ধর্ম ডেস্ক:
ইসলামে রজব মাসের সম্মান নিয়ে বিতর্ক নেই। বছরের যে চারটি মাসকে আল্লাহ তাআলা শ্রেষ্ঠত্ব ও মাহাত্ম্য দিয়েছেন, সেই ‘আশহুরুল হুরুম’ বা সম্মানিত মাসের অন্যতম রজব মাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, নিশ্চয়ই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে আল্লাহর বিধানে মাস বারটি। এর মধ্যে চারটি মাস বিশেষভাবে সম্মানিত। এটাই হচ্ছে সুপ্রতিষ্ঠিত ধর্ম। (সুরা তওবা: ৩৬)
রাসুল (স.) সম্মানিত মাসগুলোকে চিহ্নিত করে বলেন, তিনটি মাস হলো ধারাবাহিক— জিলকদ, জিলহজ ও মহররম, অপরটি হলো রজব। (সহিহ বুখারি: ৩১৯৭, সহিহ মুসলিম: ১৬৭৯)
রজব মাসে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার বিশেষ উপকারের কথা উঠে এসেছে তাফসির গ্রন্থে। ওলামায়ে কেরাম বলেন, আশহুরে হুরুমের এই বৈশিষ্ট্য রয়েছে যে, এসব মাসে ইবাদতের প্রতি যত্নবান হলে বাকি মাসগুলোতে ইবাদতের তাওফিক হয়। আর আশহুরে হুরুমে কষ্ট করে গুনাহ থেকে বিরত থাকতে পারলে অন্যান্য মাসেও গুনাহ পরিহার করা সহজ হয়। (আহকামুল কুরআন, জাসসাস: ৩/১১১; মারেফুল কোরআন: ৪/৩৭২)
তাই সম্মানিত মাসসমূহের অন্যতম রজব মাসের মর্যাদা রক্ষায় সবাইকে যত্মবান হতে হবে। এছাড়াও এ মাসে রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে বরকতের দোয়া করা সুন্নত। এক্ষেত্রে প্রসিদ্ধ একটি দোয়া হলো- اَللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِىْ رَجَبَ وَ شَعْبَانَ وَ بَلِّغْنَا رَمَضَانَ ‘আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফি রজাবা ওয়া শা’বানা ওয়া বাল্লিগনা রমাদান।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনি রজব ও শাবান মাসকে আমাদের জন্য বরকতময় করুন এবং আমাদেরকে রমজান মাস পর্যন্ত (হায়াত দিন) পৌঁছে দিন।’ হজরত আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) রজব মাস শুরু হলে এই দোয়া পড়তেন। (নাসায়ি: ৬৫৯; মুসনাদে আহমাদ: ২৩৪৬, আল-মুজামুল আওসাত: ৩৯৩৯)
তবে স্মরণ রাখা উচিত যে, এ মাসের জন্য বিশেষ কোনো নামাজ, বিশেষ কোনো রোজা বা বিশেষ পদ্ধতির কোনো আমলের হুকুম শরিয়তে দেওয়া হয়নি। বাজারের অনির্ভরযোগ্য বই-পুস্তকে রজব মাস উপলক্ষে যেসব বিশেষ নামাজ বা রোজার কথা পাওয়া যায় তা সবই ভিত্তিহীন। মূলত রজব মাসের বরকত ও ফজিলত হাসিল করার জন্য অন্যান্য মাসে পালনীয় ফরজ ইবাদতগুলো যথাযথভাবে পালন করতে হবে এবং নফল ইবাদত বেশি বেশি করতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।
Leave a Reply