1. editor1@kurigramsongbad.com : কুড়িগ্রাম সংবাদ :
  2. sifat@kurigramsongbad.com : sifat :
  3. siteaccess@pixelsuggest.com : কুড়িগ্রাম সংবাদ :
সাম্প্রতিক :
কুড়িগ্রাম-৪ আসনে জিয়া পরিবার থেকে নির্বাচনের দাবি যুবদল নেতা পলাশের রৌমারীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির লিফলেট বিতরণ রাজারহাটে জাতীয় বিজ্ঞান মেলার উদ্ধোধন ফুলবাড়ীর অপহৃত মেয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে উদ্ধার, গ্রেফতার- ২ কুড়িগ্রামে আ.লীগের দুই নেতা গ্রেফতার কোনো ধরনের শত্রুতা কারও পক্ষে ভালো নয়: বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের সেনাপ্রধান এইচএমপিভি ভাইরাস প্রতিরোধে বিমানবন্দর ও এয়ারলাইন্সগুলোকে নির্দেশনা ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়ার সময়ে রাজারহাটের একজন গ্রেফতার  ফুলবাড়ীতে অপহৃত মাদ্রাসা ছাত্রী ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে উদ্ধার কুড়িগ্রামে চর উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয় চাই নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত

ইমরানকে মুক্ত করার মিছিলে নেতৃত্ব দেন বুশরা বিবি; কিন্তু পরের ঘটনা রহস্যে মোড়ানো

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪
  • ২৬ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

বিবিসি 

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা  ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবির নেতৃত্বে রাজধানী ইসলামাবাদে এক বিশাল বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ইসলামাবাদে লকডাউন জারি করে সরকার। 

বুশরা তার রাজনৈতিক অভিষেকে এক শিপিং কনটেইনারের ওপর দাঁড়িয়ে হাজার হাজার পিটিআই সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমার ভাই ও সন্তানরা, তোমরা আমার সাথে দাঁড়াও।” তিনি আরও বলেন, “এটি শুধু আমার স্বামীর জন্য নয়, দেশের ভবিষ্যৎ এবং নেতার বিষয়েও।”

তবে বুধবার (২৮ নভেম্বর) সকালে বুশরা বিবি এবং তার সাথে থাকা হাজার হাজার বিক্ষোভকারী কোথায় গেলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ডি-চক যখন অন্ধকারে ঢেকে গিয়েছিল তখন “চূড়ান্ত মিছিল” এবং বুশরা বিবির কী হয়েছে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।

প্রত্যক্ষদর্শী জানান, হঠাৎ করে সব আলো নিভে যায় এবং ডি-চক [যেখানে তারা জড়ো হয়েছিল] পুরোপুরি অন্ধকারে তলিয়ে যায়।

কী ঘটেছিল সেদিন?

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিক্ষোভকারীরা কাঁদানে গ্যাস ও বন্ধ থাকা সড়কগুলো পার হয়ে শহরের কেন্দ্রস্থল ডি-চকে পৌঁছাতে সক্ষম হন। তাদের অনেকেই পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের সমর্থক ও কর্মী, যার নেতৃত্বে রয়েছেন ইমরান খান।

ইমরান খান এক বছর ধরে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তিনি কারাগার থেকে এই মিছিলে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছিলেন।

এই মিছিলের নেতৃত্ব দেন ইমরান খানের তৃতীয় স্ত্রী বুশরা বিবি। তিনি ২০১৮ সালে অপ্রত্যাশিতভাবে ইমরান খানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং এরপর গণমাধ্যম থেকে বেশ দূরে ছিলেন।

মিছিলটি ডি-চকে পৌঁছানোর পর বুশরা বলেন, “যতক্ষণ না খানকে আমাদের মাঝে পাচ্ছি, ততক্ষণ আমরা ফিরে যাব না।”

ডি-চকে প্রবেশ করছেন পিটিআই-এর আন্দোলনকারীরা। ছবি: নাদির গুরামানি

কর্মসূচিতে যুক্ত থাকা বিভিন্ন সূত্রের মতে, গন্তব্যস্থল হিসেবে ডি-চককে নির্ধারণ করা বুশরার নিজস্ব সিদ্ধান্ত ছিল। তার স্বামী ইমরান এক সময় সেখানে সফলভাবে একটি অবস্থান কর্মসূচি পরিচালনা করেছিলেন। এই সিদ্ধান্তটি অন্যান্য দলের নেতাদের বিরোধিতা এবং সরকারের পক্ষ থেকে অন্য কোনো জায়গায় সমাবেশ করার অনুরোধ সত্ত্বেও নেওয়া হয়।

বুশরা বিবির নেতৃত্বে আসা অনেকের জন্য অবাক করার মতো ঘটনা ছিল। সম্প্রতি জেল থেকে মুক্তি পাওয়া বুশরা বিবি সাধারণত গোপনীয়তা বজায় রাখেন এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকেন। তার শৈশব জীবন সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায় না।

তবে ইমরানের সাথে পরিচিত হওয়ার আগে তিনি ছিলেন সুফি ঐতিহ্যে দিক্ষিত একজন আধ্যাত্মিক নেতা, যিনি তার স্বল্প সংখ্যক অনুসারীদের ধর্মীয় পরামর্শ দিতেন। তার অনুসারীদের মধ্যে ইমরান খানও ছিলেন। প্রচলিত আছে, বুশরার মেধা এবং চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ইমরান খানকে মুগ্ধ করেছিল।

তবে প্রশ্ন উঠেছে, তিনি কি সত্যিই রাজনীতিতে পদক্ষেপ নিচ্ছিলেন? না কি এটি ছিল কারাগারে থাকা ইমরান খানের দলকে সচল রাখার একটি কৌশল?

সমালোচকদের মতে, এটি ছিল ইমরান খানের বারবার ঘোষণা করা উত্তরাধিকারী রাজনীতির বিরুদ্ধে অবস্থানের বিপরীত একটি পদক্ষেপ।

এরপরই পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ৯টায় (স্থানীয় সময়) পুলিশ নতুন করে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে শুরু করে। এক ঘণ্টার মধ্যে, কঠোর দমন-পীড়ন শুরু হয়ে যায়। বিক্ষোভের বিশৃঙ্খলার মধ্যেই বুশরা বিবি দৃশ্য থেকে সরে যান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু ভিডিও প্রকাশিত হয়। এসব ভিডিওতে তাকে গাড়ি বদলাতে দেখা যায় এবং ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে দেখা যায়। তবে এই ফুটেজের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

রাত ১ টা নাগাদ কর্তৃপক্ষ জানায়, সব বিক্ষোভকারী সরে গেছে।

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবি। ছবি: সংগৃহীত

প্রত্যক্ষদর্শীরা ঘটনার সময় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির বর্ণনা দেন, কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হচ্ছিল এবং পুলিশ বিক্ষোভকারীদের আটক করছিল।

আমিন খান নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “আমি এই মিছিলে যোগ দিয়েছিলাম এটা জেনেই, ‘হয় আমি ইমরান খানকে ফিরিয়ে আনব, অথবা আমাকে গুলি করা হবে।'”

কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা আরও জানিয়েছে, কিছু বিক্ষোভকারী আগ্নেয়াস্ত্র বহন করছিলেন।

তবে, বিবিসি হাসপাতালে রোগীদের গুলিবিদ্ধ হইয়ে চিকিৎসা নেওয়ার চিকিৎসার রেকর্ড পেয়েছে।

একজন ডাক্তার বিবিসিকে জানান, তিনি কখনো এক রাতে এতজন গুলিবিদ্ধ রোগীর সার্জারি করেননি।

“কিছু আহত ব্যক্তি এমন সংকটাপন্ন অবস্থায় এসেছিল যে, আমাদের অ্যানেসথেসিয়ার অপেক্ষা না করে তৎক্ষণাৎ সার্জারি শুরু করতে হয়েছিল,” তিনি বলেন।

সরকারি হিসেবে কোনো নিহতের সংখ্যা প্রকাশিত না হলেও, বিবিসি স্থানীয় হাসপাতালগুলো থেকে নিশ্চিত করেছে, অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন।

কোথায় গেলেন বুশরা বিবি?

পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাতে কমপক্ষে ৫০০ বিক্ষোভকারী আটক হয়েছে এবং তাদের পুলিশ স্টেশনে রাখা হয়েছে। পিটিআই দাবি করেছে, কিছু লোক নিখোঁজ রয়েছে। বিশেষভাবে একজন ব্যক্তিকে কয়েকদিন ধরে দেখা যাচ্ছে না এবং তিনি হলেন, বুশরা বিবি।

একজন পিটিআই সমর্থক বলেন, “তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।”

আরেকজন সমর্থক তার পক্ষ নিয়ে বলেন, “এটা তার দোষ নয়। দলের নেতারা তাকে চলে যেতে বাধ্য করেছিল।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আরও কঠোর মন্তব্য করেছেন।

ইসলামাবাদের বেশিরভাগ প্রধান সড়ক শিপিং কনটেইনার দিয়ে বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। ছবি: রয়টার্স

সাংবাদিক ও বিশ্লেষক মেহমাল সারফরাজ বলেন, “তার এই পদক্ষেপ তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু হওয়ার আগেই ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।”

তবে, প্রশ্ন উঠছে– এটা কি আসলে বুশরা বিবির নিজের ইচ্ছা ছিল?

ইমরান খান এর আগে তার স্ত্রীর রাজনীতি নিয়ে কোনো উচ্চাকাঙ্ক্ষা অস্বীকার করেছিলেন। তিনি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে বলেছেন, “তিনি শুধু আমার বার্তা পরিবেশন করেন।”

বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বিশ্লেষক ইমতিয়াজ গুল বুশরা বিবির অংশগ্রহণকে “অসাধারণ পরিস্থিতিতে একটি অসাধারণ পদক্ষেপ” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

গুল মনে করেন, শুধু “ইমরান খানের অনুপস্থিতিতে দলের ও কর্মীদের সক্রিয় রাখা” ছিল বুশরা বিবির উদ্দেশ্য।

অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে জানা যায়, অনেকেই বিভিন্ন আলাপ ছড়িয়ে বলেছেন, তিনি পর্দার আড়ালে থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন, রাজনৈতিক নিয়োগ নিয়ে স্বামীকে পরামর্শ দিচ্ছেন এবং তার শাসনামলে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্তে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

সকল বাধা অতিক্রম করে বুশরা বিবির নেতৃত্বে রাজধানী ইসলামাবাদে প্রবেশ করেন বিক্ষোভকারীরা। ছবি: ডন

এই মাসের শুরুতে যখন তিনি পিটিআই নেতাদের এক বৈঠক আয়োজন করে ইমরান খানের র‍্যালির আহ্বান সমর্থন করতে বলেন, তখন তার সরাসরি হস্তক্ষেপ দেখা যায়।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ তাকে “সুযোগসন্ধানী” বলে অভিযুক্ত করেছেন। খাজা দাবি করেছেন, তিনি (বুশরা) “রাজনৈতিক নেতা হিসেবে নিজের ভবিষ্যৎ দেখছেন।”

তবে লাহোর ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেসের সহযোগী অধ্যাপক আসমা ফায়েজ মনে করেন, পিটিআই নেতৃত্ব সম্ভবত বুশরা বিবিকে অবমূল্যায়ন করেছে।

তিনি এএফপিকে বলেন, “এটা ধারণা করা হয়েছিল, তিনি একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তি। তাই তাকে কোনো বিপদ হিসেবে দেখা হয়নি। তবে শেষ কয়েক দিনের ঘটনাগুলো বুশরা বিবির একটি ভিন্ন দিক দেখিয়েছে।”

তবে বিশ্লেষক এবং রাজনীতিবিদরা যা ভাবুন না কেন, অনেক পিটিআই সমর্থক এখনও তাকে ইমরান খানের সাথে তাদের সংযোগ হিসেবে দেখেন। এটা স্পষ্ট ছিল, দলের ভিত্তিকে চাঙ্গা করতে করতে তার উপস্থিতি যথেষ্ট ছিল।

ইসলামাবাদের বাসিন্দা আসিম আলী বলেন, “তিনি সেই ব্যক্তি, যিনি সত্যিই তাকে (ইমরান) মুক্ত করতে চান। আমি তার ওপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস রাখি।”

 

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো খবর
Kurigram Songbad © 2024. All Rights Reserved.
Built with care by Pixel Suggest
error: Content is protected !!