কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
১০ দিনের ব্যবধানে কুড়িগ্রামের চিলমারী-রাজিবপুর নৌপথে দিনদুপুরে আবারও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতেরা গুলি ছুড়ে নৌকার যাত্রী ও গরু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা নিয়ে চলে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার দুপুরে চিলমারী উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের কড়াইবরিশাল খেয়া ঘাটের কাছে ব্রহ্মপুত্র নদে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, নৌকার যাত্রীদের চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দাদের ডাকাতদের ধাওয়া করেন। খেয়া ঘাটে একটি নৌকায় থাকা চিলমারী থানা-পুলিশের কয়েকজন সদস্য থাকলেও তাঁদের সামনে দিয়ে ডাকাত দল পালিয়ে যায়।
নৌকার মাঝি ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুপুর ১২টার দিকে কড়াইবরিশাল খেয়া ঘাটের কাছে দুটি যাত্রীবাহী নৌকায় ডাকাতেরা হামলা করে। নৌকা দুটি রাজিবপুরের কোদালকাটি ও পাখিউড়া থেকে চিলমারীর উদ্দেশে যাচ্ছিল। মাঝপথে যাত্রী নেওয়ার জন্য কড়াইবরিশাল খেয়া ঘাটের ভিড়লে সেখানেই আক্রমণ করে সশস্ত্র ডাকাতদল।
কুড়িগ্রামের চিলমারী-রাজিবপুর নৌপথে আজ রোববার ডাকাত দলের কবলে পড়া যাত্রীবাহী নৌকা। ছবি: ফেসবুক
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নৌকার মাঝি মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘খেয়া ঘাটে গরু ব্যবসায়ীদের নৌকা ছিল। তাঁদের নৌকায় ডাকাতি করতে এসে আমার নৌকাতেও হানা দেয় দুর্বৃত্তরা। তাদের দলে ১০ থেকে ১৫ জন ছিল। ডাকাতেরা একটা গুলি করেছে। আমার কাছে তিন যাত্রীর ৫৭ হাজার টাকা ছিল। আমার থেকে সেই টাকা কেড়ে নিয়ে গেছে। কয়েকজন যাত্রীর কাছেও টাকা নিয়ে গেছে। এ ছাড়া গরুর ব্যাপারীদের কাছে থাকা টাকাও কেড়ে নেয়। পাশে পোশাক পরা তিনজন পুলিশ সদস্য ছিলেন, কিন্তু তাঁরা এগিয়ে আসেননি।’
গরুর ব্যবসায়ীদের বরাতে আজম মিয়া বলেন, ‘ব্যাপারীদের কয়েক লাখ টাকা ডাকাতেরা নিয়ে গেছে। আমরা ধাওয়া করেছিলাম। পুলিশ একটা ফাঁকা গুলি করলেও ডাকাতদের ধরা যেত। তারা এগিয়ে আসেনি।’
চিলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাহেদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। বিস্তারিত জেনে তারপর বলতে পারব।’
কুড়িগ্রামের চিলমারী-রাজিবপুর নৌপথে আজ রোববার ডাকাত দলের কবলে পড়া যাত্রীবাহী নৌকা। ছবি: ফেসবুক
সহায়তার জন্য এগিয়ে না আসার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চিলমারী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সেলিম সরকারকে মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি কোনো কথা বলেননি।
এ বিষয়ে রাজশাহী অঞ্চলের নৌ পুলিশ সুপার নুরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের ফোর্সের সংখ্যা সীমিত। তারপরও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে এ জন্য জেলা পুলিশেরও ভূমিকা প্রয়োজন। ডাকাতেরা তো সব সময় পানিতে থাকে না। ডাঙাতেও থাকে। আমরা জেলা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে তাদেরও সহযোগিতা চাইব।’
এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি কড়াইবরিশাল এলাকায় যাত্রীবাহী নৌকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তারও আগে গত বছর ২১ ডিসেম্বর চিলমারীর অষ্টমীর চর ইউনিয়নের দুই শ বিঘার চরের কাছে নৌ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
Leave a Reply