স্পোর্টস ডেস্ক:
বিপিএলের গতবারের আসরে তামিম ইকবালের নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ফরচুন বরিশাল। বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা আজ মাঠে নেমেছিল টানা দ্বিতীয়বারের মত এ টুর্নামেন্টের শিরোপা ঘরে তোলার লড়াইয়ে। একাদশ আসরের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে বরিশালের প্রতিপক্ষ ছিল চিটাগাং কিংস। আগে ব্যাট করতে নেমে বরিশালের বিপক্ষে ৩ উইকেটে ১৯৪ রানের বড় সংগ্রহই গড়েছিল বন্দরনগরীর দলটি। আর বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তামিমের ২৯ বলে ৫৪ রানের আগ্রাসী ইনিংসের পর কাইল মায়ার্সের ৪৬ রানের ঝড়ো ইনিংসে জয়ের পথে এগোয় বরিশাল। এরপর শেষদিকে রিশাদ হোসেনের বীরত্বে ৩ বল হাতে রেখেই৩ উইকেটের জয়ের দেখা পায় তামিমের দল।
বিপিএলে এখন পর্যন্ত ফাইনালে সর্বোচ্চ ১৭৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছে কুমিল্লা ২০২৩ সালে। ফলে আজ বরিশালের দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তুলতে হলে রেকর্ড গড়েই জিততে হতো তামিমের দলকে। সেই রেকর্ড গড়েই অবশেষে জয়ের দেখা পেয়েছে দলটি। তামিম, মায়ার্সের পর রিশাদের বীরত্বে তিন উইকেটের জয়ে টানা দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তুলেছে বরিশাল।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন বরিশালের দুই ওপেনার। তামিম ও তাওহীদ হৃদয় মিলে স্কোরবোর্ডে তুলেছিলেন ৭৬ রান। শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে খেলা অধিনায়ক তামিম ফিফটি করেন ২৪ বলে। তবে ফিফটির পর আর নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ব্যক্তিগত ৫৪ রানে শরিফুল ইসলামের বলে খালেদ আহমেদের মুঠোবন্দী হয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনি।
তামিম সাজঘরে ফেরার ক্রিজে হৃদয়ের সঙ্গী হন ডেভিড মালান। তবে ইংলিশ এই মারকুটে ব্যাটার আজ দলের হাল ধরতে পারেননি। দলীয় ৭৮ রানে তিনি আউট হন ১ রান করেই। এরপর দলীয় ৯৬ রানে হৃদয়ও সাজঘরের পথ ধরেন ব্যক্তিগত ৩২ রানেই। এরপর ক্রিজে মায়ার্সের সঙ্গী হন মুশফিকুর রহিম।
মুশফিক ছিলেন আগ্রাসী মেজাজেই, ৯ বলে ৩ চারে ১৬ রান করেন তিনি, তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি, আউট হন দলীয় ১৩০ রানে। এদিকে মুশফিক ফিরলেও শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে থাকা মায়ার্স দ্রুত স্কোরবোর্ডে রান তুলতে থাকেন। তাঁর সুবাদেই জয়ের স্বপ্ন বুনতে শুরু করে বরিশাল। তবে ক্যারিবীয় এই ব্যাটারও শেষ পর্যন্ত আউট হন ২৭ বলে ৪৬ রান করেই।
এদিকে দলীয় ১৭২ রানে মায়ার্স আউট হওয়ায় ধাক্কা খায় বরিশাল। একই ওভারে মাহমুদউল্লাহও ফেরায় বিপাকে পড়ে দলটি। উনিশতম ওভারের শেষ বলে আউট হন মোহাম্মদ নবীও। তবে নবী আউট হওয়ার এক বল আগেই বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে অনেকটা এগিয়ে দেন রিশাদ। এদিকে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৮ রান দরকার ছিল বরিশালের, ক্রিজে ছিলেন রিশাদ এবং তানভীর। শেষ ওভারের প্রথম বলেই বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে দলের জয়ের পথ সুগম করেন রিশাদ। এরপর ৩ বল হাতে রেখেই বাকি ২ রান নিয়ে জিতে যায় দলটি। এই জয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা নিশ্চিত করেছে দলটি।
বরিশালের বিপক্ষে আগে ব্যাট করতে নেমে আজ শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিলেন চিটাগাংয়ের দুই ওপেনার খাজা এবং ইমন। এ দুজন মিলে আজ প্রথম ৬ ওভারেই স্কোরবোর্ডে তুলেন ৫১ রান। বরিশালের বোলারদের পাতা না দিয়ে চার-ছয়ের বন্যা বইয়ে দ্রুত সংগ্রহ বাড়াতে থাকেন এ দুজন। খাজার সঙ্গে আজ ১২১ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন ইমন।
৪৪ বলে ৭ চার আর ৩ ছয়ে ৬৬ রানের আগ্রাসী এক ইনিংস খেলে খাজা আউট হন ইবাদত হোসেনের বলে ক্যাচ তুলে। এদিকে খাজা ফিরলেও আরেক ওপেনার ইমন দলকে পথ দেখিয়েছেন। খাজা ফেরার পর ক্রিজে আসা গ্রাহাম ক্লার্ককে নিয়ে এরপর চিটাগাংকে বড় সংগ্রহ এনে দিয়েছেন ইমন। দুজন মিলে গড়েছিলেন ৭০ রানের জুটি।
দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেওয়ার পথে ৩০ বলে নিজের ফিফটি পূরণ করেন ইমন। বাংলাদেশি এই ওপেনারের মতোই আগ্রাসী মেজাজে ছিলেন ক্লার্ক। তিনিও খেলেছেন ২৩ বলে ২ চার আর ৩ ছয়ে ৪৪ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। এদিকে দলীয় ১৯১ রানে ৪৪ রান করে ক্লার্ক বিদায় নেওয়ার পর ইমনও আউট হন ব্যক্তিগত ৭৮ রানে।
এ দুজন ফেরার পর আর নিজেদের সংগ্রহ খুব বেশি বাড়িয়ে নিতে পারেনি চিটাগাং। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯৪ রানেই থামে বন্দর নগরীর দলটি।
Leave a Reply