আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট তৃতীয় মেয়াদে শপথ নিতে যাচ্ছেন নিকোলাস মাদুরো। আজ শপথ নেবেন তিনি। তার আগে বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী এবং আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক প্রতিবাদ দেখা গেছে মাদুরোর বিরুদ্ধে।
কারাকাস থেকে এএফপি জানায়, বিরোধী নেতা মারিয়া করিনা মাচাদো বৃহস্পতিবার কারাকাসে এক বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিতে আত্মগোপন থেকে বের হন। বিক্ষোভ শেষে তাকে সাময়িকভাবে আটক করা হয় বলে তার দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
এই ঘটনা আবারও মাদুরোর নির্বাচনি কারচুপি এবং সমালোচকদের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিন্দার ঝড় তোলে। যদিও ভেনিজুয়েলা সরকার মাচাদোকে গ্রেপ্তারের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার মাচাদো ও এডমুন্ডো গনজালেস উরুতিয়াকে ‘স্বাধীনতা যোদ্ধা’ হিসেবে অভিহিত করেন। মাচাদো গত ২৮ জুলাইয়ের নির্বাচনে মাদুরোর বিরুদ্ধে জয়ী বলে ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয়।
ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল নেটওয়ার্কে লেখেন, ‘তাদের ক্ষতি করা যাবে না এবং অবশ্যই নিরাপদ ও জীবিত রাখতে হবে।’
ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে মাদুরো সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। পরে জো বাইডেন এই নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে শিথিল করলেও তা আবার পুনর্বহাল করা হয়। ট্রাম্পের পরবর্তী মেয়াদে এই নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মাদুরোর ঐতিহাসিক মিত্র কলম্বিয়ার বামপন্থী প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো মাচাদোর ‘পদ্ধতিগত হয়রানি’র নিন্দা করেছেন। ইকুয়েডর মাদুরোর শাসনকে ‘একনায়কতন্ত্র’ বলে আখ্যা দিয়েছে, আর স্পেন মাচাদোর সংক্ষিপ্ত আটককে ‘সম্পূর্ণ নিন্দা’ জানিয়েছে।
মাচাদোর দল এক্স-এ জানায়, বিক্ষোভ শেষে মাচাদোকে ‘সহিংসভাবে আটকানো’ হয় এবং তার মোটরসাইকেল বহরের আশপাশে গুলির ঘটনা ঘটে। পরে তাকে আটক করে একাধিক ভিডিও ধারণে বাধ্য করা হয় এবং তারপরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
মাচাদো তার বক্তব্যে হাজার হাজার সমর্থকের সামনে বলেন, ‘আমরা ভীত নই।’ ফ্রান্সের প্যারিসেও একটি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে মাচাদোর মেয়ে আনা করিনা সোসা ও তার সমর্থকরা অংশ নেন।
মাদুরোর শপথ গ্রহণের আগে বিরোধীদের বিরুদ্ধে নতুন করে দমন-পীড়নের কথা জানানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আরেক বিরোধী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী, একটি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এনজিও প্রধান এবং গনজালেস উরুতিয়ার জামাতার গ্রেপ্তার।
২০১৩ সালে বামপন্থী নেতা হুগো শাভেজের মৃত্যুর পর মাদুরো ক্ষমতায় আসেন। ২০১৮ সালের পুনর্নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবে জালিয়াতি হিসেবে প্রত্যাখ্যাত হলেও তিনি পপুলিজম এবং দমন-পীড়নের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রেখেছেন।
Leave a Reply