মোজাম্মেল হক হৃদয়, বিশেষ প্রতিবেদক:
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের সাথে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে আহত হয় অন্তত ৬ জন।
গতকাল চীন সফর শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে কোটা আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করলে এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের সাথে ইট পাটকেল ছোড়াছুড়ি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
গতকাল রবিবার (১৪ জুলাই) রাত ১১:৫০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের দুটি আবাসিক হল, ও বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সর্দার পাড়া, পার্ক মোড়, চকবাজার ও লালবাগ থেকে আবাসিক-অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা এবং কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সর্দারপাড়া থেকে বের করা মিছিলটি পার্ক মোড়, চকবাজার ঘুরে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিন করে ঢাকা-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে মিছিল করেন। পরে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি ও রাস্তা অবরোধ করেন।
মিছিলের একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দেখে ভুয়া,ভুয়া স্লোগান দিতে থাকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। প্রায় ৩ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী এ মিছিল ও জমায়েতে একত্রিত হয়। এ সময়ে ছাত্রলীগ হল থেকে রামদা,রডসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে অবস্থান নিলেও অনেকটা অসহায় ও নিরব ভূমিকা পালন করে।
পরে আজ (১৫জুলাই) রাত ১২ টা ২০ এর পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হল শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের তালা ভেঙ্গে তারাও আন্দোলনে যুক্ত হোন এবং মডার্ণ মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেয়। আধাঘন্টা অবস্থান ও রাস্তা অবরোধ করে পরে মেয়েদের হলে পৌঁছে দিয়ে আসার পথে ছাত্রলীগের মুখোমুখি হলে সেখানে ছাত্রলীগকে পুনরায় দুয়োধ্বনি দিতে থাকে আন্দোলনকারীরা। একপর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে ইট পাটকেল ও লাঠি ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটলে ২ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ৪ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ আহত হয় অন্তত ৬ জন।
আহত শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে ভর্তি করানোর লক্ষে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে এখনও পর্যন্ত আহত আন্দোলনকারীদের পরিচয় জানা যায়নি। তবে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর মধ্যে আহত হন বেরোবি শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাকিব আল হাসান,রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাসুদ রানা, ম্যানেজমেন্ট এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শাকিলসহ ৪ জন।
এ বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সমন্বয়ক আহসান হাবিব বলেন,আমরা শান্তিপূর্নভাবে পদযাত্রা শেষ করে মেয়েদের হলে দিয়ে আসি।আসার পথে ক্যাফের সামনে রাস্তায় ছাত্রলীগ তাদের উপর আঘাত করে।এতে তাদের একজনের মাথা ফেটে যায় এবং একজন গুরুতর আহত হন।
অন্যতম সমন্বয়ক সোহাগ জানায়,দেশের একজন প্রধানমন্ত্রী কিভাবে আমাদের সবাইকে রাজাকার বলতে পারেন।তিনি আমাদের প্রমাণ করে দেখাক আমরা রাজাকার।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে কথা বলতে গেলে সভাপতি পোমেল বড়ুয়া জানায়,আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন করতে বাধা দেইনি,আন্দোলনে হলের অনেক শিক্ষার্থী গিয়েছে তাদেরকে আমরা বাঁধা প্রদান করিনি।তবে এই আন্দোলনে কারমাইকেল কলেজসহ বহিরাগত অনেকে প্রবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রীছাউনি ভেঙে ফেলে এতে আমরা প্রতিহত করতে গেলে আমাদের কর্মীদের উপর আঘাত করে এবং ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে এতে ছাত্রলীগের কর্মীরা গুরুতর আহত হন।
তিনি আরও বলেন,বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর অবস্থানকালে কিভাবে হাজার হাজার বহিরাগতরা অবস্থান করে ও বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ভাংচুর করে।তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
Leave a Reply