1. editor1@kurigramsongbad.com : কুড়িগ্রাম সংবাদ :
  2. sifat@kurigramsongbad.com : sifat :
  3. siteaccess@pixelsuggest.com : কুড়িগ্রাম সংবাদ :
সাম্প্রতিক :
তিস্তার ন্যায্য হিস্যার পানি ও মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নে দুলুর ৪৮ ঘন্টার কর্মসূচি ঘোষনা  ইশতিয়াক-রাব্বীর নেতৃত্বে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মিউজিক অ্যাসোসিয়েশন রৌমারীতে সরকারি বই চুরির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন রৌমারী থেকে বিনামূল্যে সরকারি বই পাচার চেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার ৩ এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধা তালিকায় ১১তম তরঙ্গকে উলিপুরে সংবর্ধনা বেরোবিতে ঢাবির কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত ইবিতে ‘আন্তর্জাতিক কৃষি ও আগামীর মানব সভ্যতা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত রাজারহাটে শহীদ রাউফুন বসুনিয়া পাঠাগারের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ নেতানিয়াহুকে গোপনে অস্ত্র দিতেন এরদোয়ান: ইরানের গণমাধ্যম মুলতানে হ্যাটট্রিক করে ইতিহাস গড়লেন নোমান আলী

নর্ডিক কোম্পানিগুলো কেন এত সফল?

  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

দ্য ইকোনমিস্ট

কোপেনহেগেনের “কার্লস ভিলা”র গ্রাউন্ড ফ্লোরের ডাইনিং রুম থেকে অতিথিরা একটি সুন্দর বাগানের দৃশ্য দেখতে পান। বাগানে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী ও পুরানো শৈলীর কিছু ভাস্কর্য। ১৮৯২ সালে কার্ল জ্যাকবসেন এই আর্ট নুভো বাড়িটি বানিয়েছিলেন।

তিনি ছিলেন কার্লসবার্গের প্রতিষ্ঠাতার ছেলে। সেই সময় থেকে, কোম্পানিটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্রিউয়ারগুলোর [বিয়ার প্রস্তুতকারী] একটি।
কার্লসবার্গের বর্তমান মালিক জ্যাকব আরুপ-অ্যান্ডারসেন বলেন, কোম্পানির সাফল্য ডেনমার্কের অনেক বড় বড় কোম্পানির সাফল্যের একটা বড় অংশ।

ডেনমার্কের মতোই ফিনল্যান্ড, নরওয়ে এবং সুইডেনেও একই অবস্থা। চারটি বৃহত্তম নর্ডিক দেশ মিলিয়ে পৃথিবীর মোট জিডিপির প্রায় ১ শতাংশ এবং জনসংখ্যার ০.৩ শতাংশ অংশীদার। তবে তারা অসাধারণ সব কর্পোরেট কোম্পানি তৈরি করেছে। লেগো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় খেলনা প্রস্তুতকারী, আইকিয়া সবচেয়ে বড় ফার্নিচার প্রস্তুতকারী (এবং সুইডিশ মিটবলসের কারণে, এর ষষ্ঠ-বৃহত্তম রেস্টুরেন্ট চেইন)।

নর্ডিক দেশগুলো বিভিন্ন শিল্পের শীর্ষ প্রস্তুতকারক, যেমন যন্ত্রপাতি (অ্যাটলাস কপকো), টেলিকম যন্ত্রাংশ (নোকিয়া ও এরিকসন), সিটবেল্ট (অটোলিভ) এবং লিফট (কোনে)। এই অঞ্চলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মিউজিক-স্ট্রিমিং কোম্পানি (স্পটিফাই) এবং সবচেয়ে বড় বাই-নাও-পে-লেটার সার্ভিস (ক্লারনা) রয়েছে। নোভো নর্ডিস্ক ডেনমার্কের একটি ওয়েট-লস ড্রাগের [অজন কমানোর ওষুধ] উদ্ভাবক এবং ইউরোপের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানি, যদিও ডিসেম্বরে একটি নতুন ওষুধের ট্রায়ালের ফলাফল প্রত্যাশামত না হওয়ার কারণে এর শেয়ারের পতন হয়েছে।

গত দশকে নর্ডিক কোম্পানিগুলো ইউরোপের অন্য কোম্পানির চেয়ে ভাল পারফর্ম করেছে। চারটি দেশেই আর্থিক নয়, তালিকাভুক্ত এমন কোম্পানিগুলো গত দশ বছরে ইউরোপীয় গড়ের চেয়ে বেশি শেয়ারহোল্ডার রিটার্ন দিয়েছে।। বর্তমানে নর্ডিক কোম্পানিগুলো এমএসসিআই ইউরোপের প্রায় ১৩ শতাংশ, যা পাঁচ বছর আগে ছিল ১০ শতাংশ।

নর্ডিক কোম্পানিগুলো তাদের বৈশ্বিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গেও একই খাতে ভালো অবস্থানে রয়েছে। এই অঞ্চলের সবচেয়ে মূল্যবান ২০টি তালিকাভুক্ত কোম্পানির তুলনা করে দেখা যায়, সেগুলো প্রধান বিদেশী প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে সাত শতাংশ পয়েন্ট বেশি অর্জন করেছে এবং কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগে মুনাফা পাঁচ শতাংশ পয়েন্ট বেশি। ২০টি কোম্পানির মধ্যে ১৪টির জন্য কার্যকরী মুনাফার তুলনায় ঋণ কম ছিল। বার্ষিক বিক্রি বৃদ্ধির হার প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রায় সমান ছিল।

তবে, সব নর্ডিক ব্যবসা সফল হয়নি। নর্থভোল্ট।একটি ব্যাটারি প্রস্তুতকারী কোম্পানি। সম্প্রতি এটি দেউলিয়া হয়ে গেছে। নোকিয়ার হ্যান্ডসেট ব্যবসা আইফোনের কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে। নর্ডিক দেশের সফলতার পেছনে এক ধরনের ভাগ্যও রয়েছে। এই অঞ্চলটি বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদের অধিকারী, যেমন কাঠ, লোহা, এবং বিশেষ করে নরওয়ের তেল ও গ্যাস। তবুও, নর্ডিক কোম্পানিগুলির পারফরম্যান্স চমকপ্রদ।

একটি কারণ হলো, নর্ডিক ব্যবসায়ীরা তাদের ভাইকিং পূর্বপুরুষদের মতো বিদেশী অভিযাত্রী। “আমাদের ছোট হওয়া একটি আশীর্বাদ, কারণ এটি আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি বাধ্যতামূলক করে তোলে,” বলেছেন আরুপ অ্যান্ডারসেন।

নর্ডিক দেশের ১০টি সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানির গড় আয়ের মাত্র ২ শতাংশ ঘরোয়া আয় থেকে আসে, যেখানে বাকি ইউরোপের কোম্পানির জন্য এটি ১২ শতাংশ এবং আমেরিকার কোম্পানির জন্য ৪৬ শতাঙ্ঘস। প্যান্ডোরার প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা আন্দ্রেস বয়্যার বলেন, তার কোম্পানি কোপেনহেগেনে একটি দোকান থেকে সাত-আট বছরের মধ্যে একটি বৈশ্বিক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। আজ ডেনমার্ক তার কোম্পানির মাত্র ১ শতাংশ পন্য বিক্রি হয়।

দ্বিতীয় কারণ হলো, নর্ডিক কোম্পানিগুলো প্রযুক্তি গ্রহণে আগ্রহী ছিল দীর্ঘদিন ধরে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর লেগোর প্রতিষ্ঠাতা প্লাস্টিক-মোল্ডিং মেশিন দিয়ে খেলনা বানানোর পর কাঠের পরিবর্তে প্লাস্টিক ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেন (এটি এক বছরের বিক্রির সমান ছিল)। আজও সেই চেতনাটি বজায় আছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের যেসব কোম্পানি ১০ জনের বেশি কর্মী নিয়োগ করে, তাদের ৪৫ শতাংশ ক্লাউড-কোম্পিউটিং পরিষেবা ব্যবহার করে। নর্ডিক দেশগুলোর গড় ৭৩ শতাংশ।

ইউরোপীয় শহরগুলোর মধ্যে লন্ডন, প্যারিস এবং বার্লিনের পর স্টকহোমই সবচেয়ে বেশি ভেঞ্চার-ক্যাপিটাল অর্থায়ন পায়, যদিও এর জনসংখ্যা অনেক কম। নর্ডিক উদ্যোক্তারা আজকাল ঝুঁকি নিতে কম ভয় পান, কারণ তারা জানেন, ব্যর্থ হলে তারা ভালো বেকার ভাতা, এবং কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা ব্যবস্থার সুবিধা পাবেন।

সরকারি নীতি আরও একটি কারণ, যা নর্ডিক কোম্পানির সফলতায় ভূমিকা রেখেছে। যদিও নর্ডিক দেশগুলোর ব্যক্তিগত করের হার বেশি, কোম্পানি মুনাফার কর আমেরিকার মতোই। প্রতি বছর ওয়াশিংটনের হেরিটেজ ফাউন্ডেশন একটি অর্থনৈতিক স্বাধীনতার সূচক তৈরি করে। এটি বাজারের উন্মুক্ততা, শুল্ক হার এবং ব্যবসা পরিচালনার স্বাধীনতা দেখায়। ডেনমার্ক, নরওয়ে এবং সুইডেন শীর্ষ দশে থাকে। বিশেষ করে ডেনমার্কে কর্মী নিয়োগ এবং ছাঁটাই করা ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলির তুলনায় সহজ।

ডেনমার্ক সরকার ডিজিটাইজেশনে যে গুরুত্ব দিয়েছে, তা ব্যবসা চালানো সহজ করেছে। যেমন, মেয়ারস্কের প্রধান ভিনসেন্ট ক্লার্ক বলেছেন, “আপনি এক দিনে ভ্যাট নম্বর পেতে পারেন।” ফ্রান্সে এটির জন্য এক মাস লাগতে পারে।

চতুর্থ কারণ, নর্ডিক কোম্পানিগুলোর ধৈর্যশীল শেয়ারহোল্ডাররা। ম্যাককিনসির তথ্য অনুসারে, চার-পঞ্চমাংশ বড় নর্ডিক কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদী মালিকানা রয়েছে, যেখানে ইউরোপে এটি তিন-পঞ্চমাংশ এবং আমেরিকায় এটি এক-পঞ্চমাংশ।

ব্যবসায়ী পরিবারগুলোর ভূমিকা এখানে গুরুত্বপূর্ণ। মেয়ারস্ক এবং লেগো এখনো প্রতিষ্ঠাতা মোলার ও ক্রিস্টিয়ানসেন পরিবার নিয়ন্ত্রন করে, যদিও প্রতিদিনের পরিচালনার দায়িত্বে বাইরের লোকজন রয়েছেন। সুইডেনে ওয়ালেনবার্গ পরিবার ব্যাংকিং থেকে শুরু করে অ্যাটলাস কপকো ও এরিকসনসহ বিভিন্ন কোম্পানিতে বড় অংশীদার। অন্যান্য বড় নর্ডিক কোম্পানি যেমন কার্লসবার্গ ও নোভো নর্ডিস্ক নিয়ন্ত্রন করে অলাভজনক ফাউন্ডেশন।

এই ধরনের ব্যবস্থা বিদেশী কোম্পানগুলোকে নর্ডিক কোম্পানি অধিগ্রহণ করতে বাধা দিয়েছে, তাদের আরও বড় হওয়ার সময় দিয়েছে। এটি কোম্পানিগুলোকে দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যে বিনিয়োগ করতে সাহায্য করেছে। ম্যাককিনসি মনে করে, তালিকাভুক্ত চার-পঞ্চমাংশ নর্ডিক কোম্পানি তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে গবেষণা ও উন্নয়নে বেশি খরচ করে।

তবে, নর্ডিক ব্যবসায়িক মডেলটি ভবিষ্যতে চাপে পড়তে পারে। বিদেশী বাজারে তাদের নির্ভরতার কারণে নর্ডিক কোম্পানিগুলি ভূরাজনৈতিক জটিলতায় বেশি আক্রান্ত হতে পারে। কিছু কোম্পানি ইতোমধ্যে এই জটিলতায় পড়েছে। ২০২৩ সালে কার্লসবার্গের রাশিয়ার ব্যবসা সরকারের হাতে চলে যায় এবং “অস্থায়ী ব্যবস্থাপনা” করা হয়। ডিসেম্বরে, ব্রিউয়ার কোম্পানিটি সেই ব্যবসা দুটি স্থানীয় কর্মীকে অনেক কম দামে বিক্রি করতে সম্মত হয়। মেয়ারস্কের জাহাজ ও কন্টেইনার টার্মিনাল হুথি ক্ষেপণাস্ত্র-এর জন্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। এর ফলে তাদের জাহাজকে সুয়েজ খাল এড়িয়ে চলতে হচ্ছে, যা সময় ও খরচ বাড়িয়েছে।

বিদেশে ব্যবসা করা আরও কঠিন হতে পারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের সময়ে। নির্বাচনী প্রচারনায় ট্রাম্প সব দেশ থেকে আমদানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে এই হুমকি বাস্তবায়িত নাও হতে পারে। নির্বাচনের পর থেকে ট্রাম্প তার ক্ষোভ মেক্সিকো, কানাডা এবং চীনের দিকে মনোনিবেশ করেছেন। তবে আমেরিকান নীতিনির্ধারণে বাণিজ্যের প্রতি আরও সন্দেহজনক মনোভাব সৃষ্টি হবে, যা নর্ডিক কোম্পানির জন্য সমস্যা হতে পারে। কারণ, নর্ডিক কোম্পানির শীর্ষ দশটির এক-তৃতীয়াংশ বিক্রি হয় আমেরিকায়।

সব কিছু মোকাবিলা করতে নর্ডিক কোম্পানিগুলোর একটি বিশেষ গুণ প্রয়োজন। লেগোর প্রধান নির্বাহী নিলস ক্রিস্টিয়ানসেন চার্লস ডারউইনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, “এটা নীতিগতভাবে শক্তিশালী নয়। যারা পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়, তারা বেঁচে থাকে।” যখন বৈশ্বিক ব্যবসাগুলো ট্রাম্পের হোয়াইট হাউজে ফিরে আসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন এই কথাগুলো আগের চেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো খবর
Kurigram Songbad © 2025. All Rights Reserved.
Built with care by Pixel Suggest
error: Content is protected !!