কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের পাটেশ্বরী বাজারে মাদক না পেয়ে মোটরসাইকেল আরোহীর টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী জনতার হাতে আটক হন। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের হস্তক্ষেপে তারা মুক্তি পান এবং প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে এলাকা ত্যাগ করেন। ঘটনাটি ঘটে গত রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি পিকআপ ভ্যান মোটরসাইকেল আরোহী আনিছুর রহমানকে ধাক্কা দিয়ে থামায়। তিনি মাটিতে পড়ে গেলে স্থানীয়রা এগিয়ে আসেন। এসময় অধিদপ্তরের সিপাহী সোহেল জনসম্মুখে তল্লাশি চালান। কিন্তু মাদকজাতীয় কিছু না পেয়ে আনিছুর রহমানের পকেটে থাকা প্রায় ৪০–৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন এবং জোরপূর্বক তাকে গাড়িতে তুলতে চান। এতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাদের ঘিরে ধরে এবং গাড়িসহ আটক করে।
স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল জানান, “আনিছুর রহমান চিকিৎসার জন্য টাকা সঙ্গে রেখেছিলেন। সেই টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়।” বাজারের ব্যবসায়ী জাহিদুল বলেন, “মাদক না পেয়েও তাকে জোর করে গাড়িতে তোলা হয়েছে, এটি প্রশাসনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা।”
খবর পেয়ে সাব-ইন্সপেক্টর আজহারুল ইসলাম, জান্নাতুল ফেরদৌস, সিপাহী ইমরান ও জয় ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এসময় উত্তেজিত জনতার সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয় এবং ভিডিও ধারণকারী এক ব্যক্তির মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাইদুর রহমান ও ইউপি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। চেয়ারম্যান বলেন, “অভিযানকারী কর্মকর্তাদের আটক রাখার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে তাদের উদ্ধার করেছি।”
এ বিষয়ে সাব-ইন্সপেক্টর আজহারুল ইসলাম দাবি করেন, “নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে মাদক থাকার সন্দেহে যুবকটিকে আটক করা হয়েছিল। তবে তাঁর কাছে কিছু না থাকায় ভুল বোঝাবুঝির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।”
এদিকে কুড়িগ্রাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাব-ইন্সপেক্টর জান্নাতুল ফেরদৌস সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান। আর ইন্সপেক্টর আবু সাইদ মোঃ নুরুন্নবী বলেন, “ঘটনার দিনে আমি কুড়িগ্রামের বাইরে অফিসিয়াল কাজে ছিলাম, এ বিষয়ে আমি অবগত নই।”
Leave a Reply