1. editor1@kurigramsongbad.com : কুড়িগ্রাম সংবাদ :
  2. sifat@kurigramsongbad.com : sifat :
  3. siteaccess@pixelsuggest.com : কুড়িগ্রাম সংবাদ :
সাম্প্রতিক :
রাজিবপুরে জামায়াতের অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার রাজারহাটে চরের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা কুড়িগ্রামে বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত চাকিরপশার নদী দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু রাজিবপুরে কৃষকের ৮ বিঘা জমির গম কেটে নেওয়ার অভিযোগ হে বৈশাখ, বিপুল চন্দ্র রায় ইবি সিইরসি’র উদ্যোগে অসহায় শিশুদের ঈদ উপহার বিতরণ রৌমারীতে ১১০ পিস ইয়াবাসহ কারবারি আটক রাজারহাটে কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ধর্ষণের শিকার কিশোরী,উদ্ধারে সেনাবাহিনী   রাজিবপুরে সাংবাদিক ঐক্যের পথ সুগম হচ্ছে

শখ পূরণের জন্য ৫ বিঘা জমি বিক্রি করে কিনে ছিলেন রেডিও

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৩১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

“শখের তোলা আশি টাকা”
প্রবাদটির বাস্তব উদাহরণ ছিলেন সিরাজগঞ্জের সলঙ্গার দেলোয়ার হোসেন মিঞা। তার শখ পূরণের গল্প যেমন ব্যতিক্রমী, তেমনি মর্মস্পর্শী।

ঘটনাটি ১৯৬৫ সালের সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা থানার রহিমাবাদ গ্রামের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন মিঞা। যিনি ৫ বিঘা জমি বিক্রি করে একটি রেডিও কিনে ছিলেন, আর ব্যাটারি কেনার জন্য বিক্রি করেছিলেন আরও ১ বিঘা জমি! শখ পূরণের জন্য মানুষ কতকিছুই না করে, কিন্তু এমন ঘটনা ইতিহাসে বিরল। এর জন্য অবশ্য পরবর্তীতে দেলোয়ার মিঞাকে অনেক কষ্টও করতে হয়েছে। অভাবের তাড়নায় ৭ বছরের মাথায় আবার শখের সেই রেডিও বিক্রিও করেছেন তিনি। তার আগে বিক্রি করছেন নিজের বসতবাড়ি।
তাঁর ছেলে আলতাফ হোসেন বাবার স্মৃতি হিসেবে ৫০ বছর পরে ২০২২ সালে সেই রেডিও আবার বাড়িতে ফিরিয়ে এনেছেন।
অর্ধশতাব্দীর বেশি পুরোনো রেডিও দেখতে এখন অনেকে ভিড় করছেন আলতাফ হোসেনের বাড়িতে। কিন্তু তিনি রেডিও বাজাতে পারছিলেন না। রেডিওটি চালু করতে একসঙ্গে আটটা ব্যাটারি লাগে। এর দাম প্রায় ৪০০ টাকা। কিন্তু ওই টাকা খরচের সামর্থ্যও নেই আলতাফের। কারণ, শখের মূল্য দিতে গিয়ে বাবা তাঁদের নিঃস্ব করে গেছেন। রেডিওটার গায়ে লেখা আছে নিপ্পন ইলেকট্রনিক কোম্পানি লিমিটেড, জাপান।
বাবার সেই কাহিনি বলতে গিয়ে চোখ ভিজে উঠে আলতাফের। তাঁর বয়স এখন প্রায় সত্তর বছর। শুনেছি, তিনি মানুষের বাড়িতে রাখালের কাজ করেন।

আলতাফ হোসেন বলেন, বাবার শখের শেষ ছিল না। এলাকার মানুষ যা চাইতেন, বাবা তাই দিতেন। সবাইকে খুশি করতে গিয়ে একসময় পৈতৃক ২৬ বিঘা জমি শেষ হয়ে গেল। ১৯৭২ সালে রেডিওটাও ১৮০ টাকায় বিক্রি করে দিলেন। আলতাফ বললেন, ‘তখন আমি চিক্কর দিয়া উঠলাম। কইলাম বাবা, জমিও গেল, রেডিও গেল! বাবা আমাকে শান্ত্বনা দিয়ে কইলেন, আবার কিনে দিবো।’

রেডিও বিক্রির আগে আলতাফ হোসেনের বাবা ১৯৬৯ সালে নিজের বাড়িও বিক্রি করেন। ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি তিনি মারা যান। কয়েকবছর আগে শুনেছিলাম, আলতাফ পাশের বনবাড়িয়া গ্রামের রহমান মাস্টারের বাড়িতে রাখালের কাজ করেন। তাতেও তাঁর কোনো দুঃখ নেই। তাঁর মন পড়ে থাকে রেডিওর কাছে। স্থানীয় জিল্লার খন্দকার নামের এক ব্যক্তি রেডিওটি কিনেছিলেন। তিনি দিনে দুবার করে তাঁর বাড়িতে যান। কিছুতেই তাঁরা রেডিও দিতে চাই তো না। ২০১০ সালে জিল্লার খন্দকার মারা গেলে রেডিওটা তাঁর ছেলে আমজাদের কাছে ছিলো। তাঁর কাছে গেলে তিনি বলতেন বাবা মারা যাওয়ার আগে কোথায় রেখে গেছে জানেন না। তবু হাল ছাড়েন না আলতাফ।

২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি সকাল সাতটায় ৫০০ টাকার একটা নোট নিয়ে তিনি আমজাদের কাছে গিয়ে অনুনয় করে বলেন, রেডিওটা ফেরত না দিলে আপনার বাবা কবরে কষ্ট পাবেন। এ কথা শুনে টাকা ছাড়াই আমজাদ তাঁর হাতে রেডিওটি তুলে দেন। আলতাফ হোসেন বলেন, পাঁচ বছর বয়স থেকে তিনি রাখালি করছেন। সারা জীবন শুধুই কষ্ট। এ জন্য বিয়ে করতেও দেরি হয়েছে। মেয়েটা ৩ বছর আগে এসএসসি পাস করেছে। ছেলেটা ছোট। তখনও রাখালিই করছেন। সংসারই চলে না। বাবার রেডিওর সেই আওয়াজ ভুলতে পারেন না। মন চায় রেডিওটা বাজাতে। আটটা ব্যাটারির দাম এখন ৪০০ টাকা। বিদ্যুতে শুনবেন, তার জন্য মিস্ত্রির কাছে নিতে হবে। সে সামর্থ্যও যে তাঁর নেই। বলতে বলতে আলতাফ হোসেন রেডিওটা বুকের কাছে ধরেন। তাঁর চোখ ভিজে ওঠে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো খবর


Kurigram Songbad © 2025. All Rights Reserved.
Built with care by Pixel Suggest
error: Content is protected !!