ভাস্কর চন্দ্র রায়, পাবিপ্রবি প্রতিনিধি:
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় নকলসহ ধরা পড়া দুই ছাত্রীকে বহিষ্কার করা হলেও সম্প্রতি প্রকাশিত ফলে তাদের ওই বিষয়ে কৃতকার্য দেখানো হয়েছে। এ ঘটনায় বিভাগে নানা সমালোচনা শুরু হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ২য় বর্ষ ২য় সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত এপ্রিল মাসে। ওই পরীক্ষার জিই–২২০৯ কোর্সে জয়ন্ত রাণী বিশ্বাস ও মুসফিকা বিনতে হাকিম নামে দুই ছাত্রী নকলসহ ধরা পড়েন। পরবর্তীতে ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের (ডি.বি. বোর্ড) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের পুরো সেমিস্টারের পরীক্ষায় বহিষ্কার করে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের (২০২২–২৩) সঙ্গে ক্লাস করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
নির্দেশনা অনুযায়ী তারা পরবর্তী ব্যাচের সঙ্গে ক্লাসও শুরু করেন। তবে ৮ অক্টোবর প্রকাশিত ২০২১–২২ শিক্ষাবর্ষের ২য় বর্ষ ২য় সেমিস্টারের ফলাফলে দেখা যায়, ওই দুই ছাত্রী সব কোর্সেই কৃতকার্য হয়েছেন। যেখানে জিই–২২০৯ কোর্সে জয়ন্ত রাণী বিশ্বাস ‘বি+’ এবং মুসফিকা বিনতে হাকিম ‘এ’ গ্রেড পেয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো শিক্ষার্থী নকলসহ ধরা পড়লে তার খাতা ও সংশ্লিষ্ট প্রমাণাদি বিভাগ থেকে ওই দিনই পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে জমা দিতে হয়। সেই খাতাগুলো পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরেই সংরক্ষিত থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুই ছাত্রীর খাতা পরীক্ষার দিনই পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে পাঠানো হয়েছিল এবং সেগুলো এখনো সেখানে সংরক্ষিত রয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, খাতা যদি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরেই থাকে, তবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক কীভাবে খাতা মূল্যায়ন করেছেন? আর ফলাফলে কীভাবে ওই দুই ছাত্রী পাস করলেন?
জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কোর্সের শিক্ষক খন্দকার আরিফুজ্জামান বলেন, “আমি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে দুই ছাত্রীকে অকৃতকার্য দেখিয়েই ফলাফল পাঠিয়েছি। এরপর কীভাবে পরিবর্তন হয়েছে, সেটা জানি না। রেজাল্টের চূড়ান্ত ভেরিফিকেশনের সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভ্রমণে থাকার কারণে সেটা দেখতে পারিনি।”
তবে এ ঘটনাকে বিভাগের শিক্ষকদের ত্রুটি হিসেবে স্বীকার করেছেন পরীক্ষা কমিটি ও বিভাগটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেন, “আমরা যেসব শিক্ষক ফল তৈরির দায়িত্বে ছিলাম, তাদেরই ভুল হয়েছে। আমাদের ব্যস্ততার কারণে এ ভুলটি হয়েছে। তবে এ ভুলটি আমাদের চোখে পড়ার পর ফলাফল স্থগিত করেছি। আমরা দুই ছাত্রীকে অকৃতকার্য দেখিয়ে নতুন ফল প্রকাশ করব।”
Leave a Reply