ধর্ম ডেস্ক:
হজের সামর্থ্য না থাকলেও অনেকের ওমরা করার সামর্থ্য থাকে। তাদের জন্য জীবনে একবার ওমরা করা সুন্নতে মোয়াক্কাদা। সুন্নতে মোয়াক্কাদা আদায় না করলে গুনাহগার হতে হবে।
ওমরার বিধান পুরুষ ও মহিলা সবার জন্য প্রযোজ্য। ওমরা সম্পর্কে কোরআনে কারিমে রয়েছে, ‘নিশ্চয় সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনাবলির একটি; তাই যারা হজ করবে বা ওমরা করবে, তারা এ দুটি প্রদক্ষিণ (সাঈ) করবে।’ (সুরা বাকারা: ১৫৮)
জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, নবী কারিম (স.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘ওমরা কি ওয়াজিব?’ তিনি বলেছেন, ‘না, ওমরা করা তোমার জন্য উত্তম।’ (সুনানে দারাকুতনি: ২৭২৪)
হজের মতো ওমরার জন্যও সুস্থ, শারীরিকভাবে সক্ষম এবং প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পাশাপাশি আর্থিক সামর্থ্যও থাকতে হবে। আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান হওয়ার মর্ম হলো- সফরের সময়ে নিজের, পরিবারের ও অধীন ব্যক্তিদের সব ধরনের খরচ নিশ্চিত করার পর ওমরা পালনের মতো অর্থ জমা থাকা।
হজ যেমন জীবনে একবার আদায় করা ফরজ, তেমনি ওমরাও জীবনে অন্তত একবার আদায় করা সুন্নত। সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য একাধিক ওমরা করতে অসুবিধা নেই।
ওমরার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। শুধু জিলহজ মাসের ৯-১৩ তারিখ পর্যন্ত পাঁচ দিন ওমরা করা মাকরুহ। এছাড়া বছরের যেকোনো সময়ে ওমরা করার অবকাশ আছে।
অবশ্য রমজান মাসে ওমরা করা ফজিলতের দিক দিয়ে সর্বোত্তম। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, রমজানে একটি ওমরা করা আমার সাথে একটি হজ করার সমতুল্য। (সহিহ বুখারি: ১৮৬৩)
ওমরা পালনের অসংখ্য ফজিলতের কথা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এক হাদিসে নবী কারিম (স.) ইরশাদ করেন, ‘এক ওমরার পর আরেক ওমরা, উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহের কাফফারা। আর জান্নাতই হজে মাবরুরের একমাত্র প্রতিদান।’ (সহিহ মুসলিম: ১৩৪৯)
জাবির (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন- ‘হজ ও ওমরাকারীগণ আল্লাহর প্রতিনিধি দল। তারা দোয়া করলে তাদের দোয়া কবুল করা হয় এবং তারা কিছু চাইলে তাদেরকে তা দেওয়া হয়।’ (মুসনাদে বাজজার: ১১৫৩; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ৫২৮৮; তবারানি: ১৭২১)
অন্য বর্ণনায় রয়েছে, হজ ও ওমরাকারীগণ যখন দোয়া করে, তাদের দোয়া কবুল করা হয়। তারা যখন কারো জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে তাদেরকে ক্ষমা করা হয়। (ইবনে মাজাহ: ২৮৯২; নাসায়ি: ৫/১১৩)
রাসুলুল্লাহ (স.) আরও ইরশাদ করেন, তোমরা ধারাবাহিক হজ ও ওমরা আদায় করতে থাকো। এ দুটি আমল দারিদ্র্য ও গুনাহ বিদূরিত করে দেয়। যেমন—ভাটার আগুনে লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা-জং দূরীভূত হয়ে থাকে। (তিরমিজি: ৮১০)
Leave a Reply