1. editor1@kurigramsongbad.com : কুড়িগ্রাম সংবাদ :
  2. sifat@kurigramsongbad.com : sifat :
  3. siteaccess@pixelsuggest.com : কুড়িগ্রাম সংবাদ :
সাম্প্রতিক :
তিস্তার ন্যায্য হিস্যার পানি ও মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নে দুলুর ৪৮ ঘন্টার কর্মসূচি ঘোষনা  ইশতিয়াক-রাব্বীর নেতৃত্বে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মিউজিক অ্যাসোসিয়েশন রৌমারীতে সরকারি বই চুরির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন রৌমারী থেকে বিনামূল্যে সরকারি বই পাচার চেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার ৩ এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধা তালিকায় ১১তম তরঙ্গকে উলিপুরে সংবর্ধনা বেরোবিতে ঢাবির কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত ইবিতে ‘আন্তর্জাতিক কৃষি ও আগামীর মানব সভ্যতা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত রাজারহাটে শহীদ রাউফুন বসুনিয়া পাঠাগারের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ নেতানিয়াহুকে গোপনে অস্ত্র দিতেন এরদোয়ান: ইরানের গণমাধ্যম মুলতানে হ্যাটট্রিক করে ইতিহাস গড়লেন নোমান আলী

সঙ্গীর খোঁজে ৮,০০০ মাইলেরও বেশি পথ পাড়ি পুরুষ তিমির

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৮৮ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

এল পাইস

বিশ্বে এমন অনেক প্রাণী আছে যারা প্রজনন ও সঙ্গী পেতে দীর্ঘ পথ ভ্রমণ করে। হাম্পব্যাক তিমি সেই প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। তারা প্রজনন ও সঙ্গেী পেতে নিরক্ষীয় অঞ্চলের উষ্ণ পানিতে কাটায় এ তিমিগুলো।

তারপর হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে আর্কটিক, আটলান্টিক, উত্তর প্রশান্ত মহাসাগর বা দক্ষিণ গোলার্ধে অ্যান্টার্কটিকার আশেপাশের বরফাচ্ছন্ন সাগরে চলে যায়। সেখানে তারা অ্যানচোভি মাছের পোনা, হেরিং বা সার্ডিন, অথবা অ্যান্টার্কটিক মহাসাগরে, কৃল নামের ছোট চিংড়ি-জাতীয় ক্রাস্টেশান খায়।

তবে সম্প্রতি একদল সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী রয়াল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স নামে একটি বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশ করেছেন, একটি তিমি স্বাভাবিক পথ পাড়ি দেওয়ার বদলে সবচেয়ে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়েছে। এ পুরুষ তিমিটিকে প্রথমে দেখা গিয়েছিল প্রশান্ত মহাসাগরের কলম্বিয়া উপকূলে। সম্প্রতি তাকে ভারত মহাসাগরের জানজিবার উপকূলের কাছে দেখা গেছে। এ দুটি স্থানের দূরত্ব আট হাজার মাইল। এ তিমিটি প্রায় আগের রেকর্ডকৃত দূরত্বের চেয়ে ২৫০০ মাইল বেশি পথ পাড়ি দিয়েছে।

যদিও আর্কটিক টার্নের মতো কিছু পাখি এক বছরে পৃথিবীর এক মেরু থেকে আরেক মেরুতে ভ্রমণ করতে সক্ষম। কিন্তু স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে হাম্পব্যাক তিমির (মেগাপ্টেরা নভাএঙ্গ্লিয়াই) মতো এত দীর্ঘ ভ্রমণ করে না। একসময় এ হাম্পব্যাক প্রজাতির তিমি প্রচুর পরিমাণে দেখা যেত। কিন্তু শতাব্দীর পর শতাব্দী এ তিমিগুলো শিকার করায় তারা প্রায় বিলুপ্ত পথে চলে গিয়েছিল। তবে ১৯৬০-এর দশকে তিমি শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। যার কারণে তাদের সংখ্যা কিছুটা পুনরুদ্ধার করা গেছে। তারপরও এ সংখ্যা আগের তুলনায় মাত্র পাঁচ শতাংশ।

এ হাম্পব্যাক তিমির গতিবিধি অনুসরণ করে দেখা গেছে, তারা গ্রীষ্মকাল কাটায় উত্তরের বা দক্ষিণের ঠান্ডা অঞ্চলে। আর শীতের আগমনের সাথে সাথে তারা নিরক্ষীয় বা আরও উষ্ণ অঞ্চলগুলোর দিকে চলে আসে। ঋতুর পার্থক্যের কারণে, উত্তর গোলার্ধে থাকা তিমির প্রজাতিগুলো দক্ষিণ গোলার্ধে থাকা তিমিদের সঙ্গে মেশে না। তাদের অভিবাসন প্রায় সরলরেখায় ঘটে, যদিও সঠিকভাবে বলতে গেলে, তারা একই দ্রাঘিমাংশ বরাবর চলে।

আন্তর্জাতিক তিমি কমিশনের শনাক্তকৃত সাতটি বড় জনসংখ্যার মধ্যে দক্ষিণ গোলার্ধের তিমিগুলো গ্রীষ্মকালে তাদের নির্দিষ্ট অ্যান্টার্কটিক মহাসাগরীয় অঞ্চলে চলে যায়। উদাহরণস্বরূপ, শত শত তিমি যারা কলম্বিয়া এবং ইকুয়েডরের উষ্ণ উপকূল বরাবর সঙ্গীদের নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, তারা আমেরিকান মহাদেশ বরাবর ভ্রমণ করে অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপে পৌঁছায়, যা মানচিত্রে তাদের ঠিক নিচে। শীত এলে গর্ভবতী স্ত্রী তিমিগুলো উত্তর দিকে ফিরে যায় সন্তান জন্ম দিতে, আর পুরুষ তিমিগুলো সঙ্গী খুঁজতে ফিরে যায়। এ কারণেই এইচডাব্লিউ-এমএন১৩০০৮২৮ নামকরণ করা পুরুষ তিমিটি এতোটাই বিশেষ।

মোজাম্বিক ও দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকায় মহাসাগরীয় গবেষণা পরিচালনাকারী সংস্থা বাজারুতো সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক স্টাডিজের (বিসিএসএস) জীববিজ্ঞানী একেতেরিনা কালাশনিকোভা এ বিষয়ে বলেন, “এই পুরুষ তিমিটিকে কলম্বিয়ার উপকূলে দুইবার দেখা গিয়েছিল এবং পাঁচ বছর পর তাকে জানজিবার উপকূলে আবার দেখা যায়। এটি হাম্পব্যাক তিমির জন্য প্রজনন ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে সর্বাধিক রেকর্ডকৃত অর্দোড্রোমিক দূরত্ব [গোলকের দুই বিন্দুর মধ্যে সবচেয়ে ছোট পথ]।

এই পদ্ধতিতে মাপলে দেখা যায়, তিমিটি পৃথিবী গোলকের উপর সরলরেখায় অন্তত ১৩,০৪৬ কিলোমিটার (৮,১০৬ মাইল) ভ্রমণ করেছে। এত দীর্ঘ ভ্রমণ এই প্রাণীদের মধ্যে আগে কখনো রেকর্ড করা হয়নি।

তবে, এই গবেষণার প্রধান লেখক কালাশনিকোভা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে তিমিটির ভ্রমণ আরও দীর্ঘ ছিল, কিন্তু তা প্রমাণ করার কোনো উপায় নেই।

২০২২ সালের ২২ আগস্টে দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে জানজিবার চ্যানেলে উংজুয়া দ্বীপের উপকূলে দেখা মেলে তিমিটির। ছবি: এল পাইস।

এইচডাব্লিউ-এমএন১৩০০৮২৮ তিমিটিকে প্রথম ২০১৩ সালের জুলাই মাসে কলম্বিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরের ট্রিবুগা উপসাগরে দেখেছিলেন জীববিজ্ঞানীরা। তাকে আবার ২০১৭ সালের গ্রীষ্মের সময় ৪৮ মাইল দূরে কলম্বিয়ার সোলানো উপসাগরে দেখা যায়। হ্যাপি হোয়েল রেজিস্ট্রির সংরক্ষিত তথ্য অনুসারে, তিমিটিকে আবার পাওয়া যায় পাঁচ বছর পরে এবং অনেক দূরে। ২০২২ সালের ২২ আগস্টে দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে জানজিবার চ্যানেলে উংজুয়া দ্বীপ এবং তানজানিয়ার মূলভূমির উপকূলে দেখা যায় তিমিটিকে।

কালাশনিকোভা জানান, রেকর্ডগুলো তিমিটির বিভিন্ন অঙ্গের তুলে রাখা ছবির মাধ্যমে যাচাই করা হয়। বিশেষ করে তিমির লেজ ও পাখনার ছবি আঙ্গুলের ছাপের মতো কাজ করে। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, “প্রতিটি প্রাণী পেছনের কন্ট্যুর, রঙের নিদর্শন এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক খাঁজ পরীক্ষা করে চিহ্নিত করা যায়।”

তবে কলম্বিয়া থেকে জানজিবারে তিমিটি কীভাবে পৌঁছালো, সে প্রশ্নের উত্তর নেই গবেষকদের কাছে। তবে তারা ধারণা করছেন প্রতি বছর অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপের যাত্রায় তিমিটিকে পূর্ব দিকে অ্যান্টার্কটিকার উপকূল বরাবর এবং আফ্রিকার শিংয়ের কাছে তানজানিয়ার উপকূল পর্যন্ত যেতে হয়েছিল। যদিও থিওরিটিক্যালি সে পশ্চিম দিক দিয়ে বিপরীত পথে যেতে পারত। কিন্তু সেখানে বেশ কয়েকটি বাধা রয়েছে। যেমন- অ্যান্টার্কটিক মহাসাগরে কিছু চক্রাকার স্রোত দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এগুলো পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী প্রবাহ। এগুলোর বিপরীতে যাওয়া অত্যন্ত কঠিন। অন্যদিকে, সে যদি প্রবাহের সাথে চলে, তাহলে অনেক সহজ হবে। তার ফেরার পথে, যুক্তি অনুযায়ী, এটি সম্ভব।

কালাশনিকোভা বলেন, এপথে তিমিদের যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত তরঙ্গের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে অন্যান্য তিমির তুলনায় হাম্পব্যাক তিমির যোগাযোগ তরঙ্গ অত্যন্ত জটিল এবং তারা বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে বিভিন্ন উপভাষায় কথা বলে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিটি গোষ্ঠীর নিজস্ব তরঙ্গ আছে।

চিলির সেটুয়াতে তিমি বিশেষজ্ঞ জর্জ অ্যাসেভেদো ছিলেন এই গবেষণার একজন লেখক। অ্যাসেভেদো সম্প্রতি ইমেইলের মাধ্যমে জানান, “একটি গোষ্ঠী থেকে অন্য গোষ্ঠীতে কিছু তিমির মাইগ্রেশন খুব বেশি ঘন ঘন ঘটে না।” তবে দক্ষিণ গোলার্ধে দিন দিন আরও বেশি তিমির চলাচল বাড়ছে বলে জানা গেছে। তার মতে, “হাম্পব্যাক তিমির জনসংখ্যা এখনো বৃদ্ধি পাচ্ছে।” তিনি ধারণা করছেন এ পথটিতে আগে তিমির চলাচল বেশি ছিল। তিমি শিকার বেড়ে যাওয়া সে পথে তিমি কমে গিয়েছিল বা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।”

এ হাম্পব্যাক তিমি এখন পর্যন্ত রেকর্ডকৃত সবচেয়ে দীর্ঘ এবং অস্বাভাবিক মাইগ্রেশন করেছে। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এটি ঘটেছে।

২০১৭ সালে কলম্বিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরে দেখা তাকে গিয়েছিল এবং পরে কয়েক বছর পর জানজিবারের উপকূলে ভারত মহাসাগরে আবার দেখা যায়, অন্তত ১৩,০০০ কিলোমিটার দূরে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, এই ঐতিহাসিক যাত্রাটি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খাদ্য মজুদ হ্রাস পেতে পারে অথবা হতে পারে সঙ্গী খুঁজে পাওয়ার অভিযান।

তানজানিয়া সেটুয়েটান প্রোগ্রামের একাতেরিনা কালাশনিকোভা বলেন, “এ কাণ্ডটি এই উচ্চাভিলাষী অভিবাসী প্রজাতির জন্যও সত্যিই চমকপ্রদ এবং অস্বাভাবিক।”

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো খবর
Kurigram Songbad © 2025. All Rights Reserved.
Built with care by Pixel Suggest
error: Content is protected !!