ধর্ম ডেস্ক:
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা তাঁর সাহায্য লাভের উপায় জানিয়ে ইরশাদ করেছেন, ‘সালাত ও সবরের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।’ (সুরা বাকারা: ১৫৩)
এখানে মহান আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার দুটি মাধ্যম উল্লেখ করা হয়েছে। একটি সবর ও অপরটি সালাত তথা নামাজ।
সবরের সুফল সম্পর্কে আমরা অনেকে জানি। আল্লাহ তাআলা এক আয়াতে বলেছেন, ‘আমি তোমাদেরকে কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা অবশ্যই পরীক্ষা করব। আর তুমি শুভ সংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের। (সুরা বাকারা: ১৫৫) অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয় ধৈর্যশীলদের অপরিমিত পুরস্কার দেওয়া হবে।’ (সুরা জুমার: ১০)
আল্লাহ তাআলার কাছে সাহায্য চাওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো নামাজ। এটি একদিকে মুমিনের সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। অন্যদিকে এর প্রভাবে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকাও সহজ হয়। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও মন্দাচার থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)
আবার নামাজের ভেতরে আল্লাহর কালাম থেকে অনেক দোয়া ও সাহায্য প্রার্থনার আয়াত পাঠ করা হয়। যেমন- সুরা ফাতেহায় তেলাওয়াত করা হয়- ‘আমরা কেবল আপনারই ইবাদত করি এবং আপনার কাছেই সাহায্য চাই।’ এই আয়াতেই রয়েছে মানুষের দ্বীন ও দুনিয়ার সকল প্রয়োজন পূরণের প্রার্থনা। আবার নামাজের বিভিন্ন দোয়া-তাসবিহতেও রয়েছে দুনিয়া-আখেরাতে কল্যাণ লাভের নানা আবেদন।
খালেস দিলে দোয়া করলে এমনিতেই আল্লাহ তাআলা কবুল করেন। কিন্তু নামাজে যখন দোয়া করা হয়, তখন আল্লাহ কাছে থেকেই সাড়া দেন। হাদিস শরিফে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘বান্দা আল্লাহর অধিক নিকটবর্তী হয়, যখন সেজদারত থাকে। অতএব তোমরা তখন অধিক দোয়া করতে থাকো।’ (মুসলিম: ৪৮২)
রাসুলুল্লাহ (স.) সেজদায় গিয়ে বলতেন- اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِي كُلَّهُ دِقَّهُ وَجِلَّهُ وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ وَعَلاَنِيَتَهُ وَسِرَّهُ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মাগ ফিরলী জামবী কুল্লাহু দিক্কাহু ওয়াজিল্লাহু ওয়া আওয়ালাহু ওয়া আ-খিরাহু ওয়া আলা-নিয়াতাহু ওয়া সিররাহু।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমার সকল প্রকার গুনাহ ক্ষমা করে দিন। কম এবং বেশি, প্রথম এবং শেষ, প্রকাশ্য এবং গোপনীয়।’ (সহিহ মুসলিম: ৪৮৩)
এভাবে নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা হয়। তাছাড়া নামাজি বান্দাদের আল্লাহ তাআলা বিভিন্নভাবে সাহায্য করেন। শুধু ফজরের নামাজ জামাতে পড়লেই সারাদিন সে ব্যক্তি মহান আল্লাহর নিরাপত্তা লাভ করেন। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করল সে মহান আল্লাহর রক্ষণাবেক্ষণের অন্তর্ভুক্ত হলো…।’ (মুসলিম: ১৩৭৯)
আল্লাহ তাআলা আমাদের ধৈর্য্য ও সালাতের মাধ্যমে তাঁর সাহায্য প্রার্থনার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Leave a Reply