1. editor1@kurigramsongbad.com : কুড়িগ্রাম সংবাদ :
  2. sifat@kurigramsongbad.com : sifat :
  3. siteaccess@pixelsuggest.com : কুড়িগ্রাম সংবাদ :

ট্রাম্প কি জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব আইন বন্ধ করতে পারবেন

  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৩৭ বার পড়া হয়েছে

বিবিসি 

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন, যার লক্ষ্য “জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব” বন্ধ করা। অর্থাৎ যে কোনো ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করলে তাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব দেওয়া বাতিল করাই এই আদেশের লক্ষ্য। খবর বিবিসি’র।

ট্রাম্প দীর্ঘদিন থেকে এই নীতি পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে এটি বাস্তবায়ন করা সহজ হবে না।

ট্রাম্পের আদেশটি সেই সকল অভিবাসীদের সন্তানের জন্য নাগরিকত্ব অস্বীকার করার কথা বলে, যারা অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন বা যাদের ভিসা অস্থায়ী। তবে এই আদেশটি পূর্ববর্তী নাগরিকত্ব অর্জনকারীদের ওপর প্রযোজ্য হবে কি না, তা স্পষ্ট নয়।

এছাড়াও, এটি কীভাবে বাস্তবায়িত হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়, কারণ জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে সুরক্ষিত এবং এটি পরিবর্তন করতে কংগ্রেসের উভয় কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট প্রয়োজন।

এদিকে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ১৮টি রাজ্য, সান ফ্রান্সিসকো শহর এবং ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া ইতোমধ্যে ফেডারেল সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে এবং নির্বাহী আদেশটি চ্যালেঞ্জ করেছে।

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব কী?

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে “জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব” নীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এতে বলা হয়, “যে সব ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ বা নাগরিকত্ব লাভ করেছেন এবং সেখানে শাসনের অধীনে আছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এবং যেই রাজ্যে বাস করেন, সেই রাজ্যের নাগরিক।”

অভিবাসন বিরোধীরা দাবি করেন, এই নীতি “অবৈধ অভিবাসনের জন্য একটি বড় আকর্ষণ” সৃষ্টি করে এবং এটি অবৈধভাবে গর্ভবতী মহিলাদের সীমান্ত পার হতে উৎসাহ দেয়, যাতে তারা যুক্তরাষ্ট্রে সন্তান জন্ম দিয়ে “জন্মপর্যটন” বা “অ্যাঙ্কর বেবি” [এমন একটি শিশু যে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করে এবং তার মাধ্যমে তার পরিবার সদস্যরা অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি পায়] তৈরি করতে পারে।

এটি কীভাবে শুরু হয়েছিল?

১৪তম সংশোধনী ১৮৬৮ সালে গৃহযুদ্ধের পর গ্রহণ করা হয়েছিল। ১৩তম সংশোধনী ১৮৬৫ সালে দাসত্ব বাতিল করে, এবং ১৪তম সংশোধনী মুক্ত ও যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করা দাসদের নাগরিকত্বের প্রশ্নের সমাধান করে।

আগের সুপ্রিম কোর্টের রায়, যেমন ১৮৫৭ সালের “ড্রেড স্কট বনাম স্যান্ডফোর্ড” মামলায় আফ্রিকান আমেরিকানদের কখনও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার নেই বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছিল। ১৪তম সংশোধনী সেটি বাতিল করেছিল।

১৮৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট “ওং কিম আর্ক বনাম যুক্তরাষ্ট্র” মামলায় নিশ্চিত করে, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব অভিবাসীদের সন্তানদের জন্যও প্রযোজ্য।

ওং ছিলেন ২৪ বছর বয়সী চীনা অভিবাসী দম্পতির সন্তান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।কিন্তু চীন সফর শেষে ফিরে এসে পুনরায় প্রবেশের অনুমতি পাননি। ওং সফলভাবে যুক্তি দেখান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছেন। তাই তার বাবা-মায়ের অভিবাসন পরিস্থিতি ১৪তম সংশোধনী প্রয়োগে বাধা সৃষ্টি করতে পারে না।

ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটা’র ইমিগ্রেশন হিস্টোরি রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক এরিকা লি।বলেন, “ওং কিম আর্ক বনাম যুক্তরাষ্ট্র মামলায় নিশ্চিত করা হয়েছিল, অভিবাসী অভিভাবকের পরিস্থিতি যাই হোক, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া সকল ব্যক্তি নাগরিকত্বের অধিকার রাখে। সুপ্রিম কোর্ট তখন থেকে এ বিষয়ে পুনঃমূল্যায়ন করেনি।”

ট্রাম্প কি এটি বাতিল করতে পারেন?

বেশিরভাগ আইন বিশেষজ্ঞ একমত, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল করতে পারবেন না।

সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইনি স্কুলের অধ্যাপক সাইকৃষ্ণ প্রকাশ বলেন, “তিনি এমন কিছু করছেন যা অনেক মানুষকে উত্তেজিত করবে। তবে শেষ পর্যন্ত এটির জন্য আদালতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এটি এমন কিছু নয় যা নিয়ে তিনি একা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।”

প্রকাশ আরও বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ফেডারেল এজেন্সির কর্মীদের নাগরিকত্বের তফশিল আরও সংকীর্ণভাবে ব্যাখ্যা করার আদেশ দিতে পারেন যেমন, যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস ইনফোর্সমেন্টের এজেন্টরা। তবে এটির ফলে যাদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করা হবে, তারা আইনি চ্যালেঞ্জ করতে পারে।

এটি দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে, যা অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছতে পারে।

একটি সাংবিধানিক সংশোধনী জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল করতে পারে। তবে এর জন্য প্রতিনিধি পরিষদ এবং সিনেট উভয় স্থানেই দুই-তৃতীয়াংশ ভোট এবং যুক্তরাষ্ট্রের তিন-চতুর্থাংশ রাজ্যের অনুমোদন প্রয়োজন।

এটি কতজনকে প্রভাবিত করবে?

পিউ রিসার্চের মতে, ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদিত অভিবাসী পিতামাতার সন্তান হিসেবে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার শিশু জন্মগ্রহণ করেছিল, যা ২০০৭ সালের শীর্ষ পরিসংখ্যানের তুলনায় ৩৬ শতাংশ কম। ২০২২ সাল পর্যন্ত পিউ রিসার্চ দেখতে পায়, ১.২ মিলিয়ন নাগরিক শিশু অনুমোদিত অভিবাসী পিতামাতার সন্তান।

মাইগ্রেশন পলিসি ইনস্টিটিউট মনে করে, যেহেতু সেই সন্তানদেরও সন্তান হবে, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল হলে ২০৫০ সালে এটি অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা ৪.৭ মিলিয়নে নিয়ে আসবে।

এনবিসির “মিট দ্য প্রেস”-এ এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি মনে করেন অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানদের তাদের বাব-মায়ের সঙ্গে নির্বাসিত করা উচিত, যদিও তারা যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছে।

ট্রাম্প ডিসেম্বর মাসে বলেছিলেন, “আমি চাই না পরিবারগুলো ভেঙে যাক। তাহলে একমাত্র উপায় হল, আপনাকে পরিবারগুলোকে একসঙ্গে রাখতে হবে এবং তাদের সবাইকে ফেরত পাঠাতে হবে।”

কোন কোন দেশ জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব প্রদান করে?

৩০টিরও বেশি দেশ যেমন, কানাডা এবং মেক্সিকো সরাসরি “মাটির অধিকার” নীতি অনুসরণ করে, যেটি কোনো বিধিনিষেধ ছাড়াই কার্যকর হয়। এটি একটি আইনগত নীতি, যার মাধ্যমে যে ব্যক্তি যে দেশে জন্মগ্রহণ করে, তাকে সেই দেশটির নাগরিকত্ব স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রদান করা হয়।

অন্যান্য দেশ যেমন, যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়া একটি পরিবর্তিত সংস্করণ অনুমোদন করে। এই নীতি অনুযায়ী,  যদি একজন অভিভাবক দেশটির নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দা হন, তাহলে তার সন্তানকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব প্রদান করা হয় ।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো খবর


Kurigram Songbad © 2025. All Rights Reserved.
Built with care by Pixel Suggest
error: Content is protected !!