নাগেশ্বরী,(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে নিখোঁজ হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর আদিবা নামে ৭ মাসের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে শিশুদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ল্যাট্রিনের ভেতর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই শিশুর দাদা-দাদিকে আটক করেছে পুলিশ।
আদিবা উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়নের চাকেরকুটি ব্যাপারীটারী গ্রামের আমিনুল ইসলাম ও ফেরদৌসি আক্তার খুশি দম্পতির মেয়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে ঘরে ঘুমিয়ে ছিল আদিবা। এ সময় শিশুটির মা তাদের বড় মেয়ে আশফিয়া খাতুনকে (৭) বাড়ির টিউবওয়েলে গোসল করাতে নিয়ে যান। হঠাৎই ঘরে কেঁদে ওঠে শিশু আদিবা। কান্না শুনে শিশুর মা দৌড়ে ঘরে এসে আদিবাকে বিছানায় না পেয়ে খুঁজতে থাকেন। পরে তাঁর চিৎকারে স্বজন ও প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। পরে সবাই মিলে আশপাশে অনেক জায়গায় খুঁজেও আদিবার সন্ধান পাননি। পুলিশ খবর পেয়ে ওই দিনই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরদিন পুলিশ ফের ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে শিশুদের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। এক পর্যায়ে ঘরের পেছনে ল্যাট্রিনের ঢাকনা তুলে ল্যাটিনের কূপ থেকে আদিবার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় এ এলাকায় অলৌকিক কল্পকাহিনির গল্প ডালপালা মেলছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলামসহ কয়েকজনের ভাষ্য, শিশু আদিবাদের পরিবারের একজন পূর্বপুরুষ জিন নিয়ে খেলা করতেন। সম্ভবত এর প্রভাবে বেশ কিছুদিন ধরে এ পরিবারে সম্প্রতি হঠাৎ করে ঘরে, বিছানা ও পরিধেয় কাপড়ে আগুন লাগাসহ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ শিশুর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটল।
সরেজমিন দেখা যায়, সন্তান হারিয়ে পাগলপ্রায় আমিনুল ইসলাম ও ফেরদৌসি আক্তার খুশি। অনবরত কাঁদছিলেন তারা। মাঝে মাঝে শোকে বিহ্বল হয়ে প্রলাপ বকছিলেন। তাদের সান্ত্বনা জানাতে আসা স্বজন ও প্রতিবেশীরা ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের শনাক্ত ও শাস্তির দাবি জানান।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দাদা মোহাম্মদ আলী ও দাদি আমেনা বেগমকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনার রহস্য উন্মোচনে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply