রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলায় শ্লীলতাহানি, নারী ও শিশু নির্যাতন, অবৈধ আটক এবং মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টার অভিযোগে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার ভিত্তিতে মেহেদী হাসান নামে একজনকে বটতলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকালে রাজিবপুর থানায় মামলাটি করেন ভুক্তভোগীর পিতা আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। গ্রেপ্তারকৃত মেহেদী হাসান সদর ইউনিয়নের মরিচাকান্দী এলাকার মিষ্টার আলীর ছেলে।
মামলার বাদী অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, “আমার মেয়ে, মেয়ের জামাই, মেয়ের ননদ ও দেবর আমাদের বাড়িতে দাওয়াত খেয়ে সন্ধ্যার পর মেয়ের শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়। বটতলা এলাকায় পৌঁছালে মেহেদী হাসান, নিশাত, আশা এবং আরও কয়েকজন যুবক তাদের অনুসরণ করতে থাকে। পরে মরিচাকান্দী এলাকায় একটি ব্রিজের ওপর তাদের বহনকারী ইজিবাইকটি গতিরোধ করে তারা। তখন মেহেদী হাসান আমার নাম ধরে চিৎকার করে বলে, ‘বিশ্বাসের মেয়েকে পালিয়ে নিয়ে যাচ্ছ কোথায়!’ তখন আমার মেয়ের জামাই শিহাব পাল্টা জবাব দিয়ে বলেন, ‘আমি আমার স্ত্রীকে পালিয়ে নিয়ে যাব কেন! প্রয়োজনে আমার শ্বশুরকে ফোন দিয়ে নিশ্চিত হন।’
এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে মেহেদী হাসান রঞ্জু নামের একজনকে কল দিয়ে আরও কয়েকজনকে ঘটনাস্থলে আসতে বলেন। তখন আমি জানতে চাই, কাকে ডাকছে? উত্তরে মেহেদী বলেন, ‘আমার বড় ভাই, সমন্বয়ক, সে আসছে।’ এরপর আমার মেয়ের জামাই ও তার চাচাতো ভাইদের সঙ্গে মেহেদী হাসান ও তার সহযোগীদের হাতাহাতি শুরু হয়। একপর্যায়ে আমাদের আত্মীয়দের বহনকারী আরেকটি ইজিবাইক সেখানে পৌঁছালে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। পালানোর সময় তারা একটি স্মার্টফোন ফেলে রেখে যায়।
এ ঘটনায় আমি চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেছি।”
আরেক ভুক্তভোগী শিহাব বলেন, “আমি, আমার স্ত্রী, আমার চাচাতো ভাই-বোনসহ শ্বশুরবাড়ি থেকে ঈদের দিন সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরছিলাম। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বটতলা এলাকায় মোটরসাইকেলযোগে কয়েকজন যুবক আমাদের ইজিবাইক অনুসরণ করে। পরে মরিচাকান্দী এলাকায় ব্রিজের ওপর গতিরোধ করে উল্টাপাল্টা কথা বলতে থাকে। নিজেদের ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় দিয়ে আমার স্ত্রী ও চাচাতো বোনের শ্লীলতাহানি করে এবং আমাদের কাছ থেকে মুক্তিপণ দাবি করে। একপর্যায়ে আমাদের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। পরে আমাদের আরও একটি ইজিবাইক আসলে তারা পালিয়ে যায়।”
রাজিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত ‘ওসি’ আতিক হাসান বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলায় নাম উল্লেখ থাকা আসামি মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তার করে কুড়িগ্রাম আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
Leave a Reply