1. editor1@kurigramsongbad.com : কুড়িগ্রাম সংবাদ :
  2. sifat@kurigramsongbad.com : sifat :
  3. siteaccess@pixelsuggest.com : কুড়িগ্রাম সংবাদ :
সাম্প্রতিক :
কুড়িগ্রাম-৪ আসনে জিয়া পরিবার থেকে নির্বাচনের দাবি যুবদল নেতা পলাশের রৌমারীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির লিফলেট বিতরণ রাজারহাটে জাতীয় বিজ্ঞান মেলার উদ্ধোধন ফুলবাড়ীর অপহৃত মেয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে উদ্ধার, গ্রেফতার- ২ কুড়িগ্রামে আ.লীগের দুই নেতা গ্রেফতার কোনো ধরনের শত্রুতা কারও পক্ষে ভালো নয়: বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের সেনাপ্রধান এইচএমপিভি ভাইরাস প্রতিরোধে বিমানবন্দর ও এয়ারলাইন্সগুলোকে নির্দেশনা ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়ার সময়ে রাজারহাটের একজন গ্রেফতার  ফুলবাড়ীতে অপহৃত মাদ্রাসা ছাত্রী ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে উদ্ধার কুড়িগ্রামে চর উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয় চাই নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত

১৩ বছর বয়সে বাল্যবিবাহ রুখে দিয়ে আজ উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথে সুচিত্রা রাণী

  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৪৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বালারহাট আদর্শ স্কুল এন্ড কলেজের মানবিক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী স্মৃতি রানী। দরিদ্র কৃষক সুভাষ চন্দ্রের ছোট মেয়ে সে। পরিবারের সম্বল বলতে জরাজীর্ণ এক ভিটেমাটি।

অভাবী সংসারের খরচ কমাতে বড় মেয়ে সাথী রানীকে বাল্যবিয়ে দিয়েছিলেন সুভাষ চন্দ্র। সেই সংসারে প্রতিনিয়ত লেগে থাকতো অশান্তি। বিয়ের পর সাথী রানীর প্রতিবন্ধী এক সন্তান জন্ম হলেও মৃত্যু হয় সেই শিশুর। দিদির সংসারের সেই চিত্র দাগ কেটেছিলো স্মৃতি রানীর মনে।

বাল্যবিয়ের এমন কুফল দেখে স্মৃতি ভাবতে থাকেন, কিভাবে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা যায়। একসময় গ্রামের লোকজনের কথায় বাবা-মা স্মৃতি রানীর বিয়ে ঠিক করলে বাবা মাকে বুঝিয়ে নিজের বিয়ে নিজেই ভেঙে দেন স্মৃতি। অভাবী সংসারে অনেক কষ্টে চালিয়ে যান নিজের লেখাপড়া।

চাইল্ড নট ব্রাইট প্রকল্পের প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সহযোগিতায় পরিচালিত মহিদেব যুব সমাজ কল্যাণ সমিতি (M.J.S.K.S) এর সহযোগিতায় ২০২৩ সালের মার্চ মাসে এক মাসের দর্জি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন স্মৃতি রানী।

প্রশিক্ষণ শেষে সেখান থেকে সাত হাজার টাকা পেলে তা দিয়ে কিনেন একটি সেলাই মেশিন। এরপর শুরু হয় স্মৃতির লেখাপড়া ও জীবন যুদ্ধের সংগ্রাম, আশেপাশে গ্রামের মানুষের কাপড় কেটে সেলাই করে যা আয় হয় তা দিয়েই ভালোভাবে চলতে থাকে স্মৃতির লেখাপড়া। এছাড়া কাপড় সেলাই করে লেখাপড়ার খরচের পাশাপাশি বাবা-মাকেও আর্থিকভাবে সহযোগিতা করতে থাকেন স্মৃতি রানী। লেখাপড়া চালিয়ে ক্ষান্ত হননি স্মৃতি রানী, ২০২৪ সালের আবারো মহিদেব থেকে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে এলাকায় গ্রুপিংয়ের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে থাকেন স্মৃতি রানী। বর্তমানে নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের ইয়ুথ চ্যাম্পিয়ন স্মৃতি রানী তার গ্রুপে ৬০ জন যুব সংগঠনের সদস্যরা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কাজ করছেন। স্মৃতি এখন বালারহাট আদর্শ স্কুল এন্ড কলেজের মানবিক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী, লেখাপড়া শেষ করে হতে চান অ্যাডভোকেট।

স্মৃতি রানী জানান, বাল্যবিবাহের কারণে একটি মেয়ের কি ধরনের সমস্যা হয় তা আমার বড় বোনের সাংসারিক জীবন দেখে বুঝেছি। আমার বাবা মা গরিব মানুষ বড় বোনের মত আমাকেও বাল্যবিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি সেটি প্রতিরোধ করে এখন নিজেই উপার্জন করে লেখাপড়া চালানোর পাশাপাশি আমাদের গ্রাম ও ইউনিয়নের বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কাজ করছি। আমাকে এই কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন মহিদেব যুব সমাজ কল্যাণ সমিতি। এখন আমাদের ইউনিয়নে বাল্যবিবাহের হার অনেক কম।

স্মৃতি দিদি আমাদেরকে গ্রুপের মাধ্যমে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে, আমরা একসাথে এখন আমাদের গ্রামের ও ইউনিয়নে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কাজ করছি।

স্মৃতির বাবা-মা জানান, আমরা অনেক গরিব মানুষ তেমন লেখাপড়া জানি না কম বয়সে বড় মেয়েটির বিয়ে দিয়েছি তার সংসারে অনেক অশান্তি চলছে। গ্রামের মানুষের কথায় ছোট মেয়েকে বিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। মেয়ে কম বয়সে বিয়ে করতে রাজি হয়নি। এখন দর্জি কাজ করে নিজের লেখাপড়ার খরচ নিজেই চালিয়ে যাচ্ছে পাশাপাশি আমাদেরকেও সাহায্য করছে।

স্মৃতিকে স্বাবলম্বী ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে প্রশিক্ষণ দেয়া চাইল্ড নট ব্রাইট প্রকল্পের প্লান ইন্টারন্যাশনালের টেকনিক্যাল অফিসার ইলিয়াস আলী বলেন, সমাজে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কাজ করছেন তারা। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে দরিদ্র কিশোরীদের স্বাবলম্বী করছেন তারা।

নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাছেন আলী জানান, বাল্যবিবাহ বাংলাদেশের একটি জটিল সামাজিক সমস্যা যা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের পথে বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এটি শুধুমাত্র একটি কুসংস্কার প্রথা নয় বরং এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে স্বাস্থ্যগত সমস্যা, শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়া এবং দারিদ্র্যচক্র আবদ্ধ হওয়ার মতো ভয়াবহ পরিণতি। স্মৃতি রানী বিভিন্ন গ্রুপের মাধ্যমে নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে যে কাজ করছেন তার জন্য আমি তাকে সাধুবাদ জানাই। এখন আমার ইউনিয়নে আগের চেয়ে অনেক অংশে বাল্যবিয়ে কমে গেছে।

স্মৃতি দিদি আমাদেরকে গ্রুপের মাধ্যমে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে, আমরা একসাথে এখন আমাদের গ্রামের ও ইউনিয়নে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কাজ করছি।

স্মৃতির বাবা-মা জানান, আমরা অনেক গরিব মানুষ তেমন লেখাপড়া জানি না কম বয়সে বড় মেয়েটির বিয়ে দিয়েছি তার সংসারে অনেক অশান্তি চলছে। গ্রামের মানুষের কথায় ছোট মেয়েকে বিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। মেয়ে কম বয়সে বিয়ে করতে রাজি হয়নি। এখন দর্জি কাজ করে নিজের লেখাপড়ার খরচ নিজেই চালিয়ে যাচ্ছে পাশাপাশি আমাদেরকেও সাহায্য করছে।

স্মৃতিকে স্বাবলম্বী ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে প্রশিক্ষণ দেয়া চাইল্ড নট ব্রাইট প্রকল্পের প্লান ইন্টারন্যাশনালের টেকনিক্যাল অফিসার ইলিয়াস আলী বলেন, সমাজে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কাজ করছেন তারা। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে দরিদ্র কিশোরীদের স্বাবলম্বী করছেন তারা।

নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাছেন আলী জানান, বাল্যবিবাহ বাংলাদেশের একটি জটিল সামাজিক সমস্যা যা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের পথে বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এটি শুধুমাত্র একটি কুসংস্কার প্রথা নয় বরং এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে স্বাস্থ্যগত সমস্যা, শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়া এবং দারিদ্র্যচক্র আবদ্ধ হওয়ার মতো ভয়াবহ পরিণতি। স্মৃতি রানী বিভিন্ন গ্রুপের মাধ্যমে নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে যে কাজ করছেন তার জন্য আমি তাকে সাধুবাদ জানাই। এখন আমার ইউনিয়নে আগের চেয়ে অনেক অংশে বাল্যবিয়ে কমে গেছে।

 

এই বিষয়ে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সোহেলী পারভীন জানান, বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে মহিদেব যুব সমাজ কল্যাণ সমিতির স্মৃতি রানী সহ যুব সংগঠনের সদস্যরা যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তার জন্য আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। সেই সঙ্গে সবাইকে সচেতন হয়ে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কাজ করার আহ্বান জানাই।

 

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো খবর
Kurigram Songbad © 2024. All Rights Reserved.
Built with care by Pixel Suggest
error: Content is protected !!