বশির উদ্দিন (৮২)। তিনি উত্তর কাউনিয়ার চর গ্রামের হেশকারী শেখের ছেলে। আটক যুবকের নাম নুর আলম (৩০)। তিনি ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ থানা এলাকার কলিম উদ্দিনের ছেলে। ভুক্তভোগী বশির উদ্দিন সম্পর্কে নুর আলমের খালু। তিনি কয়েকদিন ধরে বশিরের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।
নিহত বশিরের মেয়ে মাহমুদা আক্তার জানান, কাজের সুবাদে নুর আলম ভারতে থাকে। সেখান থেকে সে বৈধ এবং অবৈধ পথে বাংলাদেশে যাতায়াত করতো। দুই সপ্তাহ আগে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নুর আলম রৌমারীর উত্তর কাউনিয়ার চর গ্রামে আসে। সেখানে কয়েকদিন থাকার পর ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়িতে যায়। গত ৪ দিন আগে তার মাকে নিয়ে আবার কাউনিয়ার চরে বশিরের বাড়িতে আসে। রাতে অসুস্থ বশিরের সাথে একই বিছানায় ঘুমাতো। মঙ্গলবার ভোর রাতে সে বশিরকে মেরে সীমান্ত পথে পালিয়ে যায়। তবে কী কারণে সে বশিরকে মেরেছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি পরিবার।
মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘ নুর আলমের কথাবার্তা অসংলগ্ন ছিল। সে অসুস্থ্য কিনা সেটাও ঠিক জানি না। গত দুই রাত থেকে সে আমার বাবার সাথে থাকছিল। রাতে ঘুমায় না। মঙ্গলবার রাত ১ টার দিকেও আমি দেখি গেছি আব্বা ভালো আছে। রাত সাড়ে ৩ টার দিকে নুর আলম চিল্লায় চিল্লায় বলতেছে খালু মারা গেইছে। আমরা আসি দেখি আব্বার শরীরে রক্ত। আমরা ওক আটকানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু ওই (নুর আলম) ঘুষি দিয়া নিজেক ছটকে নিয়া ভারতে পালায় গেছিল। পরে বিএসএফ আটক করি ফেরত দিছে।’
‘ আমার আব্বা দুই বছর থাকি প্যারালাইজড হয়া বিছানায় পড়ি আছে। ওই মানুষটাক ওই মারছে। আমরা ওর বিচার চাই,’ বলেন হাজেরা।
দাঁতভাঙা ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ওই বাড়িতে গিয়ে জানতে পারি অসুস্থ্য বশি কে মেরে ফেলা হয়েছে।’
বিজিবি জানায়, সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময় বিএসফের হাতে আটক হয় নুর আলম। পরে মঙ্গলবার সকালে সীমান্ত পিলার ১০৫৪ (২-এস) এর কাছে আসামের দ্বীপচর বিএসএফ কোম্পানি কমান্ডারের সাথে-বিজিবি দাঁতভাঙা কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আটক নুর আলমকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে বিএসএফ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে। একই সাথে আটক নুর আলমকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বিজিবি।
রৌমারি থানার ওসি গোলাম মর্তুজা জানান, ‘নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ও রক্তাক্ত জখম রয়েছে। বিজিবি আটক যুবককে পুলিশে হস্তান্তর করেছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।’
Leave a Reply