1. editor1@kurigramsongbad.com : কুড়িগ্রাম সংবাদ :
  2. sifat@kurigramsongbad.com : sifat :
  3. siteaccess@pixelsuggest.com : কুড়িগ্রাম সংবাদ :
সাম্প্রতিক :
কুড়িগ্রাম-৪ আসনে জিয়া পরিবার থেকে নির্বাচনের দাবি যুবদল নেতা পলাশের রৌমারীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির লিফলেট বিতরণ রাজারহাটে জাতীয় বিজ্ঞান মেলার উদ্ধোধন ফুলবাড়ীর অপহৃত মেয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে উদ্ধার, গ্রেফতার- ২ কুড়িগ্রামে আ.লীগের দুই নেতা গ্রেফতার কোনো ধরনের শত্রুতা কারও পক্ষে ভালো নয়: বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের সেনাপ্রধান এইচএমপিভি ভাইরাস প্রতিরোধে বিমানবন্দর ও এয়ারলাইন্সগুলোকে নির্দেশনা ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়ার সময়ে রাজারহাটের একজন গ্রেফতার  ফুলবাড়ীতে অপহৃত মাদ্রাসা ছাত্রী ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে উদ্ধার কুড়িগ্রামে চর উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয় চাই নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত

১৮৩১ সালে পৃথিবীর জলবায়ু ঠান্ডা করে দেওয়া ‘রহস্যময় আগ্নেয়গিরি’ শনাক্ত করলেন গবেষকরা

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ২৪ বার পড়া হয়েছে

সিএনএন

১৮৩১ সালে একটি অজ্ঞাত আগ্নেয়গিরি এত শক্তিশালী অগ্নুৎপাত করেছিল যে, তা পৃথিবীর জলবায়ু ঠাণ্ডা করে দিয়েছিল। প্রায় ২০০ বছর পর বিজ্ঞানীরা সেই “রহস্যময় আগ্নেয়গিরি” শনাক্ত করতে পেরেছেন।

এই অগ্নুৎপাত ১৯শ শতকের সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে [বায়ুমন্ডলের দ্বিতীয় স্তর] অতি মাত্রায় সালফার ডাইঅক্সাইড ছড়িয়ে পড়ায় উত্তর গোলার্ধের বার্ষিক গড় তাপমাত্রা প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১.৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট) কমে গিয়েছিল। এটি ‘লিটল আইস এজ’-এর [ছোট বরফযুগ] শেষ পর্যায়ে ঘটে, যা গত ১০ হাজার বছরে পৃথিবীর সবচেয়ে ঠান্ডা সময়গুলোর একটি ছিল।

অগ্নুৎপাতের বছর জানা থাকলেও, আগ্নেয়গিরির অবস্থান বিজ্ঞানীদের কাছে এতদিন অজানা ছিল। সম্প্রতি গ্রীনল্যান্ডের বরফ স্তরের নমুনা সংগ্রহ করে, তার ভেতরে থাকা সালফার আইসোটোপ, ছাইয়ের গুড়া এবং ১৮৩১ থেকে ১৮৩৪ সালের মধ্যে জমা হওয়া আগ্নেয় কাঁচের টুকরো পর্যবেক্ষণ করে গবেষকরা এটি শনাক্ত করতে পেরেছেন।

ভূরসায়ন, রেডিওঅ্যাকটিভ ডেটিং এবং কম্পিউটার মডেলিং ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা ১৮৩১ সালের অগ্নুৎপাতের উৎস খুঁজে বের করেছেন। তারা সোমবার ‘প্রোসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সে’ সজার্নালে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন।

তাদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ওই অজ্ঞাত আগ্নেয়গিরির নাম ছিল জাভারিতস্কি এবং এটি সিমুশির দ্বীপে অবস্থিত। দ্বীপটি দ্বীপ কুরিল দ্বীপপুঞ্জের অংশ এবং রাশিয়া এবং জাপানের মধ্যকার একটি বিতর্কিত এলাকা। বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করার আগে খ্রিস্টপূর্ব ৮০০ সালে জাভারিতস্কির সর্বশেষ অগ্নুৎপাত হয়েছিল বলে ধারণা করা হতো।

যুক্তরাজ্যের সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেসে প্রধান গবেষণা ফেলো এবং মূল গবেষক ড. উইলিয়াম হাচিসন বলেন, “পৃথিবীর অনেক আগ্নেয়গিরি, বিশেষ করে যেগুলি দূরবর্তী অঞ্চলে রয়েছে, তাদের অগ্নুৎপাতের ইতিহাস সম্পর্কে আমাদের খুবই কম ধারণা রয়েছে।”

তিনি সিএনএনকে ইমেইলে জানান, “জাভারিতস্কি একটি অত্যন্ত দূরবর্তী দ্বীপে অবস্থিত, যা জাপান এবং রাশিয়ার মধ্যে। এখানে কোনো মানুষ বাস করে না এবং ঐতিহাসিক রেকর্ড খুব সীমিত, যা কেবল কয়েকটি জাহাজের ডায়েরি থেকে পাওয়া গেছে। জাহাজগুলো কয়েক বছরে একবার এই দ্বীপগুলোর পাশ দিয়ে যেত।”

১৯শ শতকের সময় জাভারিতস্কির কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য না থাকায়, কেউ আগে কখনও ভাবেননি যে এটি ১৮৩১ সালের অগ্নুৎপাতের সম্ভাব্য উৎস হতে পারে। গবেষনার ফলাফলে বলা হয়, গবেষকরা এমন আগ্নেয়গিরির দিকে নজর দিয়েছিলেন যা ইকুয়েটরের [পৃথিবীর কেন্দ্রীয় রেখা, যা পৃথিবীকে উত্তর এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ভাগ করে] কাছাকাছি ছিল, যেমন ফিলিপাইনের বাবুয়ান ক্লারো আগ্নেয়গিরি।

সুইজারল্যান্ডের বার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাইমেটোলজি ইউনিটের প্রধান ড. স্টেফান ব্রোনিম্যান বলেন, “এই অগ্নুৎপাতের বৈশ্বিক জলবায়ু প্রভাব ছিল, কিন্তু অনেক দিন ধরে এটিকে ভুলভাবে একটি উষ্ণ অঞ্চলের আগ্নেয়গিরির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল। গবেষণা থেকে এখন দেখা যাচ্ছে , অগ্নুৎপাতটি কুরিল দ্বীপপুঞ্জে হয়েছিল, উষ্ণ অঞ্চলে নয়।” তবে, ব্রোনিম্যান এই গবেষণায় যুক্ত ছিলেন না।

সম্প্রতি গ্রীনল্যান্ডের বরফ স্তরের নমুনা সংগ্রহ করে গবেষকরা এটি শনাক্ত করতে পেরেছেন। ছবি: মাইকেল সিগল

‘একটি আসল ইউরেকা মুহূর্ত’

গবেষকরা গ্রীনল্যান্ডের বরফ স্তরের পরীক্ষা করে ১৮৩১ সালে সালফার নির্গমন অ্যান্টার্কটিকার তুলনায় গ্রীনল্যান্ডে ৬.৫ গুণ বেশি ছিল বলে আবিষ্কার করেছেন। এ থেকে তারা ধারণা করেন, উত্তর গোলার্ধের একটি মধ্যরেখার আগ্নেয়গিরির বড় ধরনের অগ্নুৎপাত এই সালফারের উৎস ছিল।

গবেষক দলটি খুবই ক্ষুদ্র আগ্নেয়গিরির ছাই এবং ক্ষুদ্র আগ্নেয় কাচের টুকরা বিশ্লেষণ করেছেন। তাদের ফলাফল যখন ভূরসায়ন ডেটাসেটের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়, তখন জাপান এবং কুরিল দ্বীপপুঞ্জের আগ্নেয়গিরির সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। ১৯শ শতকের জাপানে আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের রেকর্ড ছিল। কিন্তু ১৮৩১ সালে কোনো বড় অগ্নুৎপাতের তথ্য ছিল না। তবে কুরিল দ্বীপপুঞ্জের আগ্নেয়গিরির নমুনাগুলো তাদেরকে জাভারিতস্কি ক্যালডেরার [বড় ধরনের আগ্নেয়গিরির ছোট গর্ত] দিকে নিয়ে যায়।

হাচিসন তার ইমেইলে বলেন, “যখন ল্যাবে দুটি ছাই একসঙ্গে বিশ্লেষণ করছিলাম– একটি আগ্নেয়গিরি থেকে এবং একটি বরফ স্তর থেকে– সেটা ছিল একটি আসল ইউরেকা মুহূর্ত।” সিমুশির দ্বীপে টেফরা বা আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের রেডিওকার্বন ডেটিং থেকে জানা যায়, এটি গত ৩০০ বছরের মধ্যে জমা হয়েছিল। ক্যালডেরার আয়তন এবং সালফার আইসোটোপ বিশ্লেষণ থেকে জানা গেছে, এটি ১৭০০ থেকে ১৯০০ সালের মধ্যে একটি বিশাল অগ্নুৎপাতের পর তৈরি হয়েছে, যা জাভারিতস্কিকে ১৮৩১ সালের রহস্যময় অগ্নুৎপাতের “প্রধান প্রার্থী” হিসেবে চিহ্নিত করে।

“এতো বড় এক অগ্নুৎপাত রিপোর্ট না হওয়ার বিষয়টি এখনো আমাকে অবাক করে,” হাচিসন যোগ করেন। তিনি বলেন, “হয়তো ১৮৩১ সালে ছাই পড়া বা বায়ুমণ্ডলীয় ঘটনাগুলোর রিপোর্ট রাশিয়া বা জাপানের কোনো একটি ধুলোময় লাইব্রেরির কোণে রয়েছে। এসব রেকর্ড নিয়ে পরবর্তী কাজ আমাকে সত্যিই উচ্ছ্বসিত করে।”

১৮৩১ সালে জাভারিতস্কি আগ্নেয়গিরির উদগীরণ ঘটে সিমুশির দ্বীপে। ছবি: ওলেগ ডার্কসেন

ছোট বরফযুগের অবসান

জাভারিতস্কির সঙ্গে ১৮০৮ থেকে ১৮৩৫ সালের মধ্যে আরো তিনটি আগ্নেয়গিরি অগ্নুৎপাত হয়েছিল। এগুলো ছোট বরফযুগের শেষ সময়কে চিহ্নিত করেছিল। ১৪০০-এর দশক থেকে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত একটি জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে এই বরফযুগ স্থায়ী হয়েছিল।

এই সময়, উত্তর গোলার্ধে বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ১.১ ডিগ্রি ফারেনহাইট (০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) কমে গিয়েছিল। কিছু জায়গায় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট (২ ডিগ্রি সেলসিয়াস) কম ছিল এবং ঠাণ্ডা কয়েক দশক ধরে স্থায়ী ছিল।

এই চারটি অগ্নুৎপাতের মধ্যে দুটি আগে চিহ্নিত হয়েছিল– ১৮১৫ সালে ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট তাম্বোরা এবং ১৮৩৫ সালে নিকারাগুয়ার কোসেগুইনা।

১৮০৮ কিংবা ১৮০৯ সালের অগ্নুৎপাতের আগ্নেয়গিরিটির নাম এখনো অজানা। জাভারিতস্কি যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে পৃথিবীর জলবায়ুকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে কুরিল দ্বীপপুঞ্জের আগ্নেয়গিরিগুলোর ভূমিকা নতুন করে প্রকাশ পায়।

১৮৩১ সালের অগ্নুৎপাতের পর উত্তর গোলার্ধে ঠাণ্ডা এবং শুষ্ক পরিস্থিতি তৈরি হয়। এর ফলে ভারত, জাপান এবং ইউরোপে ব্যাপক দুর্ভিক্ষ শুরু হয়, যা লক্ষ লক্ষ মানুষের ওপর প্রভাব ফেলেছিল।

হাচিসন বলেন, “এটি সম্ভব যে আগ্নেয়গিরির জলবায়ু শীতল হওয়ায় ফসল নষ্ট হয় এবং দুর্ভিক্ষ হয়। চলমান গবেষণার একটি লক্ষ্য হচ্ছে, এই দুর্ভিক্ষগুলো আগ্নেয়গিরির জলবায়ু শীতলীকরণের কারণে হয়েছিল কি না সেটি বোঝা। নাকি অন্যান্য সামাজিক-রাজনৈতিক কারণে হয়েছিল।”

১৯শ শতকের যে আগ্নেয়গিরিগুলোর অগ্নুৎপাত পৃথিবীর জলবায়ু ঠাণ্ডা করেছিল, সে সম্পর্কে দীর্ঘ সময় ধরে হারিয়ে যাওয়া একটি তথ্য এখন পাওয়া গেছে। ড. স্টেফান ব্রোনিম্যান বলেন, “গবেষণাটি হয়তো ছোট বরফযুগের শেষ পর্যায়ে আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ভূমিকা সম্পর্কে আমাদের বিশ্বাস শক্তিশালী করেছে।”

জাভারিতস্কির মতো পৃথিবীর অনেক আগ্নেয়গিরি বিচ্ছিন্ন স্থানে অবস্থিত এবং সেগুলো সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয় না। ফলে ভবিষ্যতে কোথায় এবং কখন বড় অগ্নুৎপাত ঘটবে তা পূর্বাভাস করা কঠিন বলেছে জানিয়েছেন মূল গবেষক ড. উইলিয়াম হাচিসন।

১৮৩১ সালের অগ্নুৎপাত থেকে শেখার মতো বিষয় হচ্ছে, বিচ্ছিন্ন স্থানে আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপের ফলে পৃথিবীজুড়ে বিপর্যয় ঘটতে পারে– যার জন্য মানুষ প্রস্তুত থাকে না।

হাচিসন বলেন, “আসলে পরবর্তী বড় অগ্নুৎপাত ঘটলে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি সমন্বিত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের নেই। এটি এমন কিছু, যা বিজ্ঞানী এবং সমাজ হিসেবে আমাদের চিন্তা করতে হবে।”

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো খবর
Kurigram Songbad © 2024. All Rights Reserved.
Built with care by Pixel Suggest
error: Content is protected !!