মাইদুল ইসলাম মামুন, বিশেষ প্রতিনিধি:
ঘন কুয়াশার প্রকোপে কুড়িগ্রাম জেলার জনজীবন চরম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভোর থেকেই জেলার সর্বত্র এতটাই ঘন কুয়াশা যে এখন পর্যন্ত (বর্তমান সময় ১০:৩০) সূর্যের আলো কার্যত দেখা যায়নি। এই বিরূপ পরিস্থিতি দিনমজুর, কৃষক, নৌচালকসহ নানা পেশার মানুষের জন্য নিত্যকার জীবনে অচলাবস্থা তৈরি করেছে।
কুয়াশার ঘনত্বে পরিবহন ব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থী ও অফিসগামী মানুষজন সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে দুর্ভোগে পড়ছেন। দিনমজুর ও শ্রমজীবী মানুষের আয় রোজগারও ব্যাহত হচ্ছে। নৌচালকরা নদীতে চলাচলে ঝুঁকির মুখে পড়ছেন, ফলে নদীপথের যোগাযোগ কার্যত বন্ধের উপক্রম হয়েছে।
কুয়াশার দীর্ঘস্থায়ীতায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষি। সরিষা, গম, আলু এবং সবজির ক্ষেতে ফাঙ্গাসের আক্রমণের ঝুঁকি বেড়েছে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। ফলন কমে যাওয়ার সম্ভাবনায় কৃষকরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। সরিষা ক্ষেতের পাতাগুলো ইতোমধ্যে হলুদ হয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলার একাধিক কৃষক।
কুড়িগ্রামের শীতার্ত মানুষদের দুর্ভোগ এখন চরমে। ত্রাণ সহায়তা কম হওয়ায় এবং দীর্ঘস্থায়ী কুয়াশার কারণে অনেকেই অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন। স্থানীয় জনগণের দাবি, দ্রুত আরও কার্যকর ত্রাণ ব্যবস্থা এবং কৃষি খাতের জন্য বিশেষ সহায়তা নিশ্চিত করা হোক।
এই বিষয়ে কুড়িগ্রাম ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই জানান, “জেলার ৯টি উপজেলায় শীতার্তদের জন্য ৪৯ লাখ টাকা ও ১২ হাজার কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।” তবে শীতার্ত মানুষদের অভিযোগ, এই বরাদ্দ প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। অনেকেই এখনো সহায়তা পাননি।
রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র বলেন, বুধবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী ২৩-২৪ জানুয়ারি তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন তিনি। এর ফলে শীতের তীব্রতা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Leave a Reply