কুড়িগ্রামে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পুড়ে ছাই হয়েছে ৯ টি পরিবারের প্রায় ১৮ টি ঘর। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সব হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। নিঃস্ব এ পরিবার গুলোর মাঝে বিরাজ করছে চরম হতাশা আর দুশ্চিন্তা।
জানা গেছে, গতকাল ২৮শে জুন রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুড়িগ্রামে শহরের ডায়াবেটিক হাসপাতাল মোড় এলাকায় অবস্থিত একটি কসমেটিকস গোডাউনে আগুন লাগে। মুহূর্তেই পুরো এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ভয়াবহ আগুনে পুড়ে যায় ৯ টি বাড়ির প্রায় ১৮ টি ঘর। এছাড়াও ঘরে থাকা টিভি, ফ্রিজ, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, আসবাবপত্র, নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ একজন এইচএসসি পরীক্ষার্থীর বইপত্র ও প্রবেশপত্র পুড়ে যায়। সংবাদ পেয়ে কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট এসে তিন ঘন্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে কথা বলে জানা যায়,কসমেটিকস গোডাউন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। সে আগুন মুহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে সুবেল, ফাতেমা,কামাল, বদিয়ত, বিলাতু, কহিনুর সহ আরো কিছু পরিবারের বাড়ি পুড়ে যায়।
ভাড়াটিয়া সুমির চক্রবর্তী বলেন, ‘রাত সাড়ে ১১টায় পানির মটর পাম্প থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় এবং মহুর্তেই আগুন ছড়িয়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। আমি ছয়টি কেম্পানির ডিলারশীপ নিয়েছিলাম। যেখানে প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালামাল ছিল যা সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। কোনো কিছুই বের করতে পারিনি।আমি এখন নিঃস্ব,অসহায়।
প্রতিবেশি জিল্লুর রহমান বলেন, বাইরের চিল্লাপাল্লা শুনে আমার ঘুম ভেঙে যায়। উঠে দেখি দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। চোখের সামনে সব পুড়ে গেলেও আল্লাহর অনুগ্রহে আমার পরিবার অক্ষত অবস্থায় রয়েছে।
কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বলেন, বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট প্রায় তিন ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এতে ৯টি পরিবারের ১৮ টি বাড়িঘর পুড়ে গেছে। আমরা এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কাজ করছি।’
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকুল ইসলাম হালিম,আমি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি এবং পরিবার গুলোর সাথে কথা বলেছি।সেখানে ৯টি পরিবারের ১৮ টি ঘর পুড়ে গেছে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া একজন এইচএসসি পরীক্ষার্থীর বই, পোষাক এবং পুড়ে যাওয়া পরীক্ষার প্রবেশপত্রের ব্যবস্থা করেছি।’
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ সাইদুল আরীফ কুড়িগ্রাম সংবাদকে বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করেছি এবং ঢেউটিন, নগদ টাকাসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এছাড়া এমপিকে মহদয়কে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। তিনি প্রয়োজনীয় সহায়তা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
Leave a Reply