শামীমা রহমান,ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) রেজিস্ট্রারসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের অপসারণ করে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সোমবার (০৩ মার্চ) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে এই বিক্ষোভ করেন তারা।
এসময় শিক্ষার্থীরা— ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এ ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘ধর ধর দালাল ধর, ধইরা ধইরা সাইজ কর’, ‘আবু সাইদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘আমাদের সংগ্রাম, চলছে চলবে’— ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান, তানভির মাহমুদ মণ্ডল, গোলাম রাব্বানী, সাজ্জাতুল্লাহ শেখ, ইসমাইল হোসেন রাহাত, সায়েম আহমেদসহ সমন্বয়ক পরিষদের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফসল। এখানে কোনো প্রকার আওয়ামীপন্থী বা অন্যদলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো সিদ্ধান্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্পিরিটের সঙ্গে সমঞ্জস্যপূর্ণ রেখে নিতে হবে। কোনো নির্দিষ্ট দল বা এজেন্ডাকে প্রাধান্য দেওয়া যাবে না। আমরা (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন) যেমন চাইবো, তেমনই ব্যক্তিদেরই গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিতে হবে।”
তারা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সময়ে শিক্ষকদের মধ্য থেকে রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে— এবারও সম্ভব হলে শিক্ষকদের মধ্য থেকে যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ফ্যাসিবাদের দোসর ছিল, তারা বহাল তবিয়তে আছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের আশ্বস্ত করেছে যে যত দ্রুত সম্ভব তাদের অপসারণ করবে। আমরা বলেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। কোনো বিশেষ গোষ্ঠী বা পরিচয় যেন এখানে স্থান না পায়। প্রশাসন আমাদের আশ্বস্ত করেছে যে— তারা মেধা ও যোগ্যতাকে মূল্যায়ন করবে।”
এছাড়া অতীতে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতি করেছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে বলে দাবি জানান তিনি।
সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রতিটি পদক্ষেপে সহযোগিতা করে আসছে। এখনো প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে আওয়ামী দোসররা বসে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পদ এখনো ফ্যাসিস্টের দখলে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা বিভিন্ন সময় ছাত্রবিরোধী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ছিল এবং আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে— তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।”
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দাবির দিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখব। তাদের দাবি যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ও বিধিসম্মত হয়— তাহলে তা বিবেচনা করা হবে।”
Leave a Reply