নাজমুল হুদা,রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে রাজশাহী কলেজ শিক্ষার্থী মো. শিমুল শিহাবের মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরসহ ১০ থেকে ১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে নগরীর মতিহার থানায় নিহত শিমুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৩ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকেন্ড সায়েন্স বিল্ডিংয়ের সামনে দিয়ে মোটরবাইক নিয়ে যাচ্ছিল শিমুল। এমন সময় ড. খুদরত-ই-খুদা একাডেমিক বিল্ডিংয়ের নিকট পৌঁছালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অজ্ঞাতনামা সহকারী প্রক্টর মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে জিজ্ঞেস করে। একপর্যায়ে ‘বহিরাগত, ধর ধর’ বলে চিৎকার করে। এ সময় পেছন থেকে কিছু অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিমুলকে ধাওয়া করে।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, এরপর ৩য় বিজ্ঞান ভবন এবং ৪র্থ বিজ্ঞান ভবনের মাঝে বাইকের গতিরোধ করার জন্য ধাওয়া দিয়ে আসে এবং তাদের মধ্যে অজ্ঞাত একজন শিমুলকে ব্যাডমিন্টন খেলার ব্যাট দিয়ে পেছন থেকে ঘাড়ে আঘাত করে। এ সময় অজ্ঞাত সহকারী প্রক্টরসহ উপস্থিতরা শিমুলের সঙ্গে থাকা মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস মিষ্টিকে চড়থাপ্পর মারে। পরে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের গেট থেকে পশ্চিমে ৩৫ গজ দূরে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে। শিমুলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে রাবি মেডিকেল সেন্টার ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
মামলার বিষয়ে আরএমপি কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, নিহত শিমুলের বাবা বাদী হয়ে বুধবার মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলায় রাবির সহকারী প্রক্টরসহ অজ্ঞাত ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পর মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটিত হবে। আমরা সেই অপেক্ষায় আছি।
উল্লেখ্য, গত ২৩ জানুয়ারি রাতে শিমুলের মৃত্যুর পরদিন (২৪ জানুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে শিমুলের মৃত্যুকে হত্যাকন্ড দাবি করে খুনিদের শাস্তির দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করে স্থানীয় কিছু লোক। এছাড়া শিমুলের খুনিদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন পালন করে রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীদের একাংশ।
অন্যদিকে, ঘটনার পরদিন (২৪ জানুয়ারি) স্থানীয় কিছু লোকজনের সাথে মতবিনিময় সভা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মাঈন উদ্দিন খানকে সভাপতি করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে প্রশাসন। এছাড়া ২৫ জানুয়ারি রাজশাহী কলেজর অধ্যক্ষ জনাব ড. যুহুর আলীর সাথেও মতবিনিময় করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সালেহ হাসান নকীব।
Leave a Reply