আমিনুল ইসলাম,নিজস্ব প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার নওদাপাড়া সীমান্তে ভারতীয় জিরা আটককে কেন্দ্র করে বিজিরি’র ওপর চোরকারবারিদের হামলায় বিজিবির এক সদস্য সহ ৩ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। মঙ্গলবার ভোর রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের নওদাপাড়া সীমান্তের আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার ১০৬৩ এর কাছে এ ঘটনা ঘটে।
রৌমারী থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) গোলাম মর্তুজা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজিবি, পুলিশ ও সীমান্ত সূত্রে জানা গেছে, সোমবার ভোররাতে সীমান্ত চোরাকারবারীর একটি দল ভারত থেকে আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার ১০৬৩ এর দক্ষিণ পাশ দিয়ে আড়কির মাধ্যমে কাটাতারের বেড়ার উপর দিয়ে জিরা সহ ভারতীয় পণ্য পাচার করছিল। এসময় রৌমারী সদর ক্যাম্পের বিজিবির টহলদল তাদের ধাওয়াা দিলে চোরাকারবারিরা পালিয়ে যায়। বিজিবি ঘটনাস্থল থেকে চোরাকারবারীদের ফেলে যাওয়া কয়েক প্যাকেট ভারতীয় জিরা উদ্ধার করে।
কিছু সময় পর চোরাকারবারিরা লাঠিসোঠা ও দেশিয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বিজিবি’র ওপর হামলা চালায়। আত্মরক্ষার জন্য বিজিবি সদস্যরা ময়জাল নামের স্থানীয় এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নেয়। হামলায় রৌমারী সদর ক্যাম্পের বিজিবি সদস্য আবু রায়হান (৩১), সোর্স মজিবুর রহমান (৬৮) ও আশ্রয়দাতা ময়জাল হোসেন (৫৫) আহত হন। চোরাকারবারিরা তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। আহতদের রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
তবে চোরাকারবারীদের দাবি, বিজিবি তাদের সাথে কথার ‘বরখেলাপ’ করেছে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন চোরাকারবারী স্থানীয় সাংবাদিকদের জানায়, সোমবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে বাংলাবাজার ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা আসামি বিহীন মামলা করার আশ্বাস দিয়ে চোরাকারবারে জড়িত স্থানীয় কয়েকজনের কাছে ২০ প্যাকেট জিরা নিয়ে যায়। একই সাথে তাদেরকে সীমান্ত পথে ভারত থেকে মালামাল আনার মৌখিক অনুমতি দেয়। কিন্তু রাতের বেলায় সীমান্তে এসে চোরাকারবারীদের আটক করার চেষ্টা করে।
তবে চোরাকারবরীদের এমন অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। রৌমারী সদর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডারের নাম্বারে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ঘটনার পর মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন জামালপুর ৩৫ ব্যাটালিয়নের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসানুর রহমান সহ বিজিবি’র একটি দল। তারা হামলাকারীদের পরিচয় জানতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতা চান।
সার্বিক বিষয়ে জানতে পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসানুর রহমানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
রৌমারী থানার ওসি গোলাম মর্তুজা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলেন, জিরা উদ্ধারকে কেন্দ্র করে বিজিবির ওপর হামলা হয়েছে বলে জেনেছি। বিজিরি’র পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply