1. editor1@kurigramsongbad.com : কুড়িগ্রাম সংবাদ :
  2. sifat@kurigramsongbad.com : sifat :
  3. siteaccess@pixelsuggest.com : কুড়িগ্রাম সংবাদ :

ফুলবাড়ীতে কৃত্রিম জলাবদ্ধতায় ৫০০ বিঘা ফসলি জমি পানির নিচে

  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০২৪
  • ২০ বার পড়া হয়েছে

আমিনুল ইসলাম, ফুলবাড়ী প্রতিনিধিঃ

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে কৃত্রিম জলাবদ্ধতায় ৫০০ বিঘা ফসলি জমি, বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের নালা ও কালভার্টের মুখ ভরাট করে পাকা বাড়ি গড়ে তোলায় চলমান বৃষ্টিতে পানি বের হতে না পারায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে এলাকার ৩০০ কৃষকের বাড়িঘরে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি ও শাকসবজি, ও ফসল মরে গেছে। চলতি আমন মৌসুমে ফসল ফলানো নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন কৃষক।

উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের উত্তর বরভিটা গ্ৰামের জামে মসজিদ সংলগ্ন বানিয়ার দোলায় এ ঘটনা ঘটে। ওই গ্ৰামের মৃত.শওকত আলীর ছেলে মোজাম্মেল হক এ বাড়িটি স্থানীয়দের এড়িয়ে কৌশলে নির্মাণ করে নালা ও কালভার্ট দিয়ে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করেন। তিনি উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের অফিস সহায়ক। সমস্যা সমাধানে ভুক্তভোগীরা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি)চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে সমঝোতার চেষ্টা চালান। কিন্তু বাড়ির মালিকের অনমনীয়তায় সব ভেস্তে যায়। পরে তারা বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাহী ও কৃষি কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। এরই প্রেক্ষিতে ভিন্ন ভিন্ন তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়। সব তদন্তে ঘটনার সত্যতা মেলায় কর্মকর্তাদ্বয় সরেজমিন এলাকা পরিদর্শন করেন।এসময় তাঁরা স্থানীয়দের সাথে কথা বলে সমস্যা সমাধানে পরামর্শ ও সহযোগিতা কামনা করেন।

সরেজমিন উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের উত্তর বড়ভিটা জামে মসজিদ সংলগ্ন ওই এলাকায় সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ফুলবাড়ী-কাঁঠালবাড়ি পাকা সড়ক থেকে মসজিদ ঘেঁষে পশ্চিমে একটি কাঁচা রাস্তা বের হয়ে গেছে। এ রাস্তার উত্তরে জলাবদ্ধ এ দোলার অবস্থান। পানিতে টইটম্বুর। মসজিদ থেকে কয়েক গজ পরেই রাস্তার উত্তর দিকে দক্ষিণমুখী মোজাম্মেল হকের বাড়ি। পানি নিষ্কাশনের কালভার্টটির রাস্তার দক্ষিণ দিকের মুখ এখনো দৃশ্যমান রয়েছে। কিন্তু কালভার্টের উত্তর দিকের মুখ ও ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের পানি নিষ্কাশনের নালাটি মাটি ভরাট করে বাড়ির সীমানার সাথে যুক্ত করেছেন। ফলে দোলার পানি বের হতে পারছে না।অনবরত বৃষ্টিতে পানি বেড়েই চলছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়ছে ভোগান্তি। অনেকের বাড়ি ঘরে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগীরা জানায়, জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয়ে গেছে পটল, মরিচ, লাউ, বরবটি, ঢেঁরস খেত সহ আমনের বীজতলা।

স্থানীয় কৃষক আবু বক্কর (৫৮) বলেন, আমার বোধ হয়েছে থেকে দেখেছি এই এলাকার জমির পানি এই কনভার্ট দিয়ে নেমে যেত। বছর দেড়েক আগে ভূমি অফিসের পিয়ন মোজাম্মেল জমি কিনে এখানে বাড়ি নির্মাণ শুরু করে। আমরা এলাকাবাসীরা বহুবার কালভার্ট বন্ধ করতে নিষেধ করেছি। কিন্তু মোজাম্মেল আমাদের কারোরই কথা শুনেনি। এখন জলাবদ্ধতার কারণে তাকে অনুরোধ জানালে তিনি বলেন,আমি কালভার্টের মুখ খুলে দেবো না। কার কি করার আছে করেন। তাই আমরা বাধ্য ইউউএনও কে অভিযোগ দিয়েছি।

বেলাল হোসেন নামের এক কৃষক বলেন, এ দোলার মাঝে আমার তিন বিঘা জমি।এ জমিতে চাষাবাদ করে সংসার চলে। জমিতে আবাদ হয়না। জমি সারাবছর পানিতে তলিয়ে থাকে। আমরা এর একটা সমাধান চাই। এছাড়াও স্থানীয় জাহাঙ্গীর আলম, মিলন মিয়া, আমিনুল ইসলাম, মশিউর রহমান, আব্দুল জলিল ও নাজমুল ইসলাম বলেন, নালা ও কালভার্টের মুখ ভরাট করার কারণে আমাদের সবজির খেত, আমনের বীজতলা পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে। এখনই কালভার্টের মুখ খুলে দেওয়া না হলে আমন মৌসুমে এখানকার প্রায় পাঁচ থেকে সাতশো বিঘা জমি জলাবদ্ধতার কারণে অনাবাদি পড়ে থাকবে। আমরা অভিযোগ করেছি। আশা করি প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।

এ বিষয়ে মোজাম্মেল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি টাকা দিয়ে জমি কিনেছি।আমার টাকায় কেনা জমিতে আমি বাড়ি করেছি। চ*** কারো কিছু করার অধিকার নেই। বিকল্প পথ খোঁজেন। বিকল্প পথে পানি নামানোর ব্যবস্থা করলেই তো হয়।

উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদ(ইউপি)চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু বলেন, ইউএনও স্যার ওই এলাকার জলবদ্ধতা সমস্যার সমাধানের জন্য আমাকে সরজমিন পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন। সরজমিন পরিদর্শন করে সমস্যা সমাধানের জন্য স্যারের সাথে কথা বলবো।

অভিযোগ প্রাপ্তির তথ্য নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম জানান, এ বিষয়ে তিনি একটি লিখিত অভিযোগ পেয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে সরেজমিন ওই এলাকা পরিদর্শন করেন। পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বড়ভিটা ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্যসহ স্থানীয়দের সাথে পরামর্শ করে বিকল্প ব্যবস্থায় পানি নিষ্কাশনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো খবর


Kurigram Songbad © 2025. All Rights Reserved.
Built with care by Pixel Suggest
error: Content is protected !!