মাইদুল ইসলাম মামুন, বিশেষ প্রতিনিধি:
ধূসর কুয়াশায় ঢাকা প্রান্তর, শীতল হাওয়ার মৃদু স্পর্শে স্নিগ্ধ সকাল। সূর্যের দেখা নেই, তবুও জীবন থেমে নেই, কৃষকের মাঠ আর বাজারের ভিড়ে ভরা দিন।
আজ ৫ ডিসেম্বর ২০২৪, বাংলা ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১। কুড়িগ্রামের প্রকৃতি আজ যেন এক শীতের রাজ্যে পরিণত। ভোর থেকেই কুয়াশার সাদা চাদরে আচ্ছন্ন পুরো জেলা। তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সূর্য লুকিয়ে, শুধু কুয়াশা আর ঠান্ডার শীতল বাতাস।
শীতের আগমনে জেলার গ্রামাঞ্চল যেন ব্যস্ততার অন্য এক মাত্রা পেয়েছে। মাঠে চলছে ধান কাটার কাজ। কৃষকের ঘামজড়ানো পরিশ্রমে জীবনের স্পন্দন। অন্যদিকে খেজুর রস সংগ্রহের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। মাটির হাঁড়ি থেকে টপটপ করে পড়ছে রস, যা রূপ নেবে সুস্বাদু গুড়ে।
শীতের সকালে চায়ের দোকানে গরম চা আর ভাপা পিঠার মিষ্টি ঘ্রাণে জমে উঠছে আড্ডা। চিতই পিঠার সঙ্গে খেজুর গুড়ের স্বাদ যেন শীতের সকালে বাড়তি আনন্দ যোগ করছে। ছোটরা মোটা সোয়েটার পরে খেলায় ব্যস্ত, আর বৃদ্ধদের আড্ডা জমে উঠেছে আগুন পোহানোর আসরে।
হাট-বাজারে শীতের সবজির কেনাবেচা পুরোদমে চলছে। টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম—সবজির পসরা যেন গ্রামীণ জীবনের রঙ ফুটিয়ে তুলেছে। তবে শীতের তীব্রতা বাড়ায় শীতবস্ত্রের চাহিদা বেড়েছে, বিশেষত দরিদ্র মানুষের মধ্যে।
শীতের সৌন্দর্যের পাশাপাশি এ ঋতু সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনে বাড়তি কষ্ট বয়ে আনে। তাই সামর্থ্যবানদের উচিত দরিদ্রদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের শীত নিবারণের ব্যবস্থা করা।
কুড়িগ্রামের এই শীত যেন এক চমৎকার আবহ সৃষ্টি করেছে। প্রকৃতি, মানুষের জীবনযাত্রা, আর হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া শীতের অনুভূতি সব মিলিয়ে এ এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
Leave a Reply