রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: রাজিবপুর উপজেলায় বিভক্ত সাংবাদিক সমাজ একীভূত হওয়ার লক্ষ্যে একধাপ এগিয়েছে। আজ (১২ মার্চ) উপজেলার চারটি প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা রাজিবপুর মিনি স্টেডিয়ামের খোলা মাঠে এক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে মিলিত হন। দীর্ঘদিনের বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়াসেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।
রাজিবপুর উপজেলায় বর্তমানে রাজিবপুর প্রেসক্লাব, রাজিবপুর উপজেলা প্রেসক্লাব, রাজিবপুর মডেল প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ও চর রাজিবপুর প্রেসক্লাব নামে পাঁচটি পৃথক সংগঠন থাকলেও, কোনোটিরই নিজস্ব কার্যালয় নেই। একীভূত হয়ে একটি প্রেসক্লাব গঠনের শর্তে প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরে জায়গা বরাদ্দের বিষয়টি স্থগিত রেখেছে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাংবাদিকদের ২০ মার্চের মধ্যে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে একটি অভিন্ন প্রেসক্লাব গঠনের আহ্বান জানান। তিনি আশ্বাস দেন, যদি সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি প্রেসক্লাব গঠন করতে পারেন, তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হবে।
আজকের মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকরা নিজেদের মধ্যে দীর্ঘদিনের মতানৈক্য দূর করার বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন। সভায় রাজিবপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সহিজল ইসলাম বলেন, “রাজিবপুর উপজেলার সাংবাদিকরা যদি একীভূত হয়ে কাজ করে, তাহলে আমাদের পেশাগত শক্তি আরও বৃদ্ধি পাবে। তাই আমরা সবাই মিলে একটি অভিন্ন প্রেসক্লাব গঠনের জন্য প্রস্তুত। প্রশাসনের সহযোগিতায় আমাদের জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ হলে আমরা সেখানে বসে আরও সুসংগঠিতভাবে কাজ করতে পারবো।”
এসময় অন্যান্য সাংবাদিকরাও একীভূত প্রেসক্লাব গঠনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং মতামত দেন।
আলোচনা ও ইফতার মাহফিলে মধ্যস্থতার দায়িত্ব পালন করেন রাজিবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরন মোহাম্মদ ইলিয়াস। তিনি সাংবাদিকদের প্রতি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ। কিন্তু রাজিবপুরে এতদিন চারটি আলাদা প্রেসক্লাব থাকায় সাংবাদিক সমাজ এককভাবে শক্তিশালী হতে পারেনি। এখন সময় এসেছে সব বিভেদ ভুলে এক ছাদের নিচে আসার। আমি আশাবাদী, আপনারা ঐক্যবদ্ধ হলে প্রশাসনও আপনাদের পাশে দাঁড়াবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি চাই, সাংবাদিকদের একটি শক্তিশালী সংগঠন থাকুক, যেখানে সবাই একসঙ্গে বসে কাজ করতে পারবে। এতে শুধু সাংবাদিকরাই নয়, পুরো রাজিবপুরের উপকার হবে।”
উপজেলার সাংবাদিকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিভেদ মুছে ফেলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি শক্তিশালী প্রেসক্লাব গঠনের জন্য যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা রাজিবপুরের গণমাধ্যমের ভবিষ্যৎকে আরও সুসংহত ও কার্যকর করবে। প্রশাসনের সহযোগিতা এবং সাংবাদিকদের সমন্বিত প্রচেষ্টা এই লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ২০ মার্চের মধ্যে কোন্দলমুক্ত প্রেসক্লাব গঠনের পরবর্তী পদক্ষেপ সাংবাদিক সমাজের ঐক্যের এক নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।
Leave a Reply