লাইফস্টাইল ডেস্ক:
দেশজুড়ে জেঁকে বসেছে শীত। বিগত সপ্তাহে ফুরফুরে মেজাজে ঘুরে বেড়ানো গেলেও গত দুদিন গায়ে চাপাতে হচ্ছে শীতের পোশাক। তাপমাত্রার পারদ কমছে ধীরে ধীরে। আর এসময় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন পরিবারের প্রবীণরা। ঋতু বদলের এই সময়টায় বয়স্কদের মধ্যে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। বাড়ে বাতের ব্যথা, হাঁপানি, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের রোগ।
শীতকালে বয়স্ক বা বৃদ্ধদের সুস্থ থাকা জরুরি। এজন্য কী কী নিয়ম মানবেন, চলুন জানা যাক-
ভোরে প্রাতর্ভ্রমণ নয়
ভোর বেলায় হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। কিন্তু শীতের সময় কাজটি করা চলবে না। তাহলে চট করে ঠান্ডা লেগে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে। সকালে হাঁটতে হলে সকাল ৭টার পর হাঁটতে দিন। কিংবা বিকেল ৩টার পর বয়স্কদের হাঁটতে নিয়ে যান। সন্ধ্যায় ঘরের বাইরে না থাকাই ভালো। বাইরে বের হলে বৃদ্ধরা যেন অবশ্যই মাস্ক পরেন, তা নিশ্চিত করুন। শীতে দূষণের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। তাই মাস্ক পয়রা জরুরি।
শীতের রোদ গায়ে লাগান
সকালে বা বিকেলে যখনই প্রবীণরা বাইরে বের হবেন খেয়াল রাখবেন যেন গায়ে গরম জামাকাপড় থাকে। বিশেষ করে টুপি ও মাফলার খুবই জরুরি। পায়ে মোজা থাকলে আরও ভালো হয়। শীতের রোদ গায়ে লাগানো খুবই জরুরি। এতে ভিটামিন ডি মেলে। শীতের দুপুরে রোদে বেশ কিছুক্ষণ থাকতে পারলে হাত-পায়ের ব্যথাও কমবে।
স্বাস্থ্যকর খাবার
বৃদ্ধদের একেবারে বেশি ভারী খাবার না দিয়ে বারে বারে অল্প করে খেতে দিতে হবে। শীতের বাজারে হরেকরকম সবজি মেলে। খাবার পাতে এসব সবজি রাখতে হবে। এক থেকে দুই কাপ ভাত (শরীর বুঝে), এক বাটি ডাল, অল্প তেলে রান্না করা এক বাটি সবজি, মাছ/মাংস অথবা ডিম রোজকার ডায়েটে রাখলে ভালো হয়। মাংস খেলে সবজি দিয়ে স্ট্যু বানিয়ে খাওয়ান। তেল যতটা সম্ভব কম খাওয়া যায়, ততই ভালো। খাবার পাতে কাঁচা লবণ খাওয়া একদমই চলবে না। রান্নায় চিনির মাত্রা কমাতে হবে। খাওয়ার পরে খেতে দিতে পারেন টক দই।
দুপুরের খাবারের এক ঘণ্টা পরে লেবু জাতীয় ফল খেলে ভালো হয়। রোজকার খাদ্যতালিকায় ড্রাই ফ্রুটস রাখতে পারেন। একটি খেজুর, দু’টি করে আখরোট, কাঠবাদাম, চিনাবাদাম, কিশমিশ খাওয়া যেতে পারে।
রক্তচাপ মাপুন নিয়মিত
ঋতু পরিবর্তনে রক্তচাপের মাত্রাও পরিবর্তিত হয়। গ্রীষ্মে যেমন রক্তচাপের মাত্রা উপরের দিকে থাকে, শীতে আবার তা কম থাকে। কিন্তু শীতকালে যেহেতু তাপমাত্রা স্বাভাবিক ভাবেই কম থাকে, ফলে রক্তনালি সংকুচিত হয়ে পড়ে। তাই শীতকালে বয়স্কদের রক্তচাপ নিয়মিত মাপা উচিত।
নিয়মিত ব্যায়াম
বৃদ্ধ ব্যক্তিদের শক্তিশালী ও স্থিতিশীল থাকতে সাহায্য করে নিয়মিত ব্যায়াম। কার জন্য কোন ব্যায়াম উপযুক্ত তা জানতে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রবীণকে যদি একাধিক ওষুধ খেতে হয়, তাহলে তাদের ওষুধ সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং সেগুলো সঠিকভাবে খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। শ্বাসের সমস্যা থাকলে, শীতে তা বাড়তে পারে। হাতের কাছে ইনহেলার অবশ্যই রাখবেন।
শীতে বয়স্কদের যত্নে সচেতন হোন। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে চলুন। এতে বড় ধরনের স্বাস্থ্য জটিলতা এড়িয়ে চলা যাবে।
Leave a Reply