নিজস্ব প্রতিবেদক:
উলিপুর উপজেলার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র গুলোতে চার মাস ধরে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ নেই। মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা, অন্তঃসত্তা ¡া মা ও জন্মনিরোধ কপাটি, ইনপ্ল্যান, ভ্যাসেকটমি, টিউবিকটমি কার্যক্রম ও সাধারণ চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে। সেবা নিতে যাওয়া রোগীদের চিকিৎসকরা শুধু ব্যবস্থাপত্র করে দিচ্ছেন। ফলে প্রান্তিক পর্যায়ে জনসাধারণের স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
জানা গেছে, উপজেলা ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মোট জনসংখ্যা রয়েছে ৫ লাখেরও বেশি। ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র রয়েছে ১১টি। দু’জন মেডিকেল অফিসারসহ ১১ জন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের পদ রয়েছে। কর্মরত আছেন মাত্র চারজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার। এসব স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র থাকলেও মিলছে না আশানুরূপ সেবা। ফলে কেন্দ্রগুলোতে গিয়ে সেবা না পেয়ে নিরাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে সাধারণ লোকজনকে। এসব স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে গুলোতে ওষুধ নেই, চিকিৎসক ও জনবল সংকটে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
গুনাইগাছ ইউনিয়নের পূর্ব কালুডাঙ্গা গ্রামের খোকা শেখের স্ত্রী মালেকা বেগম (৫২) বলেন, ‘কয়েকদিন থাকি সর্দি জ্বরে পড়ি কাহিল হয়া বিছনায় পড়ি। কোনোমতে হাসপাতালোত আসনু ডাক্তার দ্যাখে ওষুধ নেইম। আসিয়া শোনোং, ডাক্তারও নাই, ওষুধও বলে নাই। খালি হাতে ফিরি আসনো। হামরা কি বিনা চিকিৎসায় মরি যামো?’
গুনাইগাছ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ওষুধ সরবরাহ না থাকায় খুব বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। গ্রামের দরিদ্র মানুষ চিকিৎসা ও ওষুধের জন্য আসে। তাদের ওষুধ না দিলে ব্যবস্থাপত্র নিতে চায় না।
একই ধরনের কথা বলেন হাতিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের ভিজিটর উম্মে সালমা। তাঁর ভাষ্য, ওষুধ ছাড়া রোগী পরামর্শ নিতে আগ্রহী নয়। কোনো রোগী আসছে না। ফলে জন্মনিরোধ কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। এতে জন্মহার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
ধামশ্রেনী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার শরিয়ত উল্ল্যা বলেন, ‘ওষুধ দিতে পারছি না। রোগীকে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছি। তাদের বাইরে থেকে ওষুধ নিতে অথবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে রোগী কমে গেছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. নুরুল আমিন বলেন, কয়েক মাস ধরে ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী সরবরাহ নেই। চিকিৎসক ও জনবল সংকটে চিকিৎসা ও জন্মবিরতিকরণ কার্যক্রমে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শুধু ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হচ্ছে।
Leave a Reply