ধর্ম ডেস্ক:
জুমাবার সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। ইসলামে এই দিনের মর্যাদা অনেক বেশি। জুমার দিনের বিশেষ কিছু আমল ও আদব রয়েছে। এর মধ্যে গোসল করাও অন্তর্ভুক্ত।
আউস ইবনে আউস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (স.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করাবে এবং নিজেও গোসল করবে অথবা উত্তমরূপে গোসল করবে এরপর ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে আসবে, আসার সময় হেঁটে আসবে, কোনো বাহনে চড়বে না, ইমামের কাছাকাছি বসবে, এরপর দুটি খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং (খুতবার সময়) কোনো অনর্থক কাজকর্ম করবে না, সে মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপে একবছর নফল রোজা ও একবছর নফল নামাজের সওয়াব পাবে।’ (আবু দাউদ: ৩৪৫)
অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, সাধ্যমতো পবিত্র হলো, তেল ব্যবহার করল, ঘর থেকে সুগন্ধি ব্যবহার করল, অতঃপর মসজিদে এলো, সেখানে দুজন মুসল্লির মধ্যে ফাঁক করে সামনে এগিয়ে যায় না, নির্দিষ্ট পরিমাণ নামাজ পড়ল, অতঃপর ইমাম কথা শুরু করলে চুপ থাকল; তাহলে আল্লাহ তাআলা তাঁর দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করবেন। (বুখারি: ৮৮৩)
উল্লেখিত হাদিস অনুযায়ী, জুমার দিন ভালোভাবে গোসল করা একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। তবে, জুমার দিনে গোসল করা ফরজ নয়। তাই পবিত্র থাকলে গোসল না করলেও জুমার নামাজ আদায় হয়ে যাবে। অর্থাৎ কোনো কারণে জুমার দিন গোসল না করলে গুনাহ হবে না। ইবনে আববাস (রা.) বলেন, জুমার দিন গোসল করা ওয়াজিব নয়; তবে উত্তম। তাতে গোসলকারীর অধিকতর পবিত্রতা অর্জিত হয়।’ (আবু দাউদ: ৩৫৩; মিশকাত: ৫৪৪)
তবে মনে রাখতে হবে, জুমার দিন গোসলের সুযোগ থাকলে কোনোভাবেই অবহেলা করা উচিত নয়। কারণ জুমার দিনের গোসল নিয়ে অনেক নির্দেশমূলক হাদিস রয়েছে। যেমন এক হাদিসে রাসুল (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘জুমার দিনে প্রত্যেক সাবালক ব্যক্তির জন্য গোসল করা ওয়াজিব।’ (বুখারি: ৮৭৯; মিশকাত: ৫৩৮) অন্য হাদিসে তিনি ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমায় যাবে, সে যেন গোসল করে।’ (বুখারি: ৮৮২; মুসলিম: ৮৪৫)
যদিও এসব হাদিসের ব্যাখ্যায় আলেমদের মত হলো- রাসুলুল্লাহ (স.) যখন মদিনায় ছিলেন সে সময় লোকজন সকাল থেকেই কাজে যেতেন, ওই সময়ের প্রেক্ষাপটে গোসল করাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই কারো গোসল ফরজ না হলে জুমার দিনে যদি গোসল নাও করে তবুও তার নামাজ হয়ে যাবে।
গ্রহণযোগ্য মতানুসারে, জুমার দিনের গোসল ফরজ নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন শুধু অজু করে, সেটাই তার জন্য যথেষ্ট। আর যে গোসল করে, সেটা অবশ্যই উত্তম।’ (তিরমিজি: ৪৯৭; মিশকাত: ৫৪০)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমার দিন ভালোভাবে পবিত্র হয়ে মসজিদে যাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Leave a Reply