আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
এবার অভিশংসনের মুখে পড়তে যাচ্ছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সু।
ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সু প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে ৩ ডিসেম্বর ইওল তার দেশে সামরিক আইন জারি করার কারণে সংসদীয় ভোটের পরে অভিশংসিত হন। এখন প্রধানমন্ত্রী ও ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হানকেও অপসারণ করতে চান বিরোধী দলীয় এমপিরা। তাদের যুক্তি, তিনি ইউনের অভিশংসন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার এবং তাকে বিচারের আওতায় আনার দাবি মানতে অস্বীকার করছেন।
শুক্রবার হানকে অভিশংসনে পার্লামেন্টে প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন বিরোধী সংসদ সদস্যরা। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, হান ইচ্ছাকৃতভাবে বিদ্রোহের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে বিশেষ তদন্ত এড়িয়ে যাচ্ছেন এবং সাংবিধানিক আদালতের তিনজন বিচারকের নিয়োগ প্রত্যাখ্যান করার ক্ষেত্রে তার উদ্দেশ্য স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেছেন।
এই ধরনের কাজ ‘একজন সরকারি কর্মকর্তার আইন সমুন্নত রাখা এবং জনগণের সেবা করার দায়িত্বের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করা হয় প্রস্তাবে।
হান অপসারিত হলে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন অর্থমন্ত্রী চোই সাং-মোক।
বর্তমান বিরোধের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সাংবিধানিক আদালতের গঠন, যা ইউনকে অভিশংসনের সংসদীয় সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে কি না তা নির্ধারণ করবে।
সাংবিধানিক আদালতে বর্তমানে তিনজন বিচারকের অভাব রয়েছে। আদালত বেঞ্চের ছয় সদস্য নিয়েই এগিয়ে যেতে পরবে। তবে এক্ষেত্রে একটি মাত্র ভোট বিপক্ষে পড়লেই তা ইউনকে পুনর্বহালের জন্য যথেষ্ট হবে।
বিরোধীরা চায় হান নয় সদস্যের বেঞ্চ পূরণের জন্য আরও তিনজন মনোনীত ব্যক্তিকে অনুমোদন দিন। কিন্তু তিনি এখনও এটি করতে অস্বীকার করে চলেছেন। মূলত এ নিয়ে উভয় পক্ষই অচলাবস্থায় পড়েছে।
ডেমোর্ক্যাটিক পার্টির আইনপ্রণেতা জো সিউং-লে বলেছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে তিন বিচারপতিকে নিয়োগ দিতে হানের অস্বীকৃতিতে ‘তার আসল রং বেরিয়ে পড়েছে’।
জো বলেন, এই প্রত্যাখ্যান ‘সংবিধান ও আইনের প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ’। তার দল ‘সাংবিধানিক শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার এবং রাষ্ট্রীয় বিষয়াদি স্থিতিশীল করতে’ হানকে অভিশংসনের চেষ্টা করবে।
হান বলেছেন যে তার ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টি (পিপিপি) এবং বিরোধী দল মনোনীত প্রার্থীদের বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছলেই তিনি বিচারকদের নিয়োগ প্রত্যয়ন করবেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সংবিধান এবং আইনে সুরক্ষিত নীতি হলো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগসহ প্রেসিডেন্টের উল্লেখযোগ্য একচ্ছত্র ক্ষমতা প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকা।’
৭৫ বছর বয়সী সাবেক এই আমলা বলেন, ‘জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী জাতীয় পরিষদে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলগুলোর একটি ঐক্যমত থাকা চাই।’
Leave a Reply