অনলাইন ডেস্ক: গতরাতে ফ্রান্স বনাম পর্তুগালের খেলায় দুই দলকে ছাপিয়ে বরং রোনালদো বনাম এমবাপ্পের দ্বৈরথ নিয়েই ব্যাপক আগ্রহ ছিল ফুটবলমোদীদের। হয়তো রোনালদো, নয়তো এমবাপ্পে, একজনকে বিদায় নিতেই হতো। শেষ পর্যন্ত ইউরোর মঞ্চ থেকে বিদায় নিয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। জার্মানির হামবুর্গে ইউরো ২০২৪-এর কোয়ার্টার ফাইনালে গোলশূন্য ম্যাচে টাইব্রেকারে পেনাল্টি শুটআউটে পর্তুগালকে ৩-৫ ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে গেছে ফ্রান্স। জয়ের হাসি হেসেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে।
খেলায় নির্ধারিত ৯০ মিনিটে হলো না কোনো গোল। তারপর খেলা গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। ১২০ মিনিটেও কোনো ফল না আসায় ট্রাইবেকারে গড়ায় ম্যাচ। তাতে পর্তুগালকে হারিয়ে ইউরো কাপের সেমিফাইনালে উঠলো ফ্রান্স। এদিকে ভক্তরা মনে করছেন, এটিই ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ক্যারিয়ারের শেষ ইউরো কাপ।
আগামী মঙ্গলবার মিউনিখে প্রথম সেমিফাইনালে স্পেনের মুখোমুখি হবে ফ্রান্স। এছাড়া আজ দিনের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানিকে ২-১ গোলে হারায় স্পেন। তারাও খেলবে সেমিফাইনাল।
এবার শেষ আটে ফ্রান্স বা পর্তুগাল কারোরই উঠে আসা মসৃণ ছিল না। গ্রুপ পর্বে মাত্র এক ম্যাচ জেতা ফ্রান্স শেষ ষোলোয় বেলজিয়ামকে হারিয়েছিল ১-০ গোলে। আর পর্তুগাল শেষ ষোলোয় স্লোভেনিয়াকে হারাতে অপেক্ষা করতে হয়েছে টাইব্রেকার পর্যন্ত।
আজকের ম্যাচে প্রথমার্ধে এগিয়ে ছিল পর্তুগাল। যদিও গোলের বেশ কিছু সম্ভাবনা তৈরি করেও আক্রমণ করতে পারেননি রোনালদো, ব্রুনো ফার্নান্দেজ, বের্নার্দো সিলভারা। অন্যদিকে প্রথমার্ধে প্রতিপক্ষের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারেননি কিলিয়ান এমবাপ্পে, রান্দাল কোলো মুয়ানি, আঁতোয়ান গ্রিজমানরাও। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও একই পরিস্থিতি ছিল।
ম্যাচের ৬০ মিনিটের পর দুটি দারুণ সুযোগ তৈরি করে পর্তুগাল। ৬২ মিনিটে জোয়াও কানসেলোর দারুণভাবে বাড়ানো বল ধরে ব্রুনো ফার্নান্দেজ পেনাল্টি বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শট নেন। তবে একটু আগেভাগে নেওয়া শটটি ডান দিকে ঝাঁপিয়ে প্রতিহত করেন ফ্রান্স গোলকিপার মাইক মেইগনান। দুই মিনিট বাদে ভিতিনহার সোজাসুজি নেওয়া শটও প্রতিহত হয় তাঁর হাতে। ফিরতি বল রোনালদো পান পোস্টের এক পাশে, পায়ের টোকায় জালে পাঠাতে চাইলেও মরীয়া মেইগনানের গায়ে লেগে আবার বাধাপ্রাপ্ত হয়।
পর্তুগালের পর গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে ফ্রান্সও। ৬৬ মিনিটে কোলো মুয়ানি অনেকটাই একা পেয়ে যান কস্তাকে, কিন্তু মাঝে রুবেন দিয়াজে আটকে যান তিনি। বল যায় পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে। এর পাঁচ মিনিট পর এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার সামনেও বাধা ছিল শুধু পর্তুগাল গোলকিপার। কিন্তু তাড়াহুড়ায় শট নিয়ে তিনিও বল পাঠান বাইরে দিয়ে।
দশ মিনিটের মধ্যে দুই দলের চারটি সুযোগ নষ্টের মাধ্যমে খেলা বেশ জমে ওঠে। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে আবারও ফিরে আসে ‘আগে রক্ষণ’ সামালের মন্ত্র। নিধারিত নব্বই মিনিটে গোলশূন্যই থাকে ম্যাচ।
এরপর অতিরিক্ত সময়ের খেলায় তৃতীয় মিনিটেই ভালো সুযোগ আসে রোনালদোর সামনে। কাইসেদোর বাড়ানো বল আট গজ দূরে পেয়ে প্রথম স্পশেই জালে পাঠানোর চেষ্টা করেন তিনি। তবে বল উঁচু হয়ে চলে যায় পেছনের গ্যালারিতে। বাকি পুরোটা সময়ও দুই দলের কেউ গোল করতে পারেননি। সবশেষে ম্যাচ পেনাল্টিতে গড়ায়। এ নিয়ে ইউরোর নকআউটে মুখোমুখি হওয়া ফ্রান্স-পর্তুগালের চারটি ম্যাচই গড়িয়েছে অতিরিক্ত সময়ে।
Leave a Reply