কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের রৌমারী ও চররাজিবপুর উপজেলায় বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজ জনজীবনে চরম ভোগান্তি সৃষ্টি করেছে। প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। বাকি সময়টুকুতে বিদ্যুৎ এলেও তা থাকে লো-ভোল্টেজে। ফলে বৈদ্যুতিক ফ্যান, এসি, ফ্রিজসহ নানা যন্ত্রপাতি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
এ অবস্থায় প্রচণ্ড গরমে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। ফ্রিজে রাখা খাদ্যপণ্য নষ্ট হচ্ছে, শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় ব্যাঘাতের মুখে পড়ছে এবং অনলাইনে কাজ করা সাংবাদিকদের সংবাদ প্রেরণও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। খামারিরাও মারাত্মক ক্ষতির মুখে। বিদ্যুৎ না থাকায় ব্রয়লার খামারে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না, ফলে মুরগি অসুস্থ হয়ে মারা যাচ্ছে। এতে ব্যবসায়িক ক্ষতির পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়েছে।
সরকারি অফিস ও চিকিৎসা সেবাতেও এর প্রভাব পড়েছে। হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে রোগীর চাপ বাড়লেও লোডশেডিংয়ের কারণে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতিবেশী জেলা শেরপুর ও জামালপুরে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ভালো থাকলেও ব্রহ্মপুত্র বিধৌত দুর্গম রৌমারী ও চররাজিবপুরে বছরের পর বছর বিদ্যুৎ সংকট লেগেই আছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, রৌমারী ও চররাজিবপুরে প্রায় ৮০ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ চাহিদা ২২ মেগাওয়াট হলেও সরবরাহ হচ্ছে মাত্র ১২ থেকে ১৪ মেগাওয়াট। শেরপুর থেকে সরবরাহকৃত বিদ্যুৎ ৩৩ কেভি হওয়ার কথা থাকলেও তা নিচে নেমে যাওয়ায় ভোল্টেজ কমে যায় এবং লোডশেডিং বাড়ে।
এদিকে এ পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ বিদ্যুৎ বিভাগকে দায়ী করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে। স্থানীয়দের মতে, সীমান্তবর্তী এসব অঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে হলে ভোল্টেজ স্থিতিশীল রাখা, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধি এবং আলাদা গ্রিড লাইনের ব্যবস্থা করতে হবে।
Leave a Reply