আল জাজিরা
ইরানের সঙ্গে চলমান সংঘর্ষে যুক্তরাষ্ট্রকে টেনে আনা এবং ইরানে সরকার পরিবর্তন ইসরায়েলের অন্যতম লক্ষ্য বলে মনে করেন অস্ট্রেলিয়ার আলফ্রেড ডিকিন ইনস্টিটিউটের মিডল ইস্ট স্টাডিজ ফোরামের পরিচালক শাহরাম আকবরজাদেহ।
এছাড়া ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা কেবল শুরু এবং এই সংঘর্ষ আরও ‘দীর্ঘস্থায়ী ও বিস্তৃত’ হতে পারে বলেও মনে করেন তিনি। ‘আরও অনেক হামলা হবে’ এবং ইসরায়েল ও ইরান ‘দীর্ঘমেয়াদি’ সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে বলেও তিনি মত দেন।
এই বিশ্লেষক আল জাজিরাকে বলেন, এই যুদ্ধ গোটা মধ্যপ্রাচ্য ‘অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ার সব রকমের সম্ভাবনা রয়েছে’।
আকবরজাদেহ আরও বলেন, ‘ইসরায়েল প্রকৃতপক্ষে এই ডায়নামিকের ওপর নির্ভর করছে—সংঘর্ষ শুরু হলে ইসরায়েলকে নিরাপত্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ও বাধ্যবাধকতা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। ফলে যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘর্ষে টেনে আনা যাবে।’
তিনি আরও ইঙ্গিত দেন, ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি কৌশল হতে পারে ইরানের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করে শাসন পরিবর্তনের লক্ষ্যে অগ্রসর হওয়া।
আকবরজাদেহকে প্রশ্ন করা হয়, ইরান পাল্টা জবাব দিয়েছে, দেশটি হিসাবনিকাশ করে এই প্রতিক্রিয়া দিয়েছে কি না।
উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এর উত্তর হচ্ছে—হ্যাঁ; ইসরায়েল ও ইরান উভয়ই দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আরও আক্রমণ হবে। এই মুহূর্তে ইরান মূলত “ইটের বদলে পাটকেল” ধরনের পাল্টা আঘাত করেছে, ইসরায়েল কীভাবে জবাব দেয় দেখার জন্য। তবে এটা অত্যন্ত স্পষ্ট যে, ইরান তাদের সামরিক কমান্ডার, বিজ্ঞানী, সামরিক স্থাপনা ও পারমাণবিক কেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলা বরদাশত করবে না। তাই ইরানও প্রতিক্রিয়া জানাবে—এবং তা গোটা অঞ্চললের জন্য এক বিপজ্জনক মোড়। কারণ অনেক পর্যবেক্ষক ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছেন, এই সংঘাত গোটা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রকেও টেনে আনতে পারে।’
আকবরজাদেহ আরও বলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ‘এই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রকে টেনে আনার চেষ্টা করছেন’, যা শেষপর্যন্ত ‘ইরানে সরকার পরিবর্তনের’ মতো রাজনৈতিক ফলাফল এনে দিতে পারবে।
তিনি বলেন, ইরানের জনগণের মধ্যে ‘অসন্তোষ ও সরকারবিরোধী হতাশা’ জমে আছে। সরকারের বিরুদ্ধে তারা বিক্ষোভও করেছে। ইসরায়েল দুদেশের মধ্যকার চলমান উত্তেজনা ‘উসকে দিয়ে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে, যাতে ইরানের সাধারণ জনগণের মধ্যে আবারও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং সরকারের বিরুদ্ধে গণ-অসন্তোষ তৈরি হয়’।
Leave a Reply