আমিনুল ইসলাম,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামে মাচার ওপর বস্তা দিয়ে সবজি চাষ জনপ্রিয় হচ্ছে মানুষের মধ্যে। এ পদ্ধতিতে বিভিন্ন ধরণের শাকসবজি চাষের থপাশাপাশি লাভজনক আদাচাষ করে সাফল্য পাওয়ায় খুশি বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ। সরকারি ও বেসরকারিভাবে প্রযুক্তিগত ও কারিগরি সহযোগিতা, প্রয়োজনীয় পরামর্শ এবং পুঁজির যোগান পাওয়ায় গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পরছে এই পদ্ধতি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য মতে, চলতি বছর ৪ হাজার ২০৫ হেক্টর জমিতে শাকসবজি, ৭২৫ হেক্টর জমিতে মরিচ এবং ৫৭০ হেক্টর জমিতে আদা চাষ করা হয়। জুলাই মাসে প্রবল বন্যায় ৭৩৭ হেক্টর শাকসবজি, ৩৭ হেক্টর মরিচ ও ১১ হেক্টর জমির আদা বিনষ্ট হয়ে যায়। এরকম পরিস্থিতিতে বিকল্প পদ্ধতি অনুসরণ করে শাকসবজি চাষে সাফল্য পাচ্ছেন কৃষক।
জানা গেছে, বন্যাপ্রবণ কুড়িগ্রাম জেলায় ১৬টি নদ-নদীর মধ্যে রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক চর ও দ্বীপচর। প্রতিবছর বন্যা, খরা ও অতিবৃষ্টির কারণে এসব এলাকার শাকসবজি বিনষ্ট হয়ে যায়। ফলে অমৌসুমে চরাঞ্চলে সবজি ও পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেয়। বাজারে উচ্চমূল্যেও দেখা দেয়।এসব দিক বিবেচনা করে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চরাঞ্চলে পাইলটিং প্রকল্পের আওতায় মাচায় বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষে উৎসাহিত করছেন। এই চাষ পদ্ধতিতে সমস্যা গুলো চিহ্নিত করতে অনেকে অফিস চত্বরে পরীক্ষামূলক চাষাবাদ করছেন। কুড়িগ্রাম শহরে বেসরকারি সংস্থা আরডিআরএস বাংলাদেশ ট্রান্সবাউন্ডারী প্রকল্পের মাধ্যমে নিজেদের অফিস চত্বরে প্রদর্শনী প্লট হিসেবে ২শতাধিক বস্তায় আদা ও বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন।
এই প্রকল্পের প্রজেক্ট অফিসার শাহজাহান মিয়া জানান, এই সফলতা প্রয়োগ করা হচ্ছে বিভিন্ন চরে। চরা লের প্রতিটি পরিবার ১০ থেকে ১৫টি বস্তায় এসব পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। এতে খরচ হচ্ছে মাত্র ১হাজার টাকা। পরিবারের সবজি চাহিদা পূরণ করে প্রায় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকার আদা বিক্রি করতে পারছেন। অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে বস্তা সড়িয়ে ঘরের ভিতর নিরাপদে রাখতে পারছেন।
কুড়িগ্রাম আরডিআরএস’র ট্রান্স বাউন্ডারী প্রজেক্টের ইমারজেন্সি এন্ড হিউমেন্টেরিয়ান রেসপন্স কো-অর্ডিনেটর তপন কুমার সাহা জানান, বন্যার সময় খাবার ও সবজির সংকট কমাতে চর এলাকায় সবজি চাষে কৃষকদের আগ্রহী করে তোলা হচ্ছে। প্রদর্শনী খেত হিসেবে মাচায় আদাচাষের পাশাপাশি বেগুন, মরিচ, বরবটি, পূঁইশাক, কুমড়াসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করা হচ্ছে। যাতে এই শিখন চরে কাজে লাগানো যায়।
Leave a Reply