মোঃ ফরিদুল ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের বড়ুয়া তবকপুর আমতলী এলাকায় ২০০৫ সালে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজটি একসময় এলাকার যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় পরিণত হয়েছিল। এটি উলিপুর উপজেলার তবকপুর, ধামশ্রেনী, চিলমারী উপজেলার থানাহাট, রানীগঞ্জ ইউনিয়নের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ স্থাপন করেছিল। কিন্তু ২০১৯ সালের ভয়াবহ বন্যায় সেতুটি ভেঙে যায়। এর ফলে, প্রায় সাত বছর ধরে ২০ গ্রামের মানুষ একে একে চরম দুর্ভোগে পড়ে আছেন।
এলাকার মানুষের অভিযোগ, দীর্ঘ সাত বছরেও ব্রিজটি পুনর্নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। একসময় সেতুর উপর দিয়ে ছোট-বড় সহস্রাধিক যানবাহন চলাচল করত, তবে এখন তা বন্ধ হয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুমে প্লাস্টিকের ড্রামের ভেলা কিংবা বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচল করলেও, সেই ব্যবস্থা একেবারেই অটেকসই নয়। প্রতিবছর বর্ষার সময় গলা পানি হয়ে যায়, তখন এসব ভেলা কিংবা সাঁকো দিয়ে মানুষের চলাচল কষ্টকর হয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শুকনো মৌসুমে তারা অন্যের জমি দিয়ে চলাচল করলেও, সেই জমির মালিকদেরও ধৈর্যের সীমা শেষ হয়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় এলাকার হাজারো মানুষের জন্য একটি সেতুর ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। চুনিয়ার পাড়, আকন্দ পাড়া, তামাকু পাড়া, কবিরাজ পাড়া, বান্দার ঘাট, রাজারঘাটসহ অন্তত ২০টি গ্রামে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ এ অবস্থায় যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন।
কলেজ শিক্ষার্থী রুবেল হোসেন বলেন, ‘ব্রিজটি ছিল আমাদের এলাকার জন্য একটি রক্ষাকবচ। তার পর থেকে প্রতিদিন অটোরিকশা, রিকশা, জেএসসহ ছোট-বড় হাজারো যানবাহন চলাচল করত। এখন সব বন্ধ হয়ে গেছে, সবাই পায়ে হেঁটে চলাচল করছে, যার ফলে প্রচুর সময় ও শক্তি নষ্ট হচ্ছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা রিপন মিয়া বলেন, ‘বর্ষাকালে এখানে গলা পানি হয়ে যায়। তখন বাঁশের সাঁকো কিংবা প্লাস্টিকের ড্রামের ভেলা দিয়ে পার হতে হয়। এই অবস্থায় সাত বছর ধরে আমরা ভোগান্তিতে রয়েছি। ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে এলাকার হাজারো মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।’
এদিকে, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান বলেছেন, ‘এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে কষ্ট ভোগ করছেন। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আমি উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করেছি এবং ব্রিজ নির্মাণের ব্যাপারে একাধিকবার আলোচনা করেছি। আশা করি, শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে।’
উলিপুর উপজেলা প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার জানান, “এলাকার মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি আমাদের কাছে আসার পর আমরা পুনরায় ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু হবে।”
এদিকে, স্থানীয়রা দাবি করেছেন, শিগগিরই ব্রিজটি পুনর্নির্মাণ করা না হলে, তাদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। এলাকার মানুষের একটাই আবেদন, যেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই সেতুটি পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু করে।
Leave a Reply