সাহিত্য পাতা:
“যে লিখে, সে হারায় না” — এ বিশ্বাসেই এগিয়ে চলেছেন রাজিবপুরের তরুণ লেখক আমিমুল এহসান।
কুড়িগ্রাম জেলার প্রত্যন্ত উপজেলা রাজিবপুর, যেখানে নদী আর প্রকৃতির পাশে গড়ে উঠেছে এক সাহিত্যমনস্ক তরুণ — কবি আমিমুল এহসান। ১৯৯৭ সালে শংকর মাধবপুর গ্রামে জন্ম নেওয়া এই প্রতিভাবান কবি তাঁর সাহিত্যের মাধ্যমে তুলে ধরছেন সমাজের বাস্তবতা, সম্পর্কের জটিলতা এবং মানবিক আবেগের গভীর অনুরণন।
প্রথম লেখার গল্প
তার সাহিত্যের যাত্রা শুরু হয় “বন্ধুত্ব” নামক একটি ছোটগল্প দিয়ে। সেই লেখা ছিল কিশোর বয়সের, তবে সেই মুহূর্তেই ভেতরে জেগে ওঠে একজন সত্যিকারের লেখকের আকুতি। সেই থেকে শুরু, থেমে থাকেননি তিনি।
সাহিত্যকর্মের পরিধি
আজ পর্যন্ত তিনি লিখেছেন ১০০ টিরও বেশি উপন্যাস ও উপন্যাসরূপী গল্প।এবং ৫০০-এর অধিক ছোটগল্প। তাঁর গল্পগুলোর মধ্যে দেখা যায় আত্মজিজ্ঞাসা, সমাজের অসাম্য, প্রেম, বিচ্ছেদ আর মানুষকে বুঝে ওঠার চেষ্টার রূপরেখা।
কবিতা রচনার সংখ্যায় তুলনামূলকভাবে কম হলেও, তাঁর একটি বিশেষ কবিতা “প্রতিচ্ছবি” পাঠকের হৃদয়ে স্থায়ী ছাপ ফেলেছে। গভীর ভাবনা, দৃশ্যগত উপমা এবং আত্মপ্রতিকৃতি নিয়ে রচিত এই কবিতাটি তাঁর পরিচয়ের অনন্য প্রতীক।
ডিজিটাল স্বপ্ন
যেখানে বেশিরভাগ লেখক আজও কাগজে লেখাকে প্রাধান্য দেন, সেখানে আমিমুল এহসানের দৃষ্টিভঙ্গি একদম আলাদা। তাঁর ভিশন একটিই — “পেপারলেস লিটারেচার”। তিনি বিশ্বাস করেন, আগামী সাহিত্য হবে ডিজিটাল, অনলাইন-নির্ভর এবং তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর। সেই লক্ষ্যে তিনি চালু করেছেন নিজস্ব ওয়েবসাইট: [পথের প্যাচাল] (Pother Pacal)],potherpachal.com
যেখানে তিনি নিয়মিত নিজের লেখা প্রকাশ করেন।
সংগ্রাম ও প্রত্যাখ্যান
লেখালেখির জগতে পা রাখলেও, তিনি এখনো কোনো বই প্রকাশ করতে পারেননি। তাঁর রচনাগুলো একাধিকবার প্রকাশকদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে অর্থনৈতিক সংকট, এবং পারিবারিক চাপ — তাঁকে বলা হয় BCS পরীক্ষায় অংশ নিতে বা শিক্ষকতার দিকে মনোযোগ দিতে। তবে তিনি জানেন, লেখাই তাঁর পরিচয়। তাই সমস্ত প্রতিকূলতা পেছনে ফেলে, লেখার জগতেই নিজেকে আবিষ্কার করছেন।
প্রেরণা ও আদর্শ
তাঁর লেখার পেছনে প্রেরণার উৎস হিসেবে তিনি যাঁদের নাম করেন, তাঁদের তালিকায় আছেন তিনটি ভিন্ন ধারার ব্যক্তিত্ব:
• বারাক ওবামা
• হুমায়ূন আহমেদ — সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় —
কবি আমিমুল এহসান শুধুমাত্র রাজিবপুরের নয়, পুরো বাংলাদেশের সাহিত্যজগতের জন্য এক উজ্জ্বল সম্ভাবনা। তাঁর লেখায় বাস্তবতা আছে, আবেগ আছে, প্রযুক্তি ও ভবিষ্যতের প্রতি দায়বদ্ধতাও আছে। তিনি প্রমাণ করছেন—কাগজ ছাড়াও সাহিত্য বাঁচে, ছড়িয়ে পড়ে, অনুপ্রেরণা দেয়।
Leave a Reply