আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
দ্য নিউইয়র্ক টাইমস
রবার্ট পিল ১৮২৯ সালে লন্ডনে মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রতিষ্ঠা করেন, যা বিশ্বের প্রথম আধুনিক পুলিশ বাহিনী হিসেবে বিবেচিত হয়। লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রতিষ্ঠার সময়, তিনি ৯টি মৌলিক নীতি প্রণয়ন করেছিলেন, যা এখনও বিশ্বব্যাপী পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রমের মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
এই নীতিগুলোর মাধ্যমে তিনি পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশ্য এবং তার জনগণের প্রতি দায়িত্বশীলতা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন।
যদিও কিছু গবেষক দাবি করেন যে, রবার্ট পিল নিজে এই নীতিগুলো প্রতিষ্ঠিত করেননি, বরং ১৮২৯ সালে লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগের প্রথম দুই কমিশনার, সার্জেন্ট মাইকেল ফার্নস এবং উইলিয়াম হেনরি পিট, এগুলো প্রস্তুত করেছিলেন। তবে, আজও এ নীতিগুলো বিশ্বের পুলিশের জন্য আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
পুলিশ কমিশনার উইলিয়াম জে. ব্র্যাটন তার ব্লগে এই ৯টি নীতি সম্পর্কে জানিয়েছেন।
“পুলিশের মূল উদ্দেশ্য হলো অপরাধ দমন না করে বরং অপরাধ ও বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ করা। যা সমাজের শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহায়ক।”
“পুলিশের কার্যক্রমের সফলতা জনগণের অনুমোদনের ওপর নির্ভরশীল। জনসাধারণের সমর্থন না পেলে পুলিশ কার্যকরভাবে তাদের কর্তব্য পালন করতে পারে না, তাই জনগণের বিশ্বাস ও সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
“পুলিশকে জনগণের সহায়তা পেতে হবে যাতে তারা আইন মেনে চলে, যা জনগণের সম্মান অর্জন ও বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। পুলিশকে জনগণের সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে হবে, যেন তারা স্বেচ্ছায় আইন মেনে চলে এবং সমাজে শৃঙ্খলা বজায় রাখে।”
“জনগণের সহায়তার পরিমাণ হ্রাস পায় যতই পুলিশকে শারীরিক শক্তি ব্যবহারের প্রয়োজন হয়। যত বেশি শারীরিক শক্তি ব্যবহৃত হয়, ততই জনগণের সহযোগিতা কমে আসে, তাই পুলিশের উচিত যথাসম্ভব শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যা সমাধান করা।”
“পুলিশকে কোনো প্রকার পক্ষপাতিত্ব বা অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে হবে এবং প্রতিটি নাগরিকের প্রতি সুবিচার নিশ্চিত করতে হবে।”
“পুলিশ শুধু আইন অনুসরণ বা শৃঙ্খলা পুনঃস্থাপন করতে শারীরিক শক্তি ব্যবহার করবে, যখন সঠিক পরামর্শ, উপদেশ বা সতর্কতা যথেষ্ট না হয়।”
“পুলিশকে সর্বদা জনগণের সাথে এমন সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে যাতে তারা প্রমাণ করতে পারে যে পুলিশ জনগণেরই অংশ, যারা জনগণের কল্যাণে সম্পূর্ণ সময় কাজ করার জন্য অর্থের বিনিময়ে দায়িত্ব পালন করে। পুলিশ ও জনগণের সম্পর্ক কখনও বিচ্ছিন্ন হওয়া উচিত নয়। পুলিশের সদস্যরা জনগণেরই অংশ হিসেবে তাদের কল্যাণে কাজ করেন।”
“পুলিশের সকল কার্যক্রম অবশ্যই তাদের নির্ধারিত কাজের প্রতি মনোযোগী হতে হবে এবং কখনোই বিচার বিভাগের ক্ষমতা গ্রহণের মতো মনে হওয়া উচিত নয়। পুলিশ কখনোই বিচারকের ভূমিকা পালন করতে পারে না; তাদের কাজ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা, বিচার করা নয়।”
“পুলিশের কার্যকারিতা পরীক্ষার মানদণ্ড হলো অপরাধ ও বিশৃঙ্খলার অভাব, না যে পুলিশের কোনো পদক্ষেপের দৃশ্যমান প্রমাণ। পুলিশের কাজ কেবল অপরাধীদের ধরার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং অপরাধের প্রকোপ কমানো এবং একটি নিরাপদ সমাজ গড়ে তোলা।”
Leave a Reply